× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

নির্ধারিত সময়ের পরও শেষ হয়নি স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ

ফেনী প্রতিনিধি

২৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৫:০৮ এএম । আপডেটঃ ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৮:৩৬ এএম

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার এক লাখ ১৫ হাজার মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স। ২০২৬ সালে ৩১ শয্যার এ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সটিকে ৫০ শয্যায় উন্নিত করনের লক্ষে নতুন ভবন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এরপর চার বছর পেরিয়ে গেলেও স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে উপজেলার পুরোনো মুন্সিরহাট বাজারে ৩১ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চালু হয়। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ রোগী এ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। গড়ে প্রতিদিন ২৫ জন রোগী ভর্তি থাকেন। তবে হাসপাতালে বেড-সংকটের কারণে রোগীদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ।

এদিকে রোগীর সংখ্যা বাড়লে হাসপাতালের বারান্দায় আশ্রয় নিতে হয় রোগীদের। বেড-সংকট নিরসনের জন্য ২০১৭ সালে ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী এক বছরের মধ্য ২০১৮ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো ৬০ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি নির্মাণের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান ঢালি কনস্ট্রাকশন।

এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও হয়নি একটি জটিল অস্ত্রোপচার কিংবা প্রসূতিদের সিজারিয়ান অপারেশন। টেকনিশিয়ানের অভাবে অচল হয়ে পড়ে আছে দুটি এক্স-রে যন্ত্র। নেই কোনো ডেন্টাল ল্যাব ও প্যাথলজি ল্যাব টেকনিশিয়ান। হাসপাতালের কয়েক বছর ধরে এক্স-রে টেকনিশিয়ান নেই।

ফলে স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের সচল এক্স-রে যন্ত্র দুটি বর্তমানে অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। দন্ত বিভাগে ১৫ বছর ধরে কোনো টেকনিশিয়ান নেই। প্যাথলজি ল্যাব টেকনিশিয়ান পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য। রোগীদের অতিপ্রয়োজনীয় এক্স-রে ও সাধারণ পরীক্ষাগুলো করার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে বা জেলা শহরে আসতে হয়। এতে রোগীদের যেমন ভোগান্তি পোহাতে হয়, তেমনি বেশি দামে খরচ করতে হচ্ছে।

স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স সূত্রে আরও জানা যায়, গত ১৭ বছরেও হাসপাতালে অবেদনবিদ (অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞ) এবং জরুরি চিকিৎসা কর্মকর্তার (ইএমও) পদ নেই। অবেদনবিদ ও জরুরি চিকিৎসা কর্মকর্তা না থাকায় হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থাকলেও তা অযত্নে পড়ে রয়েছে। ফলে সেটা জরুরি কিংবা প্রসূতি রোগীদের কোনো কাজে আসছে না। বর্তমানে হাসপাতেল সৃষ্ট ১৬ পদের মধ্যে ১৫ জন চিকিসৎক কর্মরত আছেন। দীর্ঘদিন ধরে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) পদটি শূণ্য পড়ে আছে।

চিকিৎসা নিতে আসা স্থানীয় নুর মোহাম্মদ নামে এক বাসিন্দা বলেন, এ হাসপাতালে একসময় চিকিৎসক ছিলেন পাঁচজন। এখন চিকিৎসক বেশি থাকলেও সবাইকে নিয়মিত পাওয়া যায় না। এক্স-রে, প্যাথলজিসহ অন্যান্য পরীক্ষাগুলা হাসপাতালে করতে পারলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হত। তবে জরুরি সেবা ও প্রয়োজনীয় প্রাথমিক ওষুধপত্র পাওয়ায় কিছুটা সন্তুষ্ট রোগীরা। নির্মাণকাজের অগ্রগতি বিষয়ে জানার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ঢালি কনস্ট্রাকশনের সত্বাধিকারী আবদুস সালাম ঢালির মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ বি এম মোজাম্মেল হক জানান, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হলে, টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেওয়া হলে ফুলগাজীতে স্বাস্থ্যসেবার মান আরও বাড়বে। ভবন নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করা ও টেকনিশিয়ান নিয়োগের জন্য জেলা সিভিল সার্জন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনো কোনো সমাধান মেলেনি।

ফেনী জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আলাউদ্দিন ভূঁইয়া বাপ্পি বলেন, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে ভবনটির নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে আশা করছি, ২০২২ সালের জুনের মধ্য কাজ শেষ হবে।

ফেনীর সিভিল সার্জন রফিক উস-সালেহীন বলেন, ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকটের বিষয়টি দীর্ঘদিনের সমস্যা। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। ভবনের কাজ দ্রুত শেষ করার বিষয়েও স্বাস্থ্য প্রকৌশল নোয়াখালী আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। আশা করি, দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.