ঋতু বৈচিত্রে এখন রাতের শেষে হালকা হালকা কুয়াশা জানান দিচ্ছে। তাই প্রকিতিতে এসেছে শীতের আগমন বার্তা। আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস সংগ্রহের চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে গাছিরা খেজুর গাছ কাটার কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছে। শীতের আগমনে খেজুর রসের ঘ্রাণে অনেকেই মও হয়ে ওঠেন। গাছিদের পড়ন্ত বিকাল থেকে চলে গাছ পরিচর্যার কার্যক্রম আর কাক ডাকা ভোরে রস সংগ্রহ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গাছিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা এর মধ্যেই খেজুর গাছগুলোর পুরানো ডালপালা কেটে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছেন। আর মাত্র কদিন পরেই শুরু হবে খেজুরের রস সংগ্রহ করে সেই রস থেকে লালি ও গুড় তৈরির পর্ব শুরু হয়ে চলবে মাঘ মাস পর্যন্ত। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি চোখে পড়ছে প্রতিটি গ্রামে গ্রামে।জানা গেছে , গ্রামীণ জীবনের গাছিদের কাছে শীত আছে ভিন্ন মাত্রা নিয়ে। অনেক আশা এবং স্বপ্ন নিয়ে খেজুর গাছের সঙ্গে তাদের এই সময়টা কেটে যায়। দিনের বেশিরভাগ সময় পার হয় এই গাছ থেকে অন্য গাছে।
শীতের তীব্রতা দেখা না দিলেও এর মধ্যে উপজেলায় অনেকগাছি খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এলাকার গাছিদের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন গাছীরা। খেজুর গাছের মালিকদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন রস সংগ্রহের জন্য।
গাছেরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ও সড়কের আশেপাশের খেজুর গাছে এবার রস সংগ্রহ করবেন এবং গুড় তৈরি করবেন। গাছী আজাদ হোসেন বলেন খেজুর গাছ অল্প বয়স থেকে রস দেওয়া শুরু করে। ৩০-৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত রস দেয়। তবে গাছ যতই পুরনো হয় রস দেওয়া ততই কমে যায়, পুরানো গাছ রস কম দিলেও পুরানো গাছের রস গুলো খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়। মাঝ বয়সের গাছ থেকে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ রস পাওয়া যায়।
রসের ধারা চলতে থাকে মাঘ মাস পর্যন্ত। আবার শীতের সঙ্গে রস ঝরার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। শীত যত বেশি পরবে, গাছ থেকে রস তত বেশি ঝরবে। এতে রসের স্বাদ ও ততই মিষ্টি হবে অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ মাস হল রসের ভরা মৌসুম। স্থানভেদে একটি খেজুর গাছে মাসে ৩০-৪০ কেজি রস পাওয়া যাবে। খেজুর গাছ পরিষ্কার করার সময় আজাদ হোসেন বলেন শীতের শুরুতে রস পাওয়া গেলে দাম অনেক ভালো পাওয়া যায়। এইসময়টা সংসার চলে রস বিক্রি করে। গাছিরা বলেন খেজুর গাছ কাটতে সাধারণত হাসুয়া, দা,দড়ি লাগে।