কিশোরগঞ্জে সর্বপ্রথম পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল ৬ই মার্চ। একাত্তরের ২রা মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হলেও কিশোরগঞ্জে সর্বপ্রথম পতাকা উত্তলন করেন হোসেনপুর উপজেলার চরজামাইল গ্রামের কামরুজ্জামান কমরু। হোসেনপুর হাইস্কুলে পড়ুয়া এ টগবগে তরুন সবসময় মেতে থাকতো মুক্তির নেশা নিয়ে।
জানাযায়, ২রা মার্চ ঢাকায় সর্বপ্রথম পতাকা উত্তোলন করার পর ছাত্রনেতা আলমগীর হোসেন (সাবেক এমপি) ঢাকা থেকে পতাকার ডিজাইন নিয়ে গোপনে তৎকালীন সাহসী ছাত্রনেতা কামরুজ্জামান কমরুকে দেন। এরপর কামরুজ্জামান কমরু কিশোরগঞ্জ শহরের রথখলার মর্ডান টেইলার্স এর মালিক ময়না খলিফাকে দিয়ে ১টি পতাকার ডিজাইন তৈরি করান। তৈরি শেষে ৬ই মার্চ সুপারি গাছ বেয়ে কালীবাড়ি মোড়ের জনৈক রঞ্জিত ঘোষের দোকানের ছাদে তিনি উত্তোলন করেন লাল সবুজের বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত স্বাধীন বাংলার পতাকা। তখন তার সাথে ছিলেন, মধু ঘোষ, পান দোকানদার মকবুল হোসেন এবং উল্কা হোটেলের কর্মচারী জনৈক মিস্ত্রি মিয়া।
মরহুম কামরুজ্জামান কমরু ছিলো কিশোরগঞ্জের অসীম সাহসী এক বীরমুক্তিযোদ্ধা। কিশোরগঞ্জে প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী হিসাবে তাকেই আখ্যায়িত করা হয়। ২৫ মার্চের গণহত্যার পর তিনি রনাঙ্গনে চলে গিয়েছিলেন। পাক-বাহিনীরা তাকে খুঁজে না পেয়ে তার নিরীহ বাবা নবী হোসেন ভূইয়াকে ধরে নিয়ে গিয়ে চালায় অমানবিক নির্যাতন। পরে জেলা সদরের শোলমারা বধ্যভূমিতে কামরুজ্জামান কমরু’র বাবার রক্তাত্ব লাশ খুঁজে পাওয়া যায় অন্যান্য শহিদদের পাশে।