× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

সাভারে তাজরীন ট্র্যাজেডির ১০ বছর, নিহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ

আশুলিয়া প্রতিনিধি

২৪ নভেম্বর ২০২২, ০১:৫৮ এএম । আপডেটঃ ২৪ নভেম্বর ২০২২, ০৫:৪১ এএম

আজ সাভারের তাজরীন ট্রাজেডি অগ্নিকাণ্ডের ১০ বছর অতিবাহিত হচ্ছে। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর  আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে কারখানাটির ১১৩ জন শ্রমিক আগুনে পুড়ে মারা যান। আর আহত হন কয়েক শ শ্রমিক। সেই দিনের  ভয়াবহতা ভুলতে পারেনি অগ্নিকাণ্ডে হতাহত শ্রমিক ও তাদের পরিবার। এখন তারা জীবনযাপন করছেন মানবেতর। দেশের ইতিহাসে শতাধিক শ্রমিক অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ট্রাজেডি এটাই প্রথম।সেই স্বজন হারানোর যন্ত্রণা নিয়ে আজকের এই দিনটি পালন করছে তাদের পরিবার। 

২৪ নভেম্বর মনে করিয়ে দেয় নিহতদের পরিবারের স্বজন হারানোর বেদনা। এই দিনে কেউ হারিয়েছে মাকে, বোনকে, বাবাকে কেউ বা আবার হারিয়েছেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে। এইদিন মনের অজান্তে কেঁদে ওঠে স্বজন হারানো মানুষগুলো। উপার্জনঅক্ষম মানুষগুলোই এখন তাদের পরিবারের বোঝা, কেউবা কোনোমতে চায়ের দোকান করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের জীবন যুদ্ধ। কেউবা চিকিৎসা করাতেই নামমাত্র ক্ষতিপূরণসহ শেষ করেছেন তাদের সর্বস্ব। আবার অনেকেই বঞ্চিত হয়েছেন ক্ষতিপূরণ থেকেও। তারা আজ ১০ বছর ধরে অপেক্ষায় আছেন ক্ষতিপূরণের আশায় আর প্রহর গুনছেন পুনর্বাসনের। আহত শ্রমিকরা সরকারসহ বিভিন্ন সংস্থা থেকে সাময়িক কিছু সহায়তা পেলেও পূর্ণাঙ্গ ক্ষতিপূরণ ও পূণর্বাসন পাননি। বহু পরিবার তাদের আয়ের একমাত্র মানুষ হারিয়ে ঘোর বিপদে পড়েছে।

তাজরীনে অগ্নিকাণ্ডের ১০ বছরে নিহত শ্রমিকদের স্বজন, আহত ব্যক্তি, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা কারখানার ফটকের সামনে সারাদিন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। আজ তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের ১০ বছর পার হতে চলছে। এখনো নিহত শ্রমিকদের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়নি। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। 

রেবা খাতুন ২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনের তিন-তলায় সুইং অপেরটর হিসেবে কাজ করতেন। তিনিও সেদিন আগুন লাগার কিছুক্ষণ পর তিন তলা থেকে লাফ দেন। সেই লাফ দিয়ে নিচে নামায় তার কোমরে হাড় ও পায়ে ব্যথা পান। সেই ব্যাথা নিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নেতাসহ পোশাক সংশ্লিষ্ট সকল দফতরে ক্ষতিপূরণ ও মালিকের বিচারের দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু কোনো দাবিও এখনো তাদের পূর্ণ হয়নি।কেউ তার পাশে দাড়িয়ে সাহায্যর হাতটি বাড়িয়ে দেননি। 

তিনি আরও বলেন, এই দশটা বছর কতো না জায়গায় গিয়েছি। শুধু বিদেশি কিছু সহায়তা ছাড়া আর কিছুই পায়নি। এখন যদি কোথায় আমাদের দাবি জানাতে যাই তাহলে নানা মহল থেকে চাপ আসে। এ যাবৎ লাখ খানেক টাকা সহায়তা পেয়েছি তবে সেটা ক্ষতিপূরণ না।এখন আমার একটাই চাওয়া আমার মালিকের বিচার চাই আমাদের ক্ষতিপূরণ চাই।  

আহত ও নিহত শ্রমিকদের স্বজনের নেতৃত্ব দেন শিল্পী রানী। তিনিও তাজরীন গার্মেন্টসের আগুনে পুড়ে যাওয়া ভুক্তভোগী একজন শ্রমিক। তিনি বলেন, আমরা কার কাছে কি বলবো। মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে পারি না। কথা বলতে গেলে পরে খুঁজে বের করে নানা চাপ দেয়। এ যাবৎকাল অনেক বলেছি কিন্তু কোনো প্রতিকার পায়নি। আজ এতোগুলো শ্রমিক মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আমাদের খোঁজ কে রাখে। আমাদের কোনো দাবি এখনো পূর্ণ হয়নি। সরকার তো পারে আমাদের তাজরীনের ভবনটি আমাদের জন্য কাজে লাগানোর।আমরা কিছু শ্রমিক তাহলে তো সেখানে থাকতে পারবো।  

বিল্পবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অরবিন্দু বেপারী বিন্দু বলেন,২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর তোবা গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডের ঐকারখানার মালিক দেলোয়ার হোসেনের সুপরিকল্পিতভাবে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ১১৩ জন শ্রমিককে হত্যা করেছে এবং আহত হয়েছে শতশত শ্রমিক। আমরা সেই ভয়াবহ দিনটির কথা স্বরন করে নিহতদের স্মরনে ফুল দেই এবং তাদের জন্য দোয়া করি।সর্বশেষ আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করি।আমরা চাই যে সকল পরিবার তাদের একমাত্র আয় করা মানুষটি কে হারিয়েছে তারা যেন তাদের ক্ষতিপুরন বুজে পায়।

গার্মেন্টস টেইলার্স ওয়ার্কাস লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাকিবুল ইসলাম সোহাগ বলেন, তাজরীন ট্রাজেডির আজ ১০ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তাজরীনের ভবন দানবের মতো দাড়িয়ে রয়েছে। এই অগ্নিকাণ্ডে যেসকল শ্রমিক নিহত ও আহত হয়েছিলো সেকল শ্রমিক এবং তাদের পরিবারকে এই ভবনে নতুন কোনো কারখানা অথবা হাসপাতাল বানিয়ে তাদেরকে পূণর্বাসন করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জোর দাবি গার্মেন্টস টেইলার্স ওয়ার্কাস লীগের। এতে করে আহত শ্রমিক তারা একটু হইলেও মাথা গোঁজার জায়গা পাবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.