ঢাকার নবাবগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো শত বছরের ঐতিহ্যবাহী গরুর রশি ছেড়া দৌড় প্রতিযোগিতা।
আজ রবিবার বিকেলে উপজেলার নয়নশ্রী ইউনিয়নের বিলপল্লী সবুজ সংঘের চন্দ্রখোলা কালিমন্দির কমিটির আয়োজনে ও যন্ত্রাইল ইউনিয়নের চন্দ্রখোলা এলাকায় ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়
দোহার-নবাবগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জজেলা সহ আশেপাশের এলাকা থেকে নানা আকারের, নানা রঙের শতাধিক গরু নিয়ে আসেন সৌখিন প্রতিযোগিরা। এটা দেখতে ভিড় করে হাজারও নারী-পুরুষ।
প্রতিযোগিতা উপলক্ষে সেখানে বসেছিল দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলা। এ যেন হিন্দু, মুসলিম সববয়সী নারী-পুরুষের মিলনমেলা। কালের পরিক্রমায় অনেকটা হারিয়েই যেতে বসেছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য গরু দৌড় প্রতিযোগিতা।
হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে প্রতি বছরের মতো এবারও গরু দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বাংলা পঞ্জিকা হিসাবে পৌষ মাসের শেষের দিন এই উৎসব পালন করা হয়।
দুপুর ১টার পর থেকেই প্রতিযোগিতা দেখতে নানা বয়সী মানুষ দলে দলে ছুটে আসে। মুহূর্তে মাঠের চারপাশ ভরে যায়। অনুষ্ঠানস্থলকে ঘিরে বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য গ্রাম্য মেলা বসে।
মেলায় দোকানিরা খাবারের রকমারি পসরা সাজিয়ে বসেন। সেখানেও উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, মেলা উপলক্ষ্যে কয়েক দিন আগে থেকে আশপাশের বাড়িগুলোতে বাড়তে থাকে অতিথির সংখ্যা। তাদের আপ্যায়নের জন্য রকমারি পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়।
গ্রাম-বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী গরু দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন যুগ যুগ অব্যাহত থাকুক-এমন প্রত্যাশা সবার।
বিলপল্লী এলাকার শাকিল আহম্মেদ বলেন, ‘মেলা উপলক্ষ্যে কয়েক দিন আগে থেকে আশপাশের বাড়িগুলোতে বাড়তে থাকে অতিথির সংখ্যা। তাদের আপ্যায়নের জন্য রকমারি পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়’।
চন্দ্রখোলা কালি মন্দির কমিটির কর্মকর্তা বলরাম বেপারী জানান, দাদা, বাবাদের কাছ থেকে এ প্রথা শুনে আসছি। প্রথা অনুযায়ী মন্দির থেকে আনা গঙ্গা জল গুরুর গায়ে ছিটিয়ে পবিত্র করা হয়।
চন্দ্রখোলা কালি মন্দির কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রণজিত কুমার রায় জানান, প্রতিবছরই মেলা উপলক্ষে অনুষ্ঠানের কয়েক দিন আগে থেকে আশপাশের বাড়ি গুলোতে বাড়তে থাকে অতিথির সংখ্য।
অতিথিরা কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত অবস্থান করেন তাদের আপ্যায়নের জন্য রকমারি পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়।
বুয়ালি গ্রামের চুন্নু মিয়ার দীর্ঘকায় কালো রংয়ে গরু ও ভাওয়ালিয়া গ্রামের দরবেশ মাদবরের বিশালাকার গরু মাঠ জুড়ে দাপিয়ে দর্শকদের আনন্দ-বিনোদনের খোরাক জোগান।
বারুয়াখালী এলাকা থেকে গরু দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে আসা রাজিব হোসেন বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই এই মাঠে গরু দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে আসি।
এখনো টিকে আছে এই ঐতিহ্য। অনেক দিনের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্যই এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়’।