ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে গত শনিবার মধ্যে রাত থেকে সোমবার মধ্যে রাত পর্যন্ত রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে বরিশাল নগরীর সিংহভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে বরিশাল নগরের সব সড়ক পানির নিচে চলে গেছে। ফলে গৃস্থবির হয়ে পড়েছে নগরবাসীর জীবনযাত্রা। নগরী ছাড়াও বিভাগের বিভিন্ন জেলার নিম্নাঞ্চলে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে নগরীর ৩০ টি ওয়ার্ডের লক্ষাধিক মানুষ। ফলে নগরবাসীর দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। সাথে বাড়ছে মানুষজনের ক্ষোভ। নগরবাসী অনেকেই বৃষ্টিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি কর্পোরেশনের অবহেলাকেই দায়ী করেছেন।
তবে গত সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকেল নগরীর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন বরিশাল সিটি মেয়র সেরিনয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, জলাবদ্ধতা দূর করতে হলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের নেওয়া খালের প্রকল্পগুলো অনুমোদন হওয়া প্রয়োজন। খালগুলো খনন করা প্রয়োজন। পরিষ্কার করে কোনো লাভ নেই, খালগুলোকে উদ্ধার এবং পুনঃখনন করে স্থায়ীভাবে সমাধান করা প্রয়োজন।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সরেজিমন দেখা গেছে, নগরীর সদর রোড, আগরপুর রোড, গোরস্থান রোড, কালুশাহ সড়ক, বটতলা, হাতেম আলী চৌমাথা, বাংলাবাজার, কলেজ অ্যাভিনিউ, কলেজ রো, ফকিরবাড়ি, কালীবাড়ি, ব্রাউন কম্পাউন্ড, বৈদ্যপাড়া, কাজীপাড়া, বগুরা রোড, কাউনিয়া, পলিটেকনিক সড়ক, বাংলাবাজার, আমানতগঞ্জ, পলাশপুর, রুপাতলী হাউজিং, কালিজিরা, নথুল্লাবাদ, নজরুল ইসলাম সড়ক, মেডিক্যাল কম্পাউন্ডসহ নগরীর অধিকাংশ এলাকায় এখনও হাঁটু পরিমাণ পানি জমে রয়েছে। তবে এরমধ্যে কিছু এলাকায় বাসাবাড়ি- দোকান পাটের মধ্যে পানি থৈ থৈ করছে। ফলে এসব এলাকার মানুষজনের ঘর থেকে বের কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
এদিকে, রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে যাওয়ায় মহাসড়ক ব্যতিত অন্যন্য সড়কে যানবাহন চলাচল করছে না। অনেক নিচু এলাকার বসতবাড়িতে পানি ঢুকেছে।
বরিশাল আবহাওয়া বিভাগের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক প্রণব কুমার বলেন, ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাত আরও দুই দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এর প্রভাবে চর ও নিম্নাঞ্চলগুলো স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পাঁচ-আট ফুট অধিক উচ্চতার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।