× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সিলেটে রানওয়ে তলিয়ে বিমান বন্ধ, প্রবাসী যাত্রী ও পর্যটকদের বিকল্প ব্যবস্থা হতে পারে শমসেরনগর বিমান ঘাটি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

০২ জুলাই ২০২২, ০৯:৪২ এএম

মৌলভীবাজার  বন্যার পানিতে ওসমানী বিমান বন্দরের  রানওয়ে তলিয়ে ৫ দিন আকাশ পথে যোগাযোগ বন্ধ থাকার পর মৌলভীবাজারের শমসেরনগর বিমান বন্দর চালুর প্রয়োজনীয়তা অনেক বেড়ে গেছে। বিমান বন্দরটি চালু হলে আপদকালীন ব্যবস্থাসহ সিলেট বিভাগে পর্যটকদের সুবিধা দিতে পারবে প্রাইভেট এয়ার লাইন্সগুলো ।পাশাপাশি মৌলভীবাজার জেলা পর্যটন ও প্রবাসী অধ্যুষিত হওয়ায় রুটটি খুবই সম্ভাবনাময়।  বিমানবন্দরটি চালু করলে সরকারের রাজস্ব আয় কয়েকগুণ বেড়ে এমন মত বিশিষ্ট জনের।বিমানবন্দরটি চালু করতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এখানের প্রবাসীরা।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী শমসেরনগর সুজা মেমোরিয়াল কলেজের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক আশফাকুর রহমান তোফায়েল 'সংবাদ সারাবেলা'কে বলেন, শমসেরনগর বিমান ঘাটিতে রয়েছে বিশাল রানওয়ে। এটি চালু হলে আমরা দেশে ফেরার পথে এটি ব্যবহার করে সহজে বাড়িতে যেতে পারি। এতে সরকারের আয়ও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
নয়াবাজার কে সি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক জাকারিয়া আহমেদ শমসেরনগর বিমান বন্দর চালুর যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে  'সংবাদ সারাবেলা'কে বলেন, এখনকার  মানুষ ব্যস্ত সময় কাটান। মৌলভীবাজার জেলার ব্যবসা-বানিজ্যখাতে জড়িত ব্যক্তি এবং আগত পর্যটকেরা বেসরকারি বিমান ব্যবহার করে সহজে যাতায়াত করতে পারবে। এতে তাদের অনেক সময় বেচে যাবে। সকালে ঢাকায় গিয়ে বিকেলে ফেরা সম্ভব হবে।
অধিক প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলার প্রবাসীরাও  সহজে প্রবাসে যাওয়া আসা করতে পারবে এমনটি মনে করেন এখানের  বিশিষ্ট জনেরা।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে,
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরেনগরে ওই বিমান ঘাটি বিশাল পরিসরের।এখানের  প্রশস্ত রানওয়ে, উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থা ও অবকাঠামোর সুবিধা বিদ্যমান। শমসেরনগর বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬ হাজার ফুট ও প্রস্থ ৭৫ ফুট। এ রানওয়ে দিয়ে বড় প্লেনগুলোও অবতরণ করতে পারে।
তথ্য মতে, ১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ও দেশের বৃহত্তম এ বিমানবন্দরটি সামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য নির্মাণ করা হয়। কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর চা বাগানের ৬শ' ২২ একর জমি অধিগ্রহণ করে এটি নির্মাণ করা হয়।
কমলগঞ্জ উপজেলার সংবাদকর্মী জয়নাল আবেদীন 'সংবাদ সারাবেলা' কে জানান,  বিএনপি সরকারে থাকাবস্থায়  ১৯৯৫ সালে প্রাক্তন অর্থ মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের প্রচেষ্টায় ততকালীন  বেসামরিক বিমান চলাচল ও  পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মেজর (অবঃ) এম এ মান্নান বেসরকারিভাবে অ্যারোবেঙ্গল এয়ার সার্ভিসের ফ্লাইট চালু করেন। কিন্তুপ্রয়োজনীয়  সুযোগ-সুবিধার অভাবে এই এয়ার লাইন্স যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে পারেনি।
পরবর্তীতে ২০০৯ সালে বর্তমান আওয়ামী লীগের  সরকার ক্ষমতায় আসার পর বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক দুই মন্ত্রী জিএম কাদের ও রাশেদ খান মেনন বিমানবন্দরটি চালুর ঘোষণা দিলেও সেটি কাগজে কলমেই রয়ে গেছে। বর্তমানে বিমানবন্দরের অবহেলিত ও পতিতভূমি ব্যবহার করে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল কৃষি খামার। এখানে বিমানবাহিনীর রিক্রুটমেন্ট অফিসও খোলা হয়েছে। সংস্কার করা হয়েছে রানওয়ের অল্প কিছু অংশ।বিমানবন্দরটিতে প্রতিবছর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জাতীয় ক্যাডেট কোর বিমান শাখার সদস্যদের অগ্নিনির্বাপন, প্রাথমিক চিকিৎসা, রাডার নিরাপত্তা, ফায়ারিংসহ অন্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিজেদের ব্যবসায়িক প্রসারতা বাড়াতে  শমসেরনগর বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালু করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে দেশের  বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো।শমসেরনগর বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালু হলে লাউয়াছড়া মাধবকুণ্ড সহ মৌলভীবাজার জেলার  পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রবাসী অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাসিন্দা ইউরোপ, আমেরিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন। যাত্রীসেবার পাশাপাশি ভৌগোলিক কারণে এ বিমানবন্দরের সামরিক গুরুত্বও রয়েছে।
এছাড়া, শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজারে গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্ট, যেখানে প্রতিনিয়ত দেশ বিদেশের পর্যটকরা যান। এ বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালু হলে মৌলভীবাজারের পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ হবে। বিকশিত হবে সম্ভাবনাময় এ খাত।জানা গেছে, এ বিমানবন্দর চালু করলে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো  ফ্লাইট চালু করবে।
অ্যাভিয়েশন বিশেষজ্ঞরা বলেন, আকাশ পথে যাতায়াতে পৃথিবীর অনেক দেশই গুরুত্ব দিচ্ছে। নতুন বিমানবন্দর তৈরি করছে। যাতায়াত ব্যবস্থা যখন উন্নত হয়, তখন একটি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন সবই বিকশিত হয়। যেহেতু এখানে বিমানবন্দর রয়েছে, নতুন করে তৈরি করতে হচ্ছে না, সুতরাং এটি সংস্কার করে সরকার চালু করতে পারে। এতে তাদেরও রাজস্ব বাড়বে। তেমনই বিমানবন্দরটি চালু হলে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের মানুষের যাতায়াত সহজ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ হবে ও পর্যটনের বিকাশ ঘটবে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের এক কর্মকর্তা  বলেন, সরকার বিমানবন্দরে ফ্লাইট চালুর সুযোগ সুবিধা তৈরি করলে আমরা সেখানে প্রতিদিন একটি ফ্লাইট চালাবো। সেখানকার অনেক প্রবাসীদেরও সুবিধা হবে। এছাড়া মৌলভীবাজারে প্রতিদিন অনেক পর্যটক যাতায়াত করেন, সুতরাং এ রুট সম্ভাবনাময়। এ রুট চালু হলে মৌলভীবাজারের মানুষেরও সুবিধা হবে। সরকারের উচিত, এ বিমানবন্দরটি চালু করা।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.