খাদ্য, বস্ত্র,বাসস্থান,শিক্ষা ও চিকিৎসা এই ৫ টি মৌলিক অধিকার সমূহের মধ্যে বাসস্থান অন্যতম । গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মুজিব শতবর্ষে স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম অঙ্গীকার এদেশের একটি মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবেনা। তার আলোকে শাহজাদপুর উপজেলায় ৩৬২ টি পরিবারকে ভূমিহীন ও গৃহহীন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং এ পর্যন্ত ২৬৬ টি পরিবার মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহাড় ঘর প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন থেকে বাকী পরিবারেরগুলোর জন্য তাদের বাসস্থানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নপূরণের জন্য উপজেলার বলদিপাড়া হলদিঘর মৌজার এস এ ১ নং খতিয়ানের ৩৯৪ দাগ ও আর এস ১ নং খতিয়ানের ৪৮৮ নং দাগের ১.২২ একর পতিত জমিতে সরকারের নিষ্কন্টক এ জমি চিহ্নিত করে তাতে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শুরুর জন্য মাপ জরিপ করার কিছুদিন পর এলাকার একটি মহল ঐ প্রকল্পের কাজ বন্ধের লক্ষে মানববন্ধন করে বলে জানিয়েছেন কায়েমপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল আলম ঝুনু। তিনি আরো বলেন যে,এলাকার সাধারণ লোকদের ভুল বুঝিয়ে শত শত লোক নিয়ে মানববন্ধন করে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দে গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মাণে বাধা হয়ে দাড়িয়েছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল। যারা এটি শতবছরের খেলার মাঠ হিসেবে দাবি করেছে তা মোটেও যৌক্তিক নয়।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে কায়েমপুর ইউনিয়নের আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মানের জন্য যে ১.২২ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে তা কাগজ কলমে উক্ত জমির মালিক বাংলাদেশ সরকার । এস এ, এবং আর এস জরিপকালে উক্ত জমি সরকারের নামে পরিশুদ্ধ ভাবে রেকর্ডে হয়েছে।ঐ সম্পত্তির মালিক সরকার। জানা গেছে যে ১৯৯০ সালের গেজেটে আর এস জরীপ অনুযায়ী এটি লায়েক পতিত শ্রেণির জমি। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়রা সরকারি পতিত শ্রেণির জমি স্বাভাবিকভাবেই ধান, খড়ি শুকানোর জন্য ব্যবহার করে আসছে।
সম্পত্তিটি ফাঁকা পড়ে ছিল তাই স্থানীয়রা ধান,কাপড়,জ্বালানি শুকানোর কাজে এবং মাঝে মাঝে খেলাধুলার কাজে ব্যবহার করে।এস এ এবং আরএস রেকর্ড পর্যালোচনায় উক্ত জমি যে খেলার মাঠ সে মর্মে কোন প্রকার প্রমান পাওয়া যায়নি।
মৌলিক চাহিদা পুরনের পর অন্যান্য চাহিদার মেটানোর তাগিদ সব জায়গায় বলা হয়েছে।বাসস্থান যেহেতু মানুষের মৌলিক চাহিদা সেক্ষেত্রে খেলারমাঠের চেয়ে বাসস্থান অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরে হলে নিশ্চিন্তে শান্তিতে ঘুমাতে পারবে গৃহহীন ঘর হারা মানুষগুলো। বিভিন্ন জনের অভিমত এলাকার খেলার মাঠের দরকার আছে কিন্তু তারচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ভুমিহীন ও গৃহহীনদের ঘরের ব্যবস্থা করা।তাছারা পাশের এলাকায় অন্য একটি খেলার মাঠ আছে।
ভুমিহীন ও গৃহহীন পুনর্বাসনের জন্যে জমি সংস্থান সংক্রান্ত নীতিমালা ২০২১ বলা হয়েছে কোন ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ভুমিহীন ও গৃহহীন পুনর্বাসনে ঘর নির্মানের লক্ষে বাংলাদেশ সরকার পক্ষে জেলা প্রশাসক বরাবর অনুদান হিসেবে জমি হস্তান্তরকে দান বলা হয়েছে। বৃত্তবানদের পক্ষ থেকে গৃহহীনদের গৃহনির্মাণের জন্যে সরকারির জমি দান দুরে থাক উল্টো আশ্রয়ন প্রকল্পে সরকারি জায়গায় ঘর নির্মানে বাধার সৃষ্টি করছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সুত্রে জানাগেছে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য এ সম্পত্তিটি মাটি ভরাট করার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ৩০.৬৭৫মে.টন গম বরাদ্দ পাওয়া গেছে।কিন্তু কাজ গৃহহীনদের স্বপ্নের ঘর নির্মান কাজ আটকে আছ৷ কিছু এলাকাবাসীর বাধার মুখে।
স্থানীয় কিছু মানুষ যারা এ বিশাল সম্পত্তি নিজেরা তাদের ব্যক্তিগত কাজে ব্যাবহার করতো তারা চায়না এখানে প্রতিবেশীদের আশ্রয়নের ঘর হোক। ঐ জায়গায় ঘর নির্মান হলে অনেকের স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটতে পারে আর এ কারণেই তারা মানববন্ধন করেছে বলে ধারনা সচেতন মহলের। সরকারি প্রকল্পের কাজ সরকারি জায়গায় হবে এটাই স্বাভাবিক বলে অভিমত অনেকের।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর সহকারি কমিশনার (ভুমি) লিয়াকত সালমান জানান,কায়েমপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নির্মানে জন্য যে জমি নির্ধারণ করা হয়েছে তা সম্পুর্ন সরকারি সম্পত্তি কারো ব্যাক্তি মালিকানাধীন নয় এবং ঐ সম্পত্তি নিয়ে কোন প্রকার মামলা নেই।সরকারি সম্পত্তিতে সরকারি প্রকল্পের কাজ করতে কোন বাধা নেই।
এ বিষয়ে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি কাজ শুরু হওয়ার আগেই সেখানে বাঁধা প্রদানের লক্ষ্যে মানববন্ধন করছে কিছু মানুষ। যেহেতু ওই জায়গাটা কারো ব্যাক্তিমালাধীন নয় ওটা পতিত সম্পত্তি। সেহেতু সরকারি সকল নিয়ম মেনেই ওখানে প্রকল্পের কাজ করা হবে।