× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মা‌নিকগ‌ঞ্জে মন্দিরে সরকা‌রের বরাদ্দ চালে সিন্ডিকেট, হা‌তি‌য়ে নি‌য়ে‌ছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা

মানিকগঞ্জ প্রতি‌নি‌ধি

০৫ অক্টোবর ২০২২, ০৫:২২ এএম । আপডেটঃ ০৫ অক্টোবর ২০২২, ০৫:২২ এএম

সরকার দুর্গাপূজা উপলক্ষে মন্দিরে মন্দিরে চাল বরাদ্দ দেয়। সরকারি ওই চাল খাদ্যগুদাম থেকে নেওয়ার পর মন্দির কমিটির তা বিক্রি করে টাকা নেওয়ার কথা। কিন্তু মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলায় মন্দিরের জন্য বরাদ্দ দেওয়া চাল মন্দির কমিটি নিতে পারছে না। ক্ষমতাসীন দ‌লের নেতাকর্মীরা সিন্ডিকেট করে ৪০ টাকা কেজির চাল মন্দির কমিটিকে ২৮ টাকা থেকে ৩১ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য করছে।

স্থানীয় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাদের যোগসাজশ করে তারা এই অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে মন্দির কমিটি ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ম‌ন্দির ক‌মি‌টি‌কে ঠ‌কি‌য়ে সি‌ন্ডি‌কেট মা‌নিকগঞ্জ জেলায় পূজার সরকারি অনুদান ‌দেওয়া চাল থে‌কে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নি‌য়ে‌ছে।
মানিকগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় ৬৫টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ৫৪৮টি মন্দিরে এবার দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিবছরের মতো এ বছরও সরকারিভাবে মন্দির কমিটিগুলোকে সহায়তা করা হয়েছে। প্রতি মন্দিরে ৫০০ কেজি করে চালের চাহিদাপত্র (ডিও) উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস থেকে দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ি এসব চাহিদাপত্রের বিপরীতে মন্দিরগুলোর কমিটিকে চাল দেওয়ার কথা। অথচ সবকটি উপজেলায় চাল ক্রয় বিক্রয়ের জন্য গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের সদস্যরা চাপে ফেলে মন্দির কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে কম মূল্যে এসব চাল কিনে নিচ্ছেন। এতে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ভাবে সহযোগিতা করছে। এই আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা জড়িত।
মা‌নিকগঞ্জ সদর উপজেলার উচুটিয়া কর্মকারপাড়া সর্বজনীন দুর্গাপূজামণ্ডপ কমিটির সভাপতি বাদল কর্মকার বলেন, ডিওতে তাঁর স্বাক্ষর নিয়ে প্রতি কেজি ৩১ টাকা দরে ৫০০ কেজি চাল বাবদ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়। সিন্ডিকেটের কারণে বাজারদরের চেয়ে কম মূল্যে চাল বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে তাঁরা।
জেলার দৌলতপুর উপজেলার মান্দারতা পূর্বপাড়া সর্বজনীন দুর্গামন্দির কমিটির সভাপতি উপেন্দ্র মণ্ডল বলেন, বাধ্য হয়েই তাঁদেরকে সিন্ডিকেটের কাছে কম মূল্যে চাল বিক্রি করতে হয়। ৫০০ কে‌জি চা‌লের জন‌্য ১৪ হাজার টাকা করে দিচ্ছে। সিন্ডিকেট করে সরকারি মূল্য থেকে প্রতি কেজি চা‌লে ১২ টাকা করে কম দিচ্ছে।
জানা গে‌ছে, দৌলতপুর উপজেলায় স্থানীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতোয়ার রহমান সিন্ডিকেট করে ম‌ন্দির ক‌মি‌টির কাছ থে‌কে সরকারি মূল্য থেকে প্রতি কেজি ১২ টাকা করে কম দিয়ে চাল কি‌নে নি‌য়ে‌ছে।
এ অভিযোগের বিষ‌য়ে জা‌ন্তে চাই‌লে ছাত্রলীগ নেতা আতোয়ার রহমান বলেন, ভৌগোলিক কারণে এ উপজেলায় চালের দাম কম হওয়ায় মন্দির কমিটিকে কম টাকা দেওয়া হয়েছে।
দৌলতপুর উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, মন্দির কর্তৃপক্ষ স্বেচ্ছায় চাল বিক্রি করে দিচ্ছেন। এটা আমাদের দেখার বিষয় নয়।
ম‌া‌নিকগঞ্জ জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনির্বাণ পাল বলেন, জেলায় ৫৪৮টি মন্দিরে ৫০০ কেজি করে মোট ২৭৪ মেট্রিক টন (২ লাখ ৭৪ হাজার কেজি) চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। মন্দির কমিটি সিন্ডিকেটের কাছে বাজারদরের চেয়ে গড়ে ১০ টাকা করে কম দামে চাল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। সেই হিসাবে জেলায় পূজার সরকারি অনুদান থেকে ২৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রতি বছরই এই আর্থিক অনিয়ম হয়ে আসছে। প্রশাসনকে জানালেও সুফল মিলছে না।
মা‌নিকগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শেখ রিয়াদ কামাল বলেন, চাল বিতরণ করা আমাদের দায়িত্ব। তবে মন্দির কমিটি কারো কাছে চাল বিক্রি করলে এটা আমাদের দায়িত্ব নয়। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমাদের (খাদ্যগুদামের) কেউ জড়িত থাকার সুযোগ নেই।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.