সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) মাননীয় সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ এসব কথা বলেন। ‘The Paper Chase’ সিনেমাকে উদাহরণস্বরূপ টেনে বলেন, শিক্ষার্থীদের গ্রুপ স্টাডি তে আরো গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এগিয়ে যাওয়ার জন্য যোগাযোগের দক্ষতা, পরিচালনার দক্ষতা এবং নেতৃত্ব গুণাবলীসহ যেসকল গুণাবলী অর্জন করা প্রয়োজন তা এর মাধ্যমে তৈরি করতে হবে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের আত্মোন্নয়নে শিক্ষকদের অবদান রাখার অনেক জায়গা রয়েছে। কেননা বাংলাদেশে চাকরি পাওয়া খুব কঠিন। এইখানে দক্ষতা খুব প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নীতকরণে বিশ্ববিদ্যালয়েরও দায়িত্ব নিতে হবে। ক্যারিয়ার সেমিনার আয়োজন করা উচিত, তাতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় দিকের দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
তিনি গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘Privately managed Public university’ আখ্যা দিয়ে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি তার নামের প্রতি সুবিচার রেখেছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের মেম্বাররা যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক সুবিধা নেয় সেখান থেকে গণ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ন আলাদা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও পরিবেশ থেকে শুরু করে শিক্ষাকার্যক্রম পর্যন্ত পুরোটাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই। জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য এখানে ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সাইন্সেস অনুষদ রয়েছে। পাশাপাশি কৃষি অনুষদ ও ফিশারিজ অনুষদ অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় অ্যাকাডেমিক ভবনে আয়োজিত নবীনবরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন। শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশনা করা হয়। জাতীয় পতাকা ও বিশ্ব বিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) মাননীয় সদস্য প্রফেসর ড.বিশ্বজিত চন্দ ও অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) বেসরকারি বিশ্ববিদয়ালয় বিভাগের সম্মানিত পরিচালক মো.ওমর ফারুখ।
উক্ত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ এস তাসাদ্দেক আহমেদ। তিনি বলেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ শুধুমাত্র জনগণের জন্য। এই নামকরণের সাথে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পৃক্ততা রয়েছে। ইউজিসির সকল নির্দেশনা মেনে এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে। তাছাড়া এখানে খুবই স্বল্প খরচে নানা বিষয়ে পাঠদান করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে একটি তথ্যবহুল প্রেজেন্টেশন উপস্থাপনা করেন প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সিনিয়র সহকারী অধ্যাপক ড. মো. ফুয়াদ হোসেন।
সেখানে বাংলা বিভাগের নবীন ছাত্রী শারমিন আক্তার বলেন, আজ এই নবীন বরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বুঝতে পারছি যে এ বিশ্ববিদ্যালয় কত সংস্কৃতি মনা। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেক কিছু অর্জনের বাকি আছে এখনো।
বিশেষ অতিথি ও ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকেই তার নামের যথার্থতা বুঝা যায়। তথাকথিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা, এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই এখানকার পরিবেশ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে, দেশসেবায় নেতৃত্ব দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় যদি আইন ও বিধিবিধান মেনে চলে তবে যেকোনো বিশৃংখলা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে। সবশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করে উনি উনার বক্তব্য শেষ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যপক ডা. মো. আবুল হোসেন বলেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম ট্রাস্টি ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অসুস্থ তার জন্য এই অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত হতে পারেননি। আমরা তার সুস্থতা কামনা করছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিলাসিতা নেই যার কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো। আমাদের শুরু থেকেই ছয় মাসের সেমিস্টার পদ্ধতি আছে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মান অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও নেই।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা যদি তোমাদের জীবনের এই চারটি বছর কে কাজে লাগাতে পারো তবে জীবনে সাফল্য অর্জন করতে পারবে।
এরপর আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও বিভিন্ন বিভাগের ল্যাব পরিদর্শন করেন। সবশেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মধ্যে দিয়ে এই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
