নেত্রকোনার উব্ধাখালি ও কংশ নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনো বিপৎসীমার নীচে নামেনি। এদিকে পানিতে তলিয়ে থাকা নেত্রকোনা-মদন মুল সড়কের কয়েক কিলোমিটার এখনো পানির নীচে। পানিতে তলিয়ে রয়েছে অন্যান্য উপজেলারও বেশ কিছু সড়ক। যে কারণে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে মানুষ। গ্রামীণ সড়কগুলোর আরও করুণ পরিনিতি। পানিবন্দী হয়ে থাকা মানুষ গুলোর দুর্ভোগ যেনো কমছেই না।
শুক্রবার জেলার মদন সড়কে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নেত্রকোনা মদন সড়কে চারটি এলাকার কয়েক কিলোমিটার অংশ পানিতে তলিয়ে রয়েছে। সড়কের প্রথম ১৬ কিলোমিটার অংশে প্রায় ২শ মিটার, ২২তম অংশে প্রায় দেড়শ’ শ মিটার, ২৬তম অংশে প্রায় ২শ মিটার এবং ৩০তম অংশে প্রায় ৩শ মিটারের মতো পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এর মধ্যে আছে খানা খন্দ। সব মিলিয়ে মানুষ বাসে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী রাজীব কুমার দাস বলেন, আমাদের নেত্রকোনা মদন সড়কের চারটি অংশে ৫ থেকে ৬শ মিটার তলিয়ে গেছে। আমরা পানি সরলেই দ্রুত মেরামতের ব্যাবস্থা নেবো। এদিকে জেলার কলমাকান্দা উপেজলার একটি মাত্র নেত্রকোনাঠাকুরোকোনা কলমাকান্দা সড়ক। যেটি গত ১৭ জুন থেকে ঢলের পানিতে অর্ধেক সড়ক ডুবে এবং ভাঙ্গা থাকায় পুরো উপজেলা বিচ্ছিন্ন ছিলো। এটির বিভিন্ন অংশের ডুবে থাকা এলাকা থেকে পানি সরলেও আগে থেকে ভেঙ্গে থাকা সড়কগুলো আরও খারাপ অবস্থায় পড়েছে। ফলে বুধবার রাত থেকে হীরাকান্দা নামক স্থানে ধান বোঝাই দুটি ট্রাক আটকে যায়। এটিতে ১৮০ বস্তা ও আরেকটিতে ২২০ বস্তা ছিলো। পরে স্থানীয়রা বস্তা নামিয়ে সকাল পর্যন্ত কাজ করে ট্রাক দুটোকে উদ্ধার করে।
এদিকে রাত থেকেই অন্যান্য শত শত যান আটকা পড়তে থাকে। বানভাসিদের জন্য রক্তদানে নেত্রকোনা স্বেচ্ছাসেবকরাও ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার পথে রাত থেকেই সড়কে আটকে যায়।
রক্তদানের মীর্জা হৃদয় সাগর জানান, গোতুরা বাজার থেকে কামাল নামের এক ব্যাবসায়ী ধানগুলো দুটো ট্রাকে করে ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা এই সড়ক বন্ধের কারনে রাতভর আটকে ছিলাম। মানুষকে খাবার পৌঁছে দিতে গিয়ে খাবারগুলো নিয়ে পথেই বসে থাকতে হলো। এই সড়কে প্রশাসন বা কোন জনপ্রতিনিধির নজর ছিলো না। এই মুহুর্তে সড়কের নিরাপত্তাটা বিশেষ জরুরি বলেও তিনি জানান। এদিকে জেলার ১০ উপজেলার ৫ লক্ষাধিক পানিবন্দী মানুষের জন্য সরকারী বেসরকারী বিভিন্ন ত্রাণ সহয়তা থাকলেও তা অপ্রতুল।