দুই শিশু মেয়েকে নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ছিলেন আরিফা আক্তার নামে এক মা। এই ঘটনার তিনদিন পর নরসিংদীর পলাশ উপজেলার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে এক মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে নৌ-পুলিশ।
বুধবার রাতে উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার নিজাম উদ্দিন ঘাট থেকে মুর্শিদা আক্তার (৭) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে মাধবদীর বঙ্গারচর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। তবে এখনো মা আরিফা আক্তারের লাশের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
তথ্যটি নিশ্চিত করেন বঙ্গারচর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘোড়াশাল পৌর এলাকার নিজাম উদ্দিন ঘাটে একটি লাশ ভেসে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে নৌ-পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এসময় লাশটির পরিচয় শনাক্ত করতে গিয়ে জানা যায়,গত রোববার দুপুরে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়ন এলাকায় দুই মেয়েকে নিয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ছিলেন আরিফা আক্তার নামে ওই মা। পরে স্থানীয়রা তাহমিদা আক্তার (৯) নামে এক শিশুকে জীবিত উদ্ধার করতে পারলেও নিখোঁজ ছিলেন মা আরিফা আক্তার ও ছোট মেয়ে মুর্শিদা আক্তার। সে সময় কাপাসিয়া উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দুই দিনব্যাপী উদ্ধার কাজ চালিয়েও তাদের কোনো সন্ধান পায় নি।
ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল যাওয়ার আগেই স্থানীয়রা তাহমিদা আক্তার (৯) নামে ওই শিশুটিকে নদী থেকে জীবিত উদ্ধার করেছিল। সে-ই জানিয়েছিল নদীতে মায়ের ঝাঁপ দেয়ার কথা। উদ্ধার তাহমিদা আক্তার মামা হেদায়েত উল্লাহ জানান, আমার বোন আরিফা আক্তারের বিয়ে হয়েছিল নারায়ণগঞ্জে। সেখানে দুই মেয়ে হওয়ার কয়েক বছর পর তার স্বামী মারা যায়। এরপর থেকেই সে আমাদের কাপাসিয়ায় বাপের বাড়ি চলে আসে। কিন্তু ধীরে ধীরে সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে যায়। অনেক সময় তাকে শিকলবন্দি করেও রাখতে হতো। তিনি আরও বলেন, উদ্ধার আমার ভাগনির কাছ থেকে শুনেছি,সকালে তাদের মা জুতা ও জামা-কাপড় কিনে দেয়ার কথা বলে তাকে ও ছোট বোনকে নিয়ে বাজারের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে পৌঁছে তাদের নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। তবে মায়ের হাত ফসকে গেলে তাহমিদা নদীতে থাকা একটি বাঁশের মাচা ধরে ভেসে থাকে। পরে স্থানীয় জেলেরা তাকে উদ্ধার করে। এ বিষয়ে বঙ্গারচর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) তরিকুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার শিশু মুর্শিদা আক্তারের লাশটি তার মামা হেদায়েত উল্লাহর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।