× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ঋণ পরিশোধে শর্ত দিয়ে আবার ছাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ জুন ২০২২, ১৬:১৬ পিএম । আপডেটঃ ২২ জুন ২০২২, ১৬:১৬ পিএম

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বন্যার কারণে ঋণ পরিশোধে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবার ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এবার ঢালাও সুবিধা না দিয়ে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে। বেশি ছাড় পেয়েছেন বন্যাদুর্গত এলাকার ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বুধবার রাতে এ–সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে পাঠানো হয়েছে।

নির্দেশনা অনুযায়ী, এবার যেসব ঋণ গত ১ এপ্রিল নিয়মিত ছিল, শুধু সেসব ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে জুন, সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর প্রান্তিকে বড় ঋণের বিপরীতে যে পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করার কথা, যথাক্রমে তার ৫০, ৬০ ও ৭৫ শতাংশ পরিশোধ করলে ঋণগুলো আর খেলাপি হবে না।

আর কৃষি ও সিএমএসএমই ঋণে যে পরিমাণ পরিশোধ করার কথা তার ২৫, ৩০ ও ৪০ শতাংশ পরিশোধ করে খেলাপিমুক্ত থাকা যাবে। বন্যাকবলিত জেলায় কৃষি ঋণ পরিশোধে এর চেয়ে বেশি ছাড় দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বিশেষ সুবিধার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলা হয়েছে, করোনার দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব, পুনরায় সংক্রমণ বৃদ্ধি, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সৃষ্ট বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং যুদ্ধাবস্থার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম ও পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। এতে ঋণগ্রহীতারা কিস্তির সম্পূর্ণ অংশ পরিশোধে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এ রকম প্রেক্ষাপটে চলমান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা বজায় রাখা এবং বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের গতিধারা স্বাভাবিক রাখতে ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, জাতীয় শিল্পনীতির সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘বৃহৎ শিল্প’ প্রতিষ্ঠানের যেসব মেয়াদি ঋণ গত ১ এপ্রিল অশ্রেণিকৃত রয়েছে, তার বিপরীতে জুন প্রান্তিকে প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ৫০ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ৬০ শতাংশ এবং ডিসেম্বর প্রান্তিকে ৭৫ শতাংশ পরিশোধ করলে আর বিরূপ মানে শ্রেণিকরণ করা যাবে না। সিএমএসএমই ও কৃষি খাতের যে সব মেয়াদি ঋণ ১ এপ্রিল অশ্রেণিকৃত রয়েছে তার বিপরীতে জুন প্রান্তিকে প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ২৫ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ৩০ শতাংশ এবং ডিসেম্বরে ৪০ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। প্রতি প্রান্তিকের শেষ দিনের মধ্যে এ হারে অর্থ জমা দিতে হবে। গত ১ এপ্রিল অশ্রেণিকৃত তলবি প্রকৃতির ঋণ জুন থেকে ডিসেম্বর সময়ে তিনটি সমান কিস্তিতে পরিশোধ করলে আর খেলাপি হবে না।

বন্যাকবলিত জেলা সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, শেরপুর, জামালপুর, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক চিহ্নিত বন্যাকবলিত জেলায় কৃষিঋণের ক্ষেত্রে এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধ না করলেও খেলাপি করা যাবে না।

এসব এলাকার সিএমএসএমই খাতের যেসব মেয়াদি ঋণ ১ এপ্রিল অশ্রেণিকৃত আছে, তার বিপরীতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রদেয় কিস্তির ২৫ শতাংশ পরিশোধ করলেও খেলাপি করা যাবে না। আর সিএমএসএমই খাতের যেসব চলমান ঋণের মেয়াদ ইতিমধ্যে অতিবাহিত হয়েছে ও প্রচলিত নীতিমালার আওতায় নবায়ন করা হয়নি এবং ১ এপ্রিল অশ্রেণিকৃত অবস্থায় রয়েছে, তার সীমাতিরিক্ত অংশ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করার শর্তে নবায়ন করতে হবে। এ ঋণের বাকি অংশ বিদ্যমান মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী এক বছরের মধ্যে কিস্তিতে আদায় করা যাবে। এ নির্দেশনা মোতাবেক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে যথানিয়মে শ্রেণীকরণের আওতাভুক্ত হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, এ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সুবিধা পাওয়া ঋণে এপ্রিল থেকে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধে কোনো দণ্ড সুদ বা অতিরিক্ত ফি আরোপ করা যাবে না। আর ২০১৯ সালে ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ১০ বছরের জন্য পুনঃ তফসিল করা ঋণও এ সার্কুলারের আওতায় সুবিধা নিতে পারবে। তবে এ প্রজ্ঞাপনের আওতায় সুবিধা পাওয়া ঋণে আরোপিত সুদ আয় খাতে স্থানান্তর এবং প্রভিশন সংরক্ষণ বিষয়ে পরে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর ২০২০ সালে প্রায় দুই বছরের জন্য গণসুবিধা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ওই সময়ে কেউ কোনো টাকা পরিশোধ না করলেও খেলাপি হয়নি।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ঋণ পরিশোধ না করেও খেলাপিমুক্ত থাকার দাবি জানিয়ে আসছে। তবে ব্যাংকগুলো বরাবরই ঢালাও সুবিধা না দেওয়ার পক্ষে। তারা বলছে, ঢালাও সুবিধা দিলে ভালো গ্রাহকেরাও ঋণ পরিশোধ করতে ভুলে যায়।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোনো ছাড় ছিল না। এতে গত জানুয়ারি-মার্চ সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.