× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

রংপুর অঞ্চলে বৃষ্টি নেই, চৌচির ফসলি জমি

রংপুর ব্যুরো

০৩ মে ২০২৩, ০৯:২৪ এএম

রংপুরে এবার এপ্রিল মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এপ্রিল কেটেছে প্রচণ্ড গরমের সাথে কাঠপোড়া রোদে। এক বছরের ব্যবধানে একই সময়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমেছে ১৪০ মিলিমিটারের বেশি। অথচ রংপুর অঞ্চলে এপ্রিলে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা ৮০ থেকে ৯০ মিলিমিটার।

বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে জলবায়ুর পরিবর্তন, জলাধারগুলো শুকিয়ে যাওয়া, দক্ষিণা বাতাসের সাথে জলীয় বাষ্প না আসা, অধিক হারে পরিবেশ দূষণকারী ইউক্লিপটাস গাছ রোপন, অবাধে বৃক্ষনিধন, কালবৈশাখী ঝড় না হওয়ায় প্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন হয়ে বৃষ্টিপাত কমে যাচ্ছে। ফলে প্রকৃতিতে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখি ও কৃষিতে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।

রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিলে রংপুর অঞ্চলে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা ৮০ থেকে ৯০ মিলিমিটার। সেখানে গত এক মাসে বৃষ্টি হয়েছে ৪৫ দশমিক ২ মিলিমিটার। স্বাভাবিকের অর্ধেক বৃষ্টিপাত হয়েছে। অপরদিকে গত বছরের এপ্রিলে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছিল।

গত বছর এপ্রিলে বৃষ্টিপাত হয়েছিল ১৭৯ মিলিমিটার। ওই মাসে গড়ে ১৫ দিন বৃষ্টিপাত হয়েছিল। এবারে মাত্র দুই দিন বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গত বছরের এপ্রিলে রংপুরে ৩৩ ডিগ্রি থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। এবার ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা উঠেছিল।

গত বছর শুধু অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতই নয়, দুবার ৭০ থেকে ৭৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে রংপুর অঞ্চলে। এবার ঝড়-বৃষ্টির দেখা নেই বললইে চলে। এদিকে বৃষ্টি না হওয়ায় খরতাপের কারণে অনেক স্থানের চাষিদের সেচ দিয়ে ফসল রক্ষা করতে হয়েছে। এতে কৃষকদের বাড়তি খরচের মুখোমুখি হতে হয়েছে।

রংপুরের কৃষি বিভাগ ও আবহাওয়া অফিস বলছে, এবার মৃদু দাবদাহ চলছে রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে। এপ্রিল মাসে তাপমাত্রা ২৮ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা-নামা করছে। বাংলা নতুন বছরের বৈশাখী মাস চলছে। এখনো ঝড়বৃষ্টির দেখা নেই, নেই কালো মেঘের ঘনঘটা। প্রখর রোদে চারদিক তপ্ত। এতে উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। প্রকৃতির এমন বিরূপ আচরণকে অশনি সংকেত বলছেন আবহাওয়াবিদরা।

খরা ও অনাবৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে রংপুরসহ বিভিন্ন জেলায় ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন হাজার হাজার কৃষকসহ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর রহমত কামনা করে হু হু করে কেঁদেছেন তারা। গেল কয়েক দিনে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও কাঙিক্ষত বৃষ্টিপাত হয়নি।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, তিস্তাসহ অন্যান্য নদ-নদী ও জলাধার শুকিয়ে যাওয়ায় উষ্ণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্পায়ন হওয়ায় আবহাওয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে। শুধু তাই নয়, কোথাও কোথাও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে আসছে চলতি শুষ্ক মৌসুমে রংপুরের মিঠাপুকুরে, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে শত শত নলকূপ থেকে পানি উঠছে না। কয়েক হাজার নলকূপে পানি উঠছে একেবারে কম। এতে বিপাকে পড়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।

আবহাওয়ার এমন পরিবর্তন উত্তরের কৃষির জন্য অশনি সংকেত হিসেবে দেখছেন রংপুর আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান। তিনি বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনসহ নানা কারণে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। স্বাভাবিক বৃষ্টি না হলে চাষাবাদে তিন ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েন কৃষক। প্রথমত সেচে বাড়তি খরচ, দ্বিতীয়ত ক্ষেতে আগাছা, রোগ বালাই ও পোকার আক্রমণ বেড়ে যায় এবং তৃতীয়ত উৎপাদিত ধানে ভালো মানের চাল পাওয়া যাবে না।  

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.