কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু দলীয় কর্মির ছুড়ে মারা চেয়ারের আঘাতে মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, উপজেলা আওয়ামীলীগের আসন্ন ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে আগামী ১৪ অক্টোবর উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্ধিত সভার দিন ধার্য করা হয়। গত শনিবার (৮ অক্টোবর) বিকাল ৪ টায় বর্ধিত সভা উপলক্ষে উপজেলা অডিটোরিয়াম হলে দলের সভাপতি ও সম্পাদক মন্ডলীর সদস্যদের নিয়ে এক প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয় । সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, নেতাদের নানাবিধ অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও অগঠনতান্ত্রিক কার্যকলাপ অব্যাহত থাকায় দীর্ঘদিন ধরে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত ছিল। দলের সম্মেলন ও বর্ধিত সভাকে সামনে রেখে প্রস্তুতি মুলক সভায় সাংগঠনিক নানা অনিয়মের বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হলে সভার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ।
সভায় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিকাল সাড়ে পাঁচ টার দিকে বৈঠকে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অধ্যক্ষ (অব:) আজাহার আলী রাজা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টুকে লক্ষ্য করে চেয়ার ছুড়ে মারেন। এ সময় চেয়ারের আঘাত তার বুকে লাগলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। আহত গোলাম হোসেন মন্টুকে উপস্থিত নেতাকর্মীরা দ্রুত কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তিনি কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু দলীয় কর্মী দ্বারা আহত হওয়ার খবর শুনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলী ও সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু ঐদিন ৮ টার দিকে তাকে দেখতে হাসপাতালে জান। আহত সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন মন্টু সাংবাদিকদের জানান, দলের সম্মেলন ও বর্ধিত সভা উপলক্ষে ডাকা প্রস্তুতি মুলক বৈঠকে আলোচনা হচ্ছিল কিভাবে সম্মেলন সফল করা যায় এবং প্রচুর সংখ্যক নেতাকর্মীর সমাগম ঘটানো যায়। এসময় একটি কুচক্রী মহল সম্মেলন বানচালের উদ্দেশ্যে সভায় বিশৃংখলা সৃষ্টি করে এবং আজহার আলী রাজা আমাকে লক্ষ্য করে চেয়ার ছুড়ে আঘাত করে। আমি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছি।
এ ব্যাপারে সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অধ্যক্ষ আজহার আলী রাজা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ দীর্ঘদিন শুন্য থাকার সুযোগে দলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু একাই দুই পদের প্রক্সি দিয়ে আসছেন। কিছু কিছু ইউনিয়ন কমিটির ব্যাপারে আগে থেকেই আপত্তি থাকায় জেলা সভাপতি জাফর আলী ভাই ও সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু ভাই বেশকিছু দিন আগে উলিপুর এসে ইউনিয়ন ও পৌরসভার ত্রুটি পূর্ণ কমিটিগুলো পুনর্গঠন করার কথা বলে গেছেন।
কিন্তু তাদের কথা আমলে নেননি সাধারণ সম্পাদক। তিনি ঐ সব পকেট কমিটি দিয়ে নিজে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার জন্য কমিটি পুনর্গঠনে কোন পদক্ষেপ নেননি। আমি এসব বিষয়ে সভায় জোড়ালোভাবে আপত্তি উত্থাপন করি এবং তার চলমান দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরার চেষ্টা করি।
এ সময় চেয়ারম্যান ক্ষিপ্ত হয়ে উচ্চবাচ্য বলা শুরু করলে উভয়ের মধ্যে চেয়ার ছোড়া ছুড়ির ঘটনা ঘটে বলে তিনি জানান। এ ঘটনায় দলের অভ্যন্তরে তীব্র অসন্তোষ ও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।