× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

পিরোজপুরে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে এসি ডিস-এন্টেনা

পিরোজপুর প্রতিনিধি

২৪ জুন ২০২২, ০৫:১৮ এএম

আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও হতদরিদ্র গৃহহীন পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাই করে দিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে সরকার। পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে এরইমধ্যে এ প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু সেখানকার একটি ঘরের চিত্র দেখে সেটি আসলেই আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতাধীন ঘর কি-না, তা নিয়ে সন্দেহ জেগেছে।

জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের বালিপাড়া গ্রামের একটি ঘরে দেখা যায়, সেখানে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) ঝুলছে। শুধু তাই না, স্যাটেলাইট চ্যানেল দেখার জন্য ওই ঘরের টিনের চালে আকাশ ডিটিএইচের অ্যান্টেনা ঝুলতেও দেখা গেছে। হতদরিদ্র গৃহহীন হিসেবে পাওয়া একটি ঘরে কিভাবে এসব এলো, তা নিয়ে এলাকাবাসীদের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
ওই ঘরের মালিক মো. ইকবাল সেপাই। তার বাবা আলমগীর সেপাই ইন্দুরকানী থানা যুবলীগের সদস্য। ইকবাল জাতীয় পার্টির (জেপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজের পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার ৩ নম্বর বালিপাড়া ইউনিয়ন শাখার আহ্বায়ক।
২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনাভাইরাস মহামারি চলাকালে টি-আর কাবিখা প্রকল্পের আওতায় গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে ঘর পায় ইকবাল। ইকবাল তখন পেশায় দিনমজুর থাকলেও বর্তমানে সে একজন সফল বালু ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তার মাসিক আয় ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। প্রায় দুই লাখ টাকা মূল্যের মোটরসাইকেলে চলাফেরা করা ইকবালের বেশভূষা দেখে বোঝার উপায়ই নেই তিনি দরিদ্র ও গৃহহীন।
ইকবালের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি ২০১৩ সালে উপজেলার চন্ডিপুর কে সি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৪ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। তার বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। বাবার কাজে সহযোগী হিসেবে কাজ করে যে টাকা পেতেন তা দিয়ে ইকবাল নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাতেন। পরবর্তীতে কলেজে ভর্তি হলেও তার পড়াশোনা বেশি দূর এগোয়নি।
২০১৭ সালে ইকবাল বিয়ে করেন। বিয়ের পর বেকার ইকবাল তার স্ত্রীকে নিয়ে এলাকার বাসিন্দা প্রফেসর হারুনর অর রশিদের বাসায় মাসিক ৬০০ টাকায় ভাড়া থাকতেন। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি আর তার স্ত্রী সেখানেই ছিলেন। রাজমিস্ত্রি বাবার সহযোগী হিসেবে কাজ করে যে বেতন পেতেন, তা দিয়েই ঘর ভাড়া আর দুজনার ভরণপোষণের খরচ চালাতেন ইকবাল। ইসরাত জাহান নামে তাদের এক বছর বয়সী একটি মেয়েও রয়েছে।
 এ বিষয়ে ইকবাল সেপাই বলেন,  আমাকে সাংবাদিকসহ অনেকে ফোন করছে। আমার টাকায় এসি লাগিয়েছি। এতে দোষের কী আছে।আমার মেয়ে গরম সয্য করতে পারে না বলে আমি কিস্তিতে একটি এসি কিনে ঘড়ে লাগিয়েছি।
জানা যায়, ইন্দুরকানী উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৫৪৪টি ঘরের কাজ শেষ হয়েছে। এসব ঘরে বাসিন্দারা বসবাস করছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক বিবেচনায় অনেক স্বচ্ছলকে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে অনেক অসহায় পরিবারই এখনো জড়াজীর্ণ ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছে।এছাড়া ঘড় নির্মান ও ভুমিহীনদের জমি ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম করছে সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলার ৩ নম্বর বালিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কবির হোসেন বয়াতি জানান, মহাজোটের শরীক জাতীয় পার্টির (জেপি) স্থানীয় সংসদ সদস্যের কোটায় অনেক স্বচ্ছল ব্যক্তি রাজনৈতিকভাবে আশ্রয়ণের ঘর পেয়েছে। সেখানে এসি লাগিয়েছি কিনা জানিনা।
আশ্রয়ণের প্রকল্পে ঘর নির্মাণের দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গৃহহীনের তালিকায় ইকবাল সেপাই আশ্রয়ণের ঘর পেয়েছে। ওই ঘরে সে পুরাতন একটি এসি লাগিয়েছে বলে লোকমুখে শুনেছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা খানম জানান, ঘর যখন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তখন আমি ছিলাম না। ইকবাল নামে এক ব্যক্তি তার আশ্রয়ণের ঘরে এসি লাগিয়েছে বলে শুনেছি। ঘর বরাদ্দে কোনো অসংগতি আছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.