× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

ঝিনাইদহে ড্রাগন ফলের নতুন চাষ, ফলন তিন গুণ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৯:২৪ এএম

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলায় নতুন উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে ড্রাগন ফলের চাষ করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষের ফলে তিনগুন ফলন হচ্ছে। ২০০৭ সালে ড্রাগন ফলের চাষ এদেশে শুরু হলেও ২০১৪ সালের পর থেকে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায় ড্রাগনের চাষ বৃদ্ধি হতে থাকে। তবে  ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের মাঠে ড্রাগনের গতানুগতিক চাষ পদ্ধতির বাইরে এসে আল্ট্রা হাইডেনসিটি পদ্ধতিতে করা চাষ মডেল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। হরিণাকুন্ডু পৌরসভার মান্দারতলা গ্রামের কৃষক বিপ্লব জাহান ওরফে রবিউল পায়রাডাঙ্গা গ্রামের চারাতলা বাজার এলাকায় ১১ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন আল্ট্রা হাইডেনসিটি ড্রাগন বাগান। যার নাম দিয়েছেন “বাংলা পদ্ধতি”। ইতিমধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো: হামিদুর রহমান এই ড্রাগন বাগানটি পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, যে পদ্ধতিতে এখানে ড্রাগন চাষ করা হচ্ছে তা সারা দেশে অনুকরণযোগ্য। বাগানটির চাষ পদ্ধতি দেখে তিনি উচ্চ প্রশংসা করে বলেন, অল্প জায়গায় অধিক ফলন পেতে দেশের ড্রাগন চাষিদের এই পদ্ধতিতে বাগান করা উচিৎ। 

এদিকে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মোঃ মেহেদী মাসুদ খান বাগানটি পরিদর্শনকালে গানমাধ্যম কর্মীদের জানান পায়রাডাঙ্গা গ্রামে ড্রাগনের এই চাষ পদ্ধতি সম্পূর্ণ নতুন আবিষ্কার। তিনি বলেন, ড্রাগন চাষিরা যেখানে এক বিঘায় ৮৫০ টি চারা রোপণ করেন, সেখানে এই বাগানে ২৬’শ থেকে ২৭’শ চারা লাগানো হয়েছে। যা স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ বেশি। ফলে তিনগুণ ফলন বেশি হবে। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাগান ঘুরে দেখা গেছে, চায়না পদ্ধতির আদলে স্থাপন করা বাগানটিতে লম্বা সারি করে খুঁটি স্থাপন করে তার উপর দিয়ে লম্বা করে একটি প্লাস্টিক পাইপ, রড ও সিমেন্টের তৈরী আড়া স্থাপন করা হয়েছে। এর দ্ইু পাশে দুটি সরু আড়া স্থাপন করা হয়েছে, যা দেখতে ঠিক যেন তিন তারের বৈদ্যুতিক খাম্বার মতো। নিচে ৬ ফুট প্রশস্ত বেডের মাঝখানে স্থাপিত খুঁটির দুই পাশ দিয়ে সারি করে ড্রাগন গাছ রোপণ করা হয়েছে। প্রতিটি গাছ শিকড় বিস্তারের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পেয়েছে। আবার আড়াই উঠার পর পেয়েছে পর্যাপ্ত আলো, বাতাস এবং ডালপালা ছড়ানোর জায়গা। ফলে ফুল ও ফল আসছে প্রচুর পরিমাণে। অন্যান্যরা যেখানে ৩৩ শতাংশ বিঘার জমিতে ৮৮০ টি গাছ রোপন করেন, সেখানে পায়রাডাঙ্গার মাঠের এই ড্রাগন ক্ষেতে বিঘা প্রতি প্রায় ২৮০০ টি গাছ লাগিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক বিপ্লব জাহান। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে মাত্র ৩৮ হেক্টর জমিতে ২৭৭ টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৫৪ হেক্টর জমিতে ৪৩১ টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১০৮ হেক্টর জমিতে ৮১৫ টন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২২৭ হেক্টর জমিতে ২৮০২ টন ও ২০১৯-২০অর্থবছরে ৩৪১ হেক্টর জমিতে ৩৪৬৪ টন ড্রাগন ফল উৎপাদিত হয়েছে। প্রতি বছরই দেশে দ্বিগুণ হারে এই ফলের চাষাবাদ বৃদ্ধি পেলেও আধুনিক ও লাগসই পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ করে তিনগুন ফল উৎপাদনের রেকর্ড গড়েছেন হরিণাকুন্ডুর এই বাগান মালিক। 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ড্রাগন ফলের উৎপাদন ছিল মাত্র ৬৬ হাজার কেজি, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ কোটি কেজিতে উন্নীত হয়। এ হিসাবে বিঘা প্রতি প্রায় ১৩ টন ড্রাগন ফল উৎপন্ন হয়েছে। বাংলাদেশে সাধারণত ৩৩ শতাংশ জমিতে সর্বোচ্চ ২২০ টি খুঁটিতে টায়ার লাগিয়ে ৮৮০ টি ড্রাগন গাছ লাগানো হয়ে থকে। অন্যান্য দেশেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। তবে চীন দেশে খুঁটিতে ড্রাগন চাষ ছাড়াও লম্বা লাইন করে ড্রাগন ফলের গাছ লাগানো হয়, যাতে কিছু গাছ বেশি লাগানো যায়। 

এ বিষয়ে কৃষক বিপ্লব জাহান জানান, ড্রিপ ইরিগেশন সিস্টেমের মাধ্যমে লাগানো প্রতিটি গাছ সমান ভাবে খাদ্য, পানি ও পুষ্টি পাচ্ছে। পানির কোন অপচয়ও নেই এই পদ্ধতিতে। এই বাগান বিঘা প্রতি ১০ টন করে ফলন আশা করছেন তিনি। নতুন পদ্ধতিতে ড্রাগন ফল চাষের বিষয় নিয়ে হরিণাকুন্ডু উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হাফিজ হাসান জানান, কৃষক বিপ্লব জাহান ওরফে রবিউল যে পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ করছেন তা নিশ্চয় অন্যান্য চাষিদের জন্য অনুসরণ যোগ্য। তিনি ওই চাষিকে সময়মতো পরামর্শ ও ড্রাগন ক্ষেত পরিচর্চার বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।


Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.