× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বরিশালে রাতের আঁধারে লুট হচ্ছে নদীর বালু, বাড়ছে ভাঙন

বরিশাল ব্যুরো

০২ আগস্ট ২০২২, ০৬:৩৯ এএম

মেঘনাসহ আশপাশের নদী থেকে অবৈধভাবে বালু ও মাটি তুলে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বিক্রি করছেন। বরিশালের হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জে এমন ১০-১২টি জায়গায় বালু কেটে জাহাজে ভরে তা আশপাশের এলাকায় সরবরাহ করার অভিযোগ মিলেছে। এর ফলে নদীভাঙনে ওই দুই উপজেলার কোনো কোনো গ্রামের মানচিত্রই পাল্টে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ভুক্তভোগীরা এর প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় ও জেলা প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

কয়েক মাস ধরে হিজলা উপজেলার হিজলা-গৌরবদী ইউনিয়নের জানপুর গ্রামের ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডসংলগ্ন মেঘনা নদী থেকে ভেকু দিয়ে দেদার চলছে বালু ও মাটি কাটা। এতে ওই এলাকার প্রায় দুই কিলোমিটারজুড়ে ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এর প্রতিকার চেয়ে গত ২ জানুয়ারি স্থানীয় মোহাম্মদ আলী বরিশাল জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উলে¬খ করেন, হিজলার জানপুরে মেঘনা নদীসংলগ্ন ভূমিদস্যুরা কৃষিজমির উপরিভাগ কেটে নিয়ে ইটভাটায় সরবরাহ করছেন। এর ফলে কৃষির নিচু জমি আরও নিচু হয়ে জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়ে গ্রামে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে। ওই এলাকায় এত বেশি বালু কাটছে যে, নদীভাঙন প্রকট আকার ধারণ করছে।

অভিযোগকারী মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী এ প্রসঙ্গে বলেন, এখনো মাটি কেটে ফসলি জমি সাবাড় করে ফেলছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। অপর অভিযোগকারী প্রবাসী বাবুল মাতবর বলেন, রাতের আঁধারে জানপুরের মেঘনাসংলগ্ন এলাকায় বালু কাটছে স্থানীয় জাকির সিকদার ও তাঁর জামাতা মোশারফ। তাঁরা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছেও লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিকার পাননি।

তবে অভিযুক্ত জাকির সিকদার বলেন, ওই এলাকায় বালু ও মাটি কাটার ঘটনা কয়েক মাস আগের। স্থানীয় বামিন্দা মোহাম্মদ আলী ইউএনও এবং ডিসির কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। তার পর ওই ঘটনা বন্ধ হয়েছে। হিজলা-গৌরবদী ইউনিয়নে এখন আর মাটি বা বালু কাটার ঘটনা নেই। তিনি ও তাঁর জামাতা মোশারফ এ ব্যবসায় জড়িত নন।

হিজলা-গৌরবদী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মিলন অবশ্য জানান, অভিযোগের সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। জানপুর বড় এলাকা, তাই খোঁজখবর নেন না। ওখানে ব্যক্তিমালিকানা জমিও তেমন নেই। যাঁরা মাটি ও বালু কাটার অভিযোগ দিয়েছেন, সেটা আগে ছিল। এখন কী অবস্থা জানেন না।

জানা গেছে, হিজলা-মুলাদীর সীমান্ত এলাকা হরিনাথপুরে নদী থেকে রাতের আঁধারে বালু কেটে জাহাজে ভরে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়। হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জের সীমান্তবর্তী চর এককরিয়াও বালু কাটার অভিযোগ রয়েছে। তবে হিজলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বকুল চন্দ্র কবিরাজ জানান, তিনি এমন ঘটনার কথা জানেন না। তাহলে এসিল্যান্ডকে ঘটনাস্থলে পাঠাতেন। বিষয়টি তিনি দেখছেন। তার এলাকায় বালু কাটার কোনো অনুমতি নেই।

এদিকে হিজলার পার্শ্ববর্তী মেহেন্দীগঞ্জের মেঘনা, কালাবদর, মাসকাটা নদীতে বালু কাটার অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার শ্রীপুর লঞ্চঘাটসংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদী, চানপুরের ইলিশা নদী, চর এককরিয়ার লাল খারাবাদ এলাকার লতা নদী, সদর ইউনিয়নের মাসকাটা নদীর সাদেকপুর গ্রামসংলগ্ন এলাকায় বালু কাটার অভিযোগ উঠেছে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে।

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, তার এলাকায় বৈধ কোনো বালুমহাল নেই। তিনি নদীতে বালু কাটা বন্ধে বালু আনলোড, লোডের হিসাবে নেন। ইতিমধ্যে নদী থেকে বালু কাটার বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছেন। কয়েক মাস আগে উলানিয়ায় বালু কাটার অভিযোগে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। অনেকগুলো ড্রেজার জব্দও করেছেন।

তবে তার দাবি নদীতে বালু কাটা অনেকাংশে কমছে। আগে সপ্তাহে পাঁচটা অভিযোগ পেলে এখন পান দু-একটা। যেহেতু মেহেন্দীগঞ্জে নদীভাঙনের বড় কারণ বালু উত্তোলন। সেহেতু এ বিষয়ে তাঁরা জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছেন।




Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.