ড্রেসকোড না মানায় তিরস্কার ও বেত্রাঘাত করায় ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে প্রভা আক্তার (১৩) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু হয়। নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলার সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। নিহত স্কুল ছাত্রী প্রভা আক্তার শিবপুর উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের জয়মঙ্গল গ্রামের প্রবাসী ভুট্টো মিয়ার মেয়ে।
স্কুল ও থানা সূত্রে জানা যায়, প্রভা বিদ্যালয়ের নির্ধারিত পোশাকের সঙ্গে ট্রাউজার পরে এসেছিল। বেলা তিনটার দিকে অষ্টম শ্রেণির শ্রেণিকক্ষে পড়াতে আসেন সমাজবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক নার্গিস সুলতানা ওরফে কণিকা। এ সময় প্রভার ট্রাউজার পরে আসার বিষয়টি তার নজরে আসে। তিনি প্রভাকে শ্রেণিকক্ষে দাঁড় করিয়ে অপমান করেন। একপর্যায়ে তাকে বেত দিয়ে কয়েকটি আঘাত করেন এবং থাপ্পড় দেন। শ্রেণিকক্ষের মধ্যে শিক্ষকের এমন আচরণ মানতে পারেনি ওই স্কুল ছাত্রী। সেই সময়ই শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে বিদ্যালয়ের বাইরে চলে যান। শিবপুর থানার ডিউটি অফিসার এইচ আই জিয়া। ওই ছাত্রীর বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে প্রভা শিবপুর বাজারের একটি দোকান থেকে ইঁদুর মারার বিষ কিনেন। পরে এটি খেয়ে শিবপুর থানায় চলে আসে। এসে বলে, ক্লাসে কণিকা ম্যাডাম মেরেছে, তাই ইঁদুর মারার ওষুধ খেয়েছি। এরপরই সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
পুলিশ দ্রুত স্কুলের প্রধান শিক্ষককে খবর দিয়ে ওই ছাত্রীকে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর উদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর জানান, এই ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষিকা নারগিস সুলতানাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। যা একদিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে শিক্ষক নার্গিস সুলতানার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল না ধরায় বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, ওই ছাত্রী থানায় এসে ডিউটি অফিসারকে ঘটনাটি বলছিল। জানতে পেরে তিনি এগিয়ে এসে তার বক্তব্য লিখে রেখেছেন। এ ঘটনায় ওই শিক্ষককে আটকের চেষ্টা চলছে।পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।