× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

বিদ্যুতের দাম বাড়ানো এখন ঠিক নয়

সম্পাদকীয়

২২ মে ২০২২, ১৪:৩৩ পিএম

প্রতীকী ছবি

বিশ্বব্যাপী করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দামামায় দেশে দেশে দেখা দিয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। ফলে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে জনজীবনে অস্থির করে তুলেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়াবার প্রস্তাব মড়ার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে দেখা দিয়েছে। দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধাচার করছে এবং বলছে, বিদ্যুৎ খাতের সর্বত্র অদক্ষতা, যথেষ্ট অনিয়ম ও অস্বচ্ছতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের আমূল সংস্কার দরকার।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। কমিশন গঠিত কারিগরি কমিটি বিদ্যুৎ এর দাম পাইকারি পর্যায়ে গড়ে ৫৮ শতাংশ বাড়ানের সুপারিশ করেছ। এর আগে গত মার্চে গ্যাসের দাম ভোক্তা পর্যায়ে গড়ে ২০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। গণ শুনানিতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর তীব্র বিরোধীতা করে ব্যবসায়ী ও ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলো। এবার গত ২১ মে বাংলাদেশ শিল্প ও বনিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) সংবাদ সম্মেলন করে এ প্রস্তাবের বিপক্ষে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে। সংগঠনের সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন বলেন, অলস বিদ্যুৎ কেন্দ্র জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে অব্যাহত রাখা হয়েছে। প্রায় হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অকার্যকর অবস্থায় পড়ে থাকার পরও জ্বালানি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বেশি চালানো হচ্ছে। একে ভূল পরিকল্পনা বলে অভিহিত করে বলা হয়, ভূল পরিকল্পনার জন্য ক্ষতি শিল্পখাত বহন করতে পারে না। জ্বালানি তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের কারণে দাম বেড়েছে, যা মোটেই কাম্য নয়। শুধুমাত্র পিক আওয়ারে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানো যেতে পারে। পাওয়ার সেল বলছে, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট। বিপরীতে সর্বোচ্চ উৎপাদন ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট (গত ১৬ এপ্রিল)। চুক্তি অনুসারে বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো উৎপাদন না করলেও ভাড়া দিতে হবে। গত এক দশক ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি দিতে হয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ভাড়া বাবদ। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) গত মার্চে এক পর্যলোচনা প্রতিবেদনে বলেছে, সরকারি বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র আনতে না পারায় বেসকারি খাতে স্বল্প মেয়াদের ভাড়া ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র মেয়াদ শেষেও চালু রাখতে হয়েছে। ৯২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এমন ১২টি স্বল্প মেয়াদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখনো চালু আছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য বলছে, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত সাড়ে ১৩ বছর বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১০ বার। আর গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে ৭ বার। ২০০৯ সালে দুই চুলার গ্যাসের বিল ছিল ৪০০ টাকা, যা এখন ৯৭৫ টাকা। এ দর বাড়াবারও প্রক্রিয়া চলছে।

এদিকে মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি বা নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেই ২২ মে থেকে ভারতে ডিজেল ও পেট্রোলের ওপর থেকে শুল্ক কমাবার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ৭ রুপি ও পেট্রোল সাড়ে ৯ রুপি কমানো হচ্ছে। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের পাশাপাশি 'উজ্জ্বলা যোজন সুবিধার আওতায় উজ্জ্বলা গ্যাস সিলিন্ডারে ২০০ রুপি করে ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। অথচ বাংলাদেশ সরকার জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা না করে পণ্যের দাম বাড়ছে। জনমনে অসন্তোস বাড়ছে। তাই সরকার যাতে প্রস্তাবিত বিদ্যুতের দাম বাড়াবার প্রস্তাবে বেকায়দায় না পড়ে সেদিকে নজর দিতে হবে। ভর্তুকি দিয়ে হলেও জনগণের জীবন যাত্রায় শান্তির সুবাতাস বইতে হবে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.