ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে শারদীয় দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। কুমিল্লায় দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় মণ্ডপগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে ৫ হাজার আনসার সদস্য। অতিরিক্ত নিরাপত্তায় গুরুত্বের ভিত্তিতে জেলার ৬৭টি পূজা মণ্ডপে এবার ষষ্ঠী থেকে দশমীর বিসর্জন পর্যন্ত দিন-রাত ২৪ ঘন্টা পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
অন্য সব মণ্ডপেও থাকবে নিরবিচ্ছিন্ন পুলিশি টহল। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হয়েছে বিশেষ পর্যবেক্ষণ টীম।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আবদুল মান্নান জানান, এসব ব্যবস্থা ছাড়াও প্রতিটি পূজা মণ্ডপে পুলিশের জরুরি নম্বর টানিয়ে দেয়া হয়েছে- যেন যে কোন প্রয়োজনে যে কেউ ফোনে জানাতে পারে। গাড়ী ও মোটর সাইকেলে পেট্রল টীম এবং কন্ট্রোলরুম থেকে কুমিল্লাসহ আশেপাশের সব জেলার তথ্য পর্যবেক্ষণে রাখবে।
কুমিল্লার আনসার ভিডিপি’র জেলা কমান্ড্যান্ট সঞ্জয় চৌধুরী জানান, শুক্রবার থেকেই কুমিল্লার সকল মণ্ডপে এবং মন্দিরে ৪ হাজার ৮ শ’ ২ জন আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ৭৯৪ টি মণ্ডপে বিসর্জন পর্যন্ত আনসার সদস্যরা থাকবে। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বড় মাঝারি ও ছোট পূজা মণ্ডপে ৪, ৬ ও ৮ জন করে আনসার সদস্য মোতয়েন করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, প্রয়োজন অনুসারে আনসার সদস্য বাড়ানো যেতে পারে। যারা নিয়োজিত হয়েছেন তারা বিসর্জন পর্যন্ত থাকবেন।
উল্লেখ্য, গত বছর ১৩ অক্টোবর দুর্গোৎসবের সময় কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘীর পাড়ের একটি অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ থেকে অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে পুরো জেলায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এর জেরেই দেশের বিভিন্ন জেলায় সন্ত্রাসী হামলা ও নাশকতার ঘটনা ঘটে। গত বছরের কথা মাথায় রেখে এবছর কুমিল্লার প্রতিটি পূজা মণ্ডপকে সুরক্ষিত এবং নিরাপদ রাখতে আগে থেকেই নেয়া হয়েছে নানান ব্যবস্থা।
ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে পৃথক পৃথক সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় নিরাপত্তার ব্যাপারে। বিভিন্ন উপজেলায় স্থানীয় সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিতে সম্প্রীতি সভা ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জানানো হয়- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক থাকবে প্রতিটি পূজা মণ্ডপে।
এদিকে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আবদুল মান্নান বার বার সতর্ক করে সকল ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ করেছেন যেন কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে কোন ধরনের উস্কানিমূলক গুজব ছড়াতে না পারে। এজন্য কোন অস্বাভাবিক ফেসবুক পোস্ট বা লেখা কারো চোঁখে পড়লে তা যেন সাথে সাথে পুলিশকে জানানো হয়।
তিনি আরো জানান, পুলিশের সাথে সাথে র্যাব ও বিজিবির টহল দল থাকবে। এবার দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলবাহিনী সতর্ক রয়েছে।