আন্তর্জাতিক
রুটে উড়োজাহাজে ভ্রমণের ভাড়া নিয়ে প্রায় এক বছর ধরে
যে নৈরাজ্য চলছে, তার অবসানে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। ভারত, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ এবং ইউরোপের সব রুটে বিমান
সংস্থাগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে কয়েকগুণ ভাড়া আদায় করছে। এর ফলে চরম
দুর্ভোগে পড়েছেন জরুরি কাজে বিদেশগামী যাত্রীরা। জরুরি চিকিৎসার উদ্দেশে দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ ভারত ভ্রমণে যান।
কিন্তু
বর্তমানে ভিসার শর্ত হিসাবে শুধু আকাশপথে যাত্রার কথা উল্লেখ থাকায় বাস বা ট্রেনে যাওয়ার
সুযোগ নেই। এ অবস্থায় বিভিন্ন
বিমান সংস্থার টিকিটের দাম পড়ছে ক্ষেত্রবিশেষে ৮/১০ গুণ
বেশি, যা সাধারণ চিকিৎসাপ্রার্থী
বা শিক্ষার্থীদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। অনেক ক্ষেত্রে কাক্সিক্ষত তারিখের টিকিটই মিলছে না। একই কারণে বিপাকে পড়েছেন মধ্যপ্রাচ্যগামী শ্রমিক ও ওমরাহ যাত্রীরা।
ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন অন্যান্য রুটের যাত্রীরাও। জরুরি প্রয়োজনেও অনেকেই যেতে পারছেন না নির্ধারিত গন্তব্যে।
এ যুগে এমন পরিস্থিতি অকল্পনীয়।
টিকিট সংকট বা অস্বাভাবিক ভাড়া
বৃদ্ধির কারণ হিসাবে বিমান সংস্থাগুলো যেসব ব্যাখ্যা দিচ্ছে, তা খোঁড়া যুক্তি
বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অভিযোগ আছে, একটি অসাধু চক্র কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে উড়োজাহাজের ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। হাতিয়ে নেয় শত শত কোটি
টাকা। জানা যায়, আশপাশের কোনো দেশে এভাবে উড়োজাহাজের ভাড়া বাড়েনি। ভাড়া বেড়েছে শুধু ঢাকা থেকে বিদেশগামী যাত্রীদের। এর ফলে চরমভাবে
লঙ্ঘিত হচ্ছে যাত্রীস্বার্থ।
এক্ষেত্রে
সরকারের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করি আমরা। জানা যায়, খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আকাশপথের ভাড়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার অনুরোধ করেছেন। অসংখ্য বিদেশগামী যাত্রীরও একই অনুরোধ। আমাদের প্রত্যাশা, প্রধানমন্ত্রী দ্রুত এদিকে দৃষ্টি দেবেন। আকাশপথে ভাড়া নিয়ে বাস্তবে কী ঘটছে, কাদের
কারণে সৃষ্টি হয়েছে এ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি-আমরা মনে করি অবিলম্বে এসবের তদন্ত হওয়া উচিত।
একটি
স্বাধীন দেশের নাগরিকরা জরুরি প্রয়োজনেও ভাড়া নৈরাজ্যের কারণে বিদেশ যেতে পারবেন না বা টিকিট
সংগ্রহে দুর্ভোগের শিকার হবেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না।
বস্তুত
টিকিটের দাম নির্ধারণ ও বুকিং পদ্ধতিতে
আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকা
দরকার। এ ক্ষেত্রে একটি
সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা জরুরি।