ষাটোর্ধ
আবদুল অজিজ। ৩৪ বছর ধরে চিতই পিঠাই বিক্রি করেছেন। দীর্ঘ সময় পিঠা বিক্রি করে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে পারেননি। পৈত্রিক সাড়ে আঠারো শতাংশ জমিই জীবনের শেষ ভরসা। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হতাশ হয়ে পড়েছেন। কিভাবে চলবে সংসারের চাকা!
আবদুল
আজিজ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইনিয়নের গাড়ারণ গ্রামের মৃত রফিজ উদ্দিনের ছেলে।
অজিজ
জানান, অভাবের সংসারে জন্ম তার। শৈশবেই বাবার সাথে লাকড়ী বিক্রি করতেন। প্রথম শ্রেণীর গন্ডি পার হতে পারেননি। বিয়ে করেন ৩৪বছর আগে। নব বধুকে নিয়ে
হতাস ছিলেন তিনি। কি করে চলবে
সংসার। এক বন্ধুর পরামর্শে
চিতই পিঠা বিক্রি শুরু করেন। সেই থেকেই পিঠা বিক্রি শুরু আজিজের শ্রীপুর বাজারে রেলওয়ের এক খন্ড জমিতে
ছাপড়ায় দোকান। চৌত্রিশ বছড় ধরে এক মাত্র চিতই
পিঠাই বিক্রি করেন তিনি। তাকে অনুসরণ করে অনেকই
এখন চিতই পিঠা বিত্রেতা।
তিনি
বলেন, সব শ্রেণীর মানুষ
তার খরিদদার। এখন বাড়িতে তেমন কেউ পিঠা তৈরি করেন না। শীতকালে বিক্রি ভাল হয়। দিনে প্রায় ১০ থেকে ১২ কেজি
চালের পিঠা বক্রি করতে পারেন। গরমের দিনে বিক্রি নেমে আসে পাঁচ থেকে ছয় কেজিতে। শীতকালে
দৈনিক ছয়শ’ টাকা পরর্যন্ত টাকা
লাভ হলেও গরমকালে তা
নেমে আসে অর্ধেকে।
তিনি
আরও বলেন, দীর্ঘ সময় পিঠা বিক্রি করে কোন রকমে পেট চালিয়েছেন। দুই ছেলে তিন মেয়ের সংসার। আক্ষেপ পিঠা বিক্রেতার মেয়ে বলে গরিব ঘড়ে বিয়ে দিতে হয়েছে তিন মেয়েকেই। নিজে লেখাপড়া করতে পারেননি।
তার বড়
ছেলে শাকিল শ্রীপুর সরকারী মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী ডিগ্রি কলেজের বিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার সংসারে হাল ধরতে চাকুরি করে পোষাক কারখানায়। ছোট ছেলে শাহাদাত স্থানীয় মোহাম্মদ আলী এ্যাকাডেমির সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে। এখন বয়সের কারণে এক বেলা দোকান
করেন আজিজ। তাতে তার জীবযাপন কষ্ট সাধ্য হয়ে পরেছে। কেউ তার দিকে সহায়তার হাত বাড়ায় না । জীবন সায়াহ্নে
এসে অসহায় হয়ে পড়ছেন আজিজ। জীবনে কি করলেন এটা
ভেবেই কেঁদে উঠেন। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে চোখ তার ছানাবড়া।