পটুয়াখালীতে বেড়িবাধঁ বিধ্বস্ত হওয়ায় কৃষকদের আমন আবাদ প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে ১২ গ্রামের কৃষকদের দিন কাটছে চিন্তায় এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের হাতছানিতে। সরেজমিনে দেখা যায়,পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রাবনাবাদ পাড়ের ৩টি ইউনিয়নের কমপক্ষে ১২ গ্রামের কৃষকের এ বছর আমন আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আগামী বছরের ধান সংগ্রহ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন কৃষকরা । ওই এলাকার দীর্ঘ প্রায় ৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত রয়েছে। অন্তত ১০ কিলোমিটার এলাকায় বেড়িবাঁধ নেই। কোথাও কোথাও বেড়িবাঁধ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।
উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের চরচান্দুপাড়া, মুন্সিপাড়া, বুরোজালিয়া, ও চান্দুপাড়ায় একই অবস্থা। জোয়ারের প্রবল ঝাঁপটায় অনেক স্থানের বেড়িবাঁধ ভেসে গেছে। আর তা গিলে খেয়েছে রাবনাবাদ। দেবপুর এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। অমাবস্যা-পূর্ণিমার সময় ওই সকল গ্রামের মানুষ অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ভাসছে। জোয়ারের সময় বাড়িঘর থেকে নৌকা ছাড়া লোকজন বের হতে পারে না। মানুষ এখন বসবাসের অবস্থাও হারিয়ে ফেলেছে। হাজার হাজার কৃষকের পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি পালন বন্ধের উপক্রম হয়েছে। মৌসুম শেষ হতে চললেও আমনের বীজতলা তৈরি করতে পারছেন না কৃষক। রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় শিশুরা স্কুল মাদ্রাসায় যেতে পাছে না। কোথাও বিকল্প বাঁধ করার জন্য প্রয়োজনীয় জমিও পাচ্ছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড। অপরদিকে পায়রা বন্দর অধিগ্রহণ করায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে নতুন করে বাঁধ নির্মাণ কিংবা পুরনো বেড়িবাঁধ মেরামত করছে না। বাঁধের চাপে চরম ঝুঁকি নিয়ে ঠাঁই নিয়েছে অনেক অসহায় দরিদ্র শ্রেণীর অনেক পরিবার।
লালুয়া ইউপি চেয়ারমযান শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস জানান, তার ইউনিয়নের রাবনাবাদ পাড়ের দীর্ঘ ৬ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত রয়েছে। মানুষের বাড়িঘর সম্পদ অস্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে। ধানখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিয়াজ তালুকদার জানান, দেবপুরের বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত থাকায় তার ইউনিয়নে এখন তিন গ্রাম জোয়ারের পানিতে ভাসছে। এখন আমন আবাদ করলেও ধান পাকার আগে লোনা পানিতে সব নষ্ট হয়ে যাবে। চম্পাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার জানান, দেবপুরের বাঁধ নেই। প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকা দিয়ে ইউনিয়নের অর্ধেক জোয়ারের পানিতে ডুবে যায় ।
এমনকি অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট পর্যন্ত ভেঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন জানান, লালুয়ায় বেড়িবাঁধ পায়রা বন্দর করবে। আর দেবপুরে বেড়িবাঁধ করার জন্য জমি না দেয়ায় তা করা সম্ভব হচ্ছে না।