নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নের আমবাগ খালের উপর নির্মিত ব্রিজটি অকেজো ঘোষণা করে নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য ভেঙে ফেলায় দূর্ভোগে পড়েছেন অর্ধ লক্ষাধিক বাসিন্দাসহ পর্যটকরা। ব্রিজ ভেঙে ফেলার দেড় বছর পরেও নতুন ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। ব্রিজটি ভেঙে ফেলার ফলে ওই এলাকার প্রায় ৬০ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে করে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের আমবাগ ব্রিজ নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) ২ কোটি ৪৬ লাখ ৪৮ হাজার টাকায় ব্যয়ে এ ব্রীজ নির্মাণ কাজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করে। এস সরকার নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এ ব্রীজের নির্মাণের কাজ পান। কাজ পাওয়ার পর থেকে ওই প্রতিষ্ঠান পুরানো ব্রীজটি ভেঙে ফেলে। পুরানো ব্রীজ ভেঙ্গে ফেলার দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এখনো পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। এমনকি ব্রিজ নির্মানের স্থলে বৈদ্যুতিক খুঁটি দুটিও অপসারন করা হয়নি। ব্রিজ না হওয়ায় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ঘুরতে আসা বাস,অটোরিকশা, টেম্পুসহ ছোট ছোট যানবাহনগুলোর যাত্রীরা নেমে পেছনে ধাক্কা দিয়ে বিকল্প সড়ক ওই ব্রিজ এর পাশ ঘেঁষে ঢালু পথ থেকে উঁচু সড়কে গাড়ি ওঠাতে সহায়তা করছেন।
বাংলার তাজমহল পরিচালক সিরাজউদৌল্লাহ উজ্জ্বল বলেন, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বয়সী পর্যটক প্রতিদিন এ বিনোদনকেন্দ্র গুলোতে এসে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। আমরা দ্রুত এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।
কাহেনা গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, আমবাগ ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলার এক বছর শেষ হলেও এখনো নির্মাণ কাজ শুরু হয়নি। ফলে এলাকাবাসীসহ পর্যটকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তদারকি না থাকায় এমন দুর্ভাগ্য হচ্ছে। দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের মাধ্যমে দুর্ভোগের মুক্তি পেতে চাই।
জামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া জানান, ব্রিজটি না থাকায় এলাকাবাসীর ও জনসাধারণের অনেক সমস্যায় আছেন। পরবর্তীতে স্থানীয় আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতা সাব-কন্ট্রাক্ট নিয়ে ব্রিজ ভেঙ্গে রট ও মাটি বিক্রি করে ফেলে। দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণ জরুরি।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এস সরকারের স্বত্বাধিকারী বুলবুল আহম্মেদ বলেন, ব্রিজ ভাঙ্গার পর পাইলিংয়ের জন্য সাব-কন্ট্রাক্ট দেওয়া হয়েছিল। ইতোমধ্যে পাইলিং কাজ শেষ হয়েছে। খালে পানি থাকায় কাজ শুরু করা যায়নি। তবে শীঘ্রই নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী আরজুরুল হক জানান, দীর্ঘ দিন যাবত ঠিকাদারের তালবাহানায় নির্মান কাজটি বন্ধ আছে। ঠিকাদারের সাথে আমরা যোগাযোগ করে শীঘ্রই কাজটি শুরু করার জন্য তাগিদ দিয়েছি। আগামী সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু না করলে তাদের টেন্ডার বাতিল করা হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজওয়ান-উল-ইসলাম জানান, আমবাগ ব্রীজ নির্মাণ শুরু না করায় ওই এলাকার দূর্ভোগের কথাটি শুনেছি। জনসাধারণের দুর্ভোগ যাতে না হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।