× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বগুড়ার শেরপুরে গলব্লাডারে পাথর নেই, তবুও অপারেশন!

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

১০ অক্টোবর ২০২২, ০৩:৫৩ এএম

পেটে ব্যাথা কিছুতেই থামছেনা, ব্যাথার কষ্ট থেকে আরোগ্য পেতে রোগী যায় ডাক্তার কাছে। পরামর্শ ফি নিয়ে ডাক্তার আল্ট্রাসাউন্ড করে বলেন পাথর হয়েছে, যার কারণে ব্যাথা থামছেনা। সেক্ষেত্রে অপারেশন করে পাথর বের করলেই আরোগ্য হবেন। চিকিৎসকের কথায় বিশ্বাসী হয়ে অপারেশনে রাজী হয় রোগী, রীতিমত অপারেশনযজ্ঞ চলাকালীন সময়ে সার্জন বললেন কই গলব্লাডারে পাথরতো নেই, শুধু শুধুই পেটটা কাঁটা হলো! অপারেশন থিয়েটারে সার্জনের এমন কথাগুলো রোগী নিজ শুনতে পায়। এমনই ঘটনা ঘটেছে গত ০২ অক্টোবর বগুড়ার শেরপুরে করতোয়া ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আর গলব্লাডারে পাথর না থাকলেও অপারেশনের মাধ্যমে অহেতুক পেট কাঁটার শিকার হয়েছেন জনৈক মকবুল হোসেন(৩৮)। সে উপজেলার পৌর শহরের টাউনকলোনী এলাকার বন্দেআলী মিয়ার ছেলে।

ওই রোগীকে দেখে আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেয় ওই ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. মহিদুল ইসলাম। তাছাড়া তার এনেসস্থেসিয়ার মাধ্যমেই অপারেশনে কাজে নিয়োজিত হয় অপারেশন করেন সার্জন ডাঃ মোঃ শাজাহান আলীর(অনকল ডাক্তার)। এসময় সহকারী ডাক্তার মোঃ মতিউর রহমান এবং ডিউটিরত ডাক্তার মোঃ ফারুক আহম্মেদ উপস্থিত ছিলেন বলে রোগী পরিবার ও ওই ক্লিনিক সুত্রে জানা যায়।

সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগী রোগী মকবুল হোসেন ও তার স্ত্রী জানায়,  হঠাৎ করে আমার পেট ব্যথা শুরু হলে প্রথমে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে যাই। জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত ডাক্তার আমাকে আলট্রাসনোগ্রাফি, ইসিজি ও ব্লাড টেষ্ট করার জন্য বলে। তখন আমি করতোয়া ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে যাই। এসময় ওই ক্লিনিকের কর্মরত ডাঃ মহিদুল ইসলাম আমাকে আলট্রাসনোগ্রাফি করে বলেন, আপনার গলব্লাডার/পিত্তকোষে পাথর আছে বলে রিপোর্ট দেন। এবং পাথর অপসারনের জন্য অপারেশনের পরামর্শ দেন। এতে আমি ও আমার পরিবার অপারেশন করার সিদ্ধান্ত ডাঃ মো. মহিদুল ইসলামকে জানালে তিনি আমাকে এতে গত ০১ অক্টোবর শনিবার ওই ক্লিনিকে ভর্তি হয়ে পরদিন(০২ অক্টোবর) রবিবার রাত আনুমানিক ৯ টার দিকে ভর্তি করেন এবং অপারেশনের যাবতীয় ব্যবস্থা করেন। 

অপারেশন কার্যক্রমে সার্জন ডাঃ মোঃ শাজাহান আলীর(অনকল ডাক্তার) অপারেশন করেন। অপারেশন চলাকালীন সময়ে সার্জন, ডাক্তার মো. মহিদুল ইসলাম বলেন যে, কই পাথর, শুধু শুধুই পেটটা কাঁটলাম! এসম আমার জ্ঞান অনেকটাই স্বাভাবিক থাকায় কথাগুলো শুনতে পাই। পরে ডাক্তার তড়িঘড়ি করে পেট সেলাই করে বেডে দিয়ে দেয়।

ভুক্তভোগীর রোগীর স্ত্রী বলেন, অপারেশন শেষে ডাক্তারের নিকট পিত্তকোষের পাথর দেখতে চাইলে ডাক্তার তখন কৌশলে আমার আত্মীয়কে ডেকে নেন এবং রোগীর পিত্তকোষে ইনফেকশন হয়েছে , এই মুহুর্তে অপারেশন করা যাবে বলে শান্তনা দেয় ওই ডাক্তার মোঃ শাজাহান আলী। তাছাড়া আল্ট্রাসাউন্ড রিপোর্টে অসংগতি, অহেতুক পেট কাটার ব্যবস্থা করায় নিজেকে সফল ডাক্তার হিসেবে মনে করে  অপারেশনের পর মনের সুখে গান গাইতেও দেখা গেছে ডাক্তার মহিদুল ইসলামকে।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ওই ক্লিনিকের কর্মরত ডাক্তার মোঃ মহিদুল ইসলাম বলেন, ওই রোগীর পেটে পাথর এখনও রয়েছে, তার রিপোর্টে কোন ভূল তথ্য নেই বলে তিনি দাবী করেন।

তবে এ বিষয়ে অপারেশন কাজে নিয়োজিত ডাক্তার মোঃ শাহজাহান আলী কোন মন্তব্য করতে রাজী হয়নি।  

এ বিষয়ে ওই ক্লিনিকের চেয়ারম্যান মোকারিম হোসেন রবি সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হয়নি।   

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ শফিউল আজম বলেন, লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

তবে চিকিৎসার নামে এহেন রোগী হয়রানি ও প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া এটাই যদি সেবামূলক কার্যক্রম হয় তাহলে মানুষের জীবন রক্ষায় কাদের কাছে পাবে বিশ্বস্ততা। আর কতজন এমন হয়রানির শিকার হয়ে ধুঁকে ধুঁেক মৃত্যু’র প্রহর গুনবে, এ বিচার কার কাছে দিবেন এমনটা দাবী উঠেছে সচেতনমহলে।










Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.