× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

জলবায়ু পরিবর্তন : উৎপাদন খরচ না ওঠায় চরম সংকটে দেশের চা শিল্প

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

০১ জুলাই ২০২২, ০৭:৪৭ এএম । আপডেটঃ ০১ জুলাই ২০২২, ০৯:২৯ এএম

বিশ্বের মধ্যে উৎপাদনে ১০ম আর দেশের দ্বিতীয় রপ্তানিপন্য চা শিল্প এখন এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে। প্রতিবছর চায়ের  উৎপাদন বাড়লেও বাড়ছে না চাষাবাদ।

চা-বাগান সংশ্লিষ্টরা এজন্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অতিরিক্ত খরতাপ  অনাবৃষ্টি, উত্তরাঞ্চলে  অপরিকল্পিত চায়ের চাষাবাদ  এবং উৎপাদিত চায়ের প্রকৃত মুল্য না পাওয়াকে দায়ী করছেন। 
এমন এক সময় ছিলো ইস্পাহানি লিমিটেড,ইসলাম গ্রুপ,ট্রান্সকম,হা-মীমসহ দেশের শীর্ষ বানিজ্যি গ্রুপের মালিকেরা সিলেটে এসে চায়ের বাগান করতেন। এখনো তাদের মালিকাধীন অনেক চা বাগান রয়েছে। কিন্তু এখন আর নতুন চা-বাগান করতে চান না তারা।
পরিস্থিতি উত্তরণে চায়ের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি  বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে চা শিল্প কে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার দাবি তাদের। চায়ের চাষ সম্প্রসারণে সার কীটনাশকের ভর্তুকিও  বাড়ানো প্রয়োজন  বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়,বৃটিশ ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির সময় ১৮৩৪ সালের দিকে দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সিলেট জেলায় চায়ের চাষাবাধ শুরু হয়। পরে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় তা সম্প্রসারিত হয়।বর্তমানে  দেশে বানিজ্যিক চা বাগানের সংখ্যা ১৬৭ টি। আর সিলেট অঞ্চলে চা বাগানের সংখ্যা ১৩৭ টি। এমনকি।চায়ের রাজধানী শুধু মৌলভীবাজার জেলায় আছে ৬৮ টি চা বাগান। এর বাইরে ব্রাহ্মণ্বাড়িয়া জেলায় বানিজ্যিক এবং  উত্তরাঞ্চলে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলায় ব্যক্তি পর্যায়ে চায়ের চাষবাদ  জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ টি রিচার্চ ইন্সটিটিউট (বিটিআরআই) সুত্রে জানা যায়,  ২০২০-২১ চা মৌসুমে  দেশে ৯৫ দশমিক ৬০ মিলিয়ন কেজি এবং ২০২১-২২ মৌসুমে ৯৬ দশমিক ৭০ মিলিয়ন কে জি চা উৎপাদিত হয়। যাহা এ পর্যন্ত দেশে চায়ের সর্বোচ্চো উৎপাদন রেকর্ড।

ফিনলে টি কোম্পানির ভাড়াউড়া চা বাগানের জেলারেল ম্যানেজার (জিএম) গোলাম মোহাম্মদ শিবলী 'সংবাদ সারাবেলা 'কে জানান, দেশে বর্তমানে চা চাষ সম্প্রসারণে বড় বাধা প্রয়োজনীয় টিলা তথা বনভূমির অভাব। পাশাপাশি চায়ের বাজার মূল্য এখন  অনেক কম।
তিনি মনে করেন, উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড় জেলায় চায়ের চাষ হয় ধানের মতো ব্যক্তিপর্যায়ে।সেখানের চাষীরা ধান হয় না এমন কৃষি জমিতে চা লাগিয়ে কাচি( কাস্তে) দিয়ে তা কাটে। এতে তাদের  উৎপাদন খরচ কম হয়। এসব চায়ের গুনগত মান নিম্নপর্যায়ের হওয়ায় ১৫০-৬০ টাকা কেজি দরে তা  বিক্রি করে দেয়। যেকারণে আমরা চায়ের  প্রকৃত মুল্য পাই না।
বাংলাদেশ  টি এসোসিয়েশন নর্থ সিলেট ভ্যালির চেয়ারম্যান এবং খাদিম টি কোম্পানির জেলারেল ম্যানেজার (জিএম) নোমান হায়দার চৌধুরী 'সংবাদ সারাবেলা 'কে জানান, দেশে এখন  ভারতীয় চায়ের বাজার সম্প্রসারিত হওয়ায় চায়ের প্রকৃত মূল্য মিলে না। ফলে মালিকপক্ষ এখন আর চা চাষে আগ্রহী হয়না।
তিনি আরও জানান,চা চাষে প্রচুর ইউরিয়া, ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএস পি)  এবং মিউরেট অব পটাস ( এমওপি) সারের প্রয়োজন হয়। এছাড়া আছে কিটনাশকের প্রয়োজনীয় তা। বাজারে এসব সারের প্রচুর দাম। তাই চা চাষকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিলে ভর্তুকির পরিমান  বাড়বে।  তখন মালিকপক্ষ চা চাষে আগ্রহী হবে।

বাংলাদেশ টি রিচার্স ইন্সটিটিউট (বিটিআরআই) শ্রীমঙ্গলের পরিচালক মি. মোহাম্মদ আলী 'সংবাদ সারাবেলা'কে বলেন,   দেশে চায়ের চাষ সম্প্রসারণে বড় বাধা জমি। চায়ের জন্য প্রয়োজন টিলা রকমের জমি যেখানে থাকবে প্রখর রৌদ্র আর অতি বৃষ্টি। পাশাপাশি কম টেম্পারেচার এবং বাতাসের আদ্রতা।
কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন রোধ বৃষ্টির কোনো হিসেব নেই।
উত্তরাঞ্চলের অপরিকল্পিত চায়ের চাষ বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে চা চাষ একধরনের কৃষি উৎপাদনের মতো। সেখানের কৃষকেরা নিজেদের পরিত্যক্ত জমিতে চায়ের চাষ করে।দুটি পাতা একটি কুড়ি মানে মানসম্পন্ন চা।এ বিষয়ে তাদের অনেক প্রশিক্ষণ দিচ্ছি কিন্তু তা না মেনে তারা ধানের মতন ক্যাচি দিয়ে চা গাছের আগা কেটে বিভিন্ন  মিলে বিক্রি করছে। ফলে চায়ের গুনগত  মান বজায় থাকছে না। পাশাপাশি বাজারে চায়ের  দর পড়ে যাচ্ছে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.