× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত জসীমের মরদেহের অপেক্ষায় পরিবার

আবুল হাসনাত অপু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

১০ অক্টোবর ২০২২, ০৮:৩২ এএম

মাস দুয়েকের মধ্যে দেশে ফেরার কথা ছিল জাতিসংঘের শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত সৈনিক জসীম মিয়ার। স্ত্রীর স্বপ্ন ছিল স্বামীকে কাছে পেলে পিতৃস্নেহে গড়ে উঠবে দুই সন্তান। কিন্তু রাত পোহাবার আগেই সিলেট ক্যান্টনমেন্ট থেকে আসা একটি টেলিফোনে সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন চির বিদায় নিয়েছেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়া বাংলাদেশের এই বীর সৈনিক। 

সম্প্রতি রাতে দক্ষিণ আফ্রিকায় শান্তিরক্ষা মিশনে জরুরি অভিযান চলাকালে সন্ত্রাসীদের বোমা হামলায় নিহত হন তিনি। এদিকে মত্যুর খবরে তার বাড়িতে এখন শুধুই কান্নার রোল। বিজয়নগর উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছেন, মরদেহ আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

সরেজমিনে জসীমের বাড়িতে দেখা যায়, যেন কিছুতেই থামছে না জসীম মিয়ার স্ত্রী শারমীনের কান্না। তার বুকফাটা কান্নায় ভারী হয়ে উঠছে সেখানকার পরিবেশ। গত সোমবার রাতে স্বামীর সাথে তার মুঠোফোনে কথা হয়। এ সময় তিনি জানিয়েছিলেন, শান্তিরক্ষার মিশনে জরুরী অভিযানে বের হচ্ছেন। কিন্তু রাত পোহাবার আগেই সিলেট ক্যান্টনমেন্ট থেকে আসা একটি টেলিফোনে সবকিছু তছনছ হয়ে যায়। মঙ্গলবার জানতে পারেন সাউথ আফ্রিকায় সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ হয়েছেন স্বামী জসিম মিয়া। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের খাটিঙ্গা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী মোঃ আব্দুন নূরের ছেলে সৈনিক জসীম। ৪ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে জসীম ছিল তৃতীয়। ২০০৯ সালে জসিম সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ২০১৪ সালে বিয়ে করেছিলেন শারমীন আক্তারকে। দু’সন্তানের জনক জসীম বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সিলেটের ৬১ বেঙ্গল রেজিমেন্টে সৈনিক পদে নিয়োজিত ছিলেন। 

২০২১ সালে তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে যান।  নিহত জসিম মিয়ার বাড়িতে এখন শোকের মাতম চলছে। তার বৃদ্ধ পিতা অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তাদের আর্তচিৎকারে আশপাশের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। আত্মীয়, স্বজন ও এলাকাবাসী খবর পেয়ে ছুটে আসছেন তার বাড়িতে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় অনেকেই নিরবে ফেলছেন চোখের জল। 

স্বজনরা জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর মাসে জসীম মিয়ার দেশে আসার কথা থাকলেও তিনি এখন ফিরবেন কফিনবন্দী হয়ে। জসীম অত্যন্ত ভাল মানুষ ছিলেন। তিনি সকলের সাথে সে মিলমিশে চলতেন। তার মৃত্যুর শোক পরিবারের কেউ সইতে পারছেন না। স্বজনরা সরকারের কাছে শহীদ জসীমের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।  

শহীদ জসীমের স্ত্রী শারমীন আক্তার বলেন, গত সোমবার রাতে সে আমাকে বলেছিল মাস দুয়েকের মধ্যে চলে আসবে। এত অল্প সময়ে তার চলে যাওয়া আমি সইতে পারছি না। শিশু দু’টিকে এতিম করে চিরবিদায় নিয়ে নিল। এতে ছোট বয়সে তারা বাবা হারা হয়ে গেল। আমি যেন শিশু দুটিকে যথাযথভাবে লালন করতে পারি সেজন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি। তিনি দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী স্বামীর মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহ-সভাপতি আবদুন নূর বলেন, শহীদ জসীমের পিতা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যেমন দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন। তেমনি জসীম বিদেশের মাটিতে প্রাণ বিসর্জন দিয়ে দেশের সুনাম বাড়িয়েছে। যা দেশের জন্য গর্বের বিষয়। এই শহীদের পরিবার যাতে সম্মানের সাথে বাঁচতে পারেন সেদিকে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। 

এ বিষয়ে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ.এইচ ইরফান উদ্দিন বলেন, মরদেহ আনার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.