× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

রামগঞ্জে শিক্ষকদের রমরমা কোচিং বাণিজ্য

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

২৪ নভেম্বর ২০২২, ০৪:৫৯ এএম

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোচিং বাণিজ্য বন্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা প্রয়োগ করার কথা থাকলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার মাসিমপুর এ.এল.এম উচ্চ বিদ্যালয়ে। ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকে ৯ম শ্রেনীর সব শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন বাধ্যতামূলক ভাবে কোচিং সেন্টারে পড়তে হয়। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে শুরু হয়ে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত চলে এই ক্লাস গ্রহণ। একদিকে ছেলে-মেয়ের কোচিংয়ের খরচ চালাতে গিয়ে অভিভাবকগণ হিমশিম খাচ্ছেন। আর অপরদিকে উপেক্ষিত হচ্ছে সরকারের নীতিমালা। 

উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ও তাদের পরামর্শে নীতিমালার ফাঁক-ফোকর দিয়ে প্রকাশ্যে প্রতিষ্ঠানের শ্রেণীকক্ষেই অতিরিক্ত ক্লাসের নামে কৌশলে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।  স্কুলের মাসিক বেতনের পাশাপাশি কোচিং ফি দিতে হয় শিক্ষার্থীদের এমনটাই অভিযোগ অভিভাবকদের। 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা ২০১২ অনুযায়ী , শুধুমাত্র অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময়ের পূর্বে অতিরিক্ত ক্লাশ নেয়া যাবে। সেক্ষেত্রে প্রতি ক্লাশে সর্বোচ্চ ৪০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারবে। এক বিষয়ে মাসে সর্বনিম্ম ১২ টি ক্লাস নিতে হবে।  উপজেলা পর্যায়ে প্রতি বিষয়ে ১৫০ টাকা অতিরিক্ত ক্লাশ ফি নেয়া যাবে।  শিক্ষক কর্তৃক কোন শিক্ষার্থীদের কোচিংএ বাধ্য করা যাবে না।

২৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৭.৩০ মিনিটে সরেজমিনে উপজেলার মাসিমপুর এ.এল.এম উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কোচিং-এ আসা শিক্ষার্থীরা স্কুল মাঠে, বারান্দায়, স্কুল ভবনের দোতলায় দাঁড়িয়ে আছে। এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্লাসের সবাইকে বাধ্যতামূলক কোচিং করতে হয়। কোচিং না করলে ক্লাসে স্যারেরা মারে। এবং পরিক্ষায় ফেল করানোর হুমকি দেয়। প্রতি মাসে জনপ্রতি ৬ষ্ঠ শ্রেনী দুইশত টাকা, ৭ম শ্রেনী তিনশত টাকা আর অন্যান্য শ্রেনীর চারশত টাকা হারে কোচিং ফি দিতে হয়। প্রতি ক্লাসে গড়ে ৬০- ৭০ জন ছাত্র- ছাত্রী রয়েছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

কয়েকজন অভিভাবকরা বলেন, অধিকাংশ সময় নিয়মিত শিক্ষকগণ তাদের রুটিন ক্লাসের সময় গল্পগুজবে মশগুল থাকেন। স্যারেরা ছেলে মেয়েদের বাধ্য করছে কোচিংএ। এমনিতেই দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতির কারনে সংসারের খরচ মিটিয়ে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ চালাতে কষ্ট হচ্ছে। এখন আবার কোচিং ফি ছাপিয়ে দিয়েছে শিক্ষকরা।শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাসে পাঠদান করলে কোচিং করতে হয়না শিক্ষার্থীদের। 

বিদ্যালয়টির কয়েকজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী বলেন, ভালোমন্দের বাছ-বিচার না করে ঢালাওভাবে ক্লাসের সব শিক্ষার্থীকে কোচিং করতে বাধ্য করা হচ্ছে।  এতে করে মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, নির্ভর হয়ে পড়ছে কোচিংয়ের উপর।  কোচিং-এ ঝুঁকে যাওয়ায় নিয়মিত পাঠদানে নিরুৎসাহিত হচ্ছে শিক্ষকরা।

ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী বলেন, প্রধান শিক্ষক স্কুলের প্রতিদিন ৭- ৮ শ শিক্ষার্থীদের কোচিং করাচ্ছেন। নিয়ম মোতাবেক কোচিং না চালালে আমরা বন্ধ করে দিব।

এব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক রাজিবুল হাসান কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। 

রামগঞ্জ মধুপুর ইউনিয়ন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ডিজির স্থানীয় প্রতিনিধি আবদুল আজিজ বলেন, শুধুমাত্র অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময়ের পূর্বে অতিরিক্ত ক্লাশ নেয়া যাবে। সেক্ষেত্রে প্রতি ক্লাসে সর্বোচ্চ ৪০ জন শিক্ষার্থীর বেশী কোনভাবেই  অংশগ্রহণ করতে পারে না। ৪০ জনের বেশী থাকলে নীতিমালা পরিপন্থী। 

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোনাজের রশিদ বলেন, কোচিং বন্ধ নীতিমালা অনুযায়ী কোচিং করাচ্ছে বিদ্যালয়টির শিক্ষকরা। অতিরিক্ত ক্লাসের বিধান জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মনে নেই, আপনারা নীতিমালা ভালো করে পড়ে দেখুন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও উম্মে হাবীবা মীরা বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধে নীতিমালা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.