মুসলিম-হিন্দু, জাতি-ধর্ম, বর্ণ সবাই এ অঞ্চলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে জড়াজড়ি করে পথ চলে। জাতি তোলে কেউ কখনো কারো সথে বিবাদে জড়ায়নি। একে অপরের সুখে-দুঃখে এগিয়ে আসে বহুকাল থেকে। রাজনৈতিক আনুষ্ঠানিকতায়ও সবার দায়িত্ব সবাই বুঝে নিয়ে পালন করে।
সামাজিক বা পারিবারিক কোনো ত্রুটি ঘটলে সেখানেও পক্ষদ্বয় তাদের মুরব্বিদের দ্বারা তা মিমাংসা করে থাকেন। এরই মাঝে হঠাৎ এক মিথ্যা সাম্প্রদায়িক সংঘাতের অপপ্রচার রটিয়ে তুলকালাম ঘটনার জন্মদিয়েছে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সজীব রায় (৩০) নামের এক যুবক। সে উপজেলার ৯নং বুড়িরচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড হরেন্দ্র রোড এলাকার সমির নাপিতের ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রতিবেশি সঞ্জয় বাবুদের (৩৮)সাথে সজীব রায়দের বাড়ির দরজায় হাটার জায়গা নিয়ে হঠাৎ দুপক্ষ বিবাদে জড়ায়। এতে দুই পক্ষ বিষয়টিকে মারপিট আকারে নিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে শনিবার সকাল এবং বিকেল দুধাপে।
পরে সজীব রায় তার ফেইবুক লাইভে এসে ইহাকে সাম্প্রদায়িক সংঘাত বলে প্রচার করতে থাকে। এছাড়াও ভারতের হিন্দু মহাজোটের নেতা সহ এখানকার প্রশাসনকেও ফোন দেয়। পরে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দেখে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। প্রশাসনকে প্রতিপক্ষ সঞ্জয় বাবু সহ স্থানীয় সবায় জানান যে, ঘটনাটি ঘটেছে আমাদের সাথে, এখানে মুসলমানে নাম আসল কেনো। দুই পক্ষের পারিবারিক এ ঘটনা নিয়ে সোমবার (১ আগস্ট) সকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে সামাজিক ভাবে শালিসি বৈঠক বসে।
দুই পক্ষের স্টেটমেন্ট, সাক্ষী এবং মানিত শালিসদার 'দের মতামত পর্যালোচনা শেষে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন, ঘটনা ঘটেছে তবে তাহা তাদের মধ্যে, মুসলমান এখানে সম্পৃক্ত নয়। পাশাপাশি ঘটনাটি যেভাবে রূপ নিয়েছে, সে ভাবে রূপ নেয়ার মতো নয়। ঘটনার সাথে জড়িত দুই পক্ষকে সহনশীল হয়ে সুন্দর ভাবে বসবাসের পরামর্শ দেন তিনি।
এ বিষয়ে লাইভে আসা অপ-প্রচারকারী সজীব রায়কে প্রশ্ন করা হলে সে জানায়, আসলে ঐ সময় আমার মাথা গরম ছিল। তাছাড়া ঘটনাটি মুসলমানের সাথে হয়নি,এটা আমার পারিবারিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট, তবে এখানকার কিছু মুসলমান সঞ্জয় বাবুদের পক্ষের। তাই এমনটি করেছি আমি।
প্রতিপক্ষ সঞ্জয় বাবু জানান, সজীব রায়রা তিন ভাই মিলে আমার বধি সহ কয়েকজনকে পিটিয়েছে, আবার উল্টো হিন্দু মুসলমান মারামারি বলে লাইভ এসে মিথ্যাচার করছে। সে হাতিয়া হিন্দুজোটের নেতা বলে সবাইকে থ্রেট করছে,গালিগালাজ করছে। স্থানীয়দের মধ্যে, বিমল,অটল,অমৃত বাবু,নিরব,ইউসুফ সহ শকুন্তলা রানী জানান, ছোট্ট একটি ঘটনাকে সজীব এতো বড় রূপ দিবে, তা আমরা ভাবি নাই। আমরা এখানে সবাই আন্তরিক ভাবে বসবাস করি, অথচ ছেলেটি যে কান্ড ঘটিয়েছে তাতে আমরা লজ্জিত।
এদিকে, ফেইজবুক লাইভ ঘটনার কিছুক্ষণপর সজীব রায় অবশ্যই ইহা রিমুভ করে পরে সকলের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে আবার লাইভ দেন।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি আমাদের কাছে রেকর্ডভুক্ত আছে এবং ইহা আরো যাচাই-বাছাইয়ের পর ব্যবস্থা নেবো।