বাবার মৃত্যুর খবর শুনে মারা গেছে তার ১১ বছর বয়সী মেয়ে। মূলত বাবার মৃত্যুর শোকে ব্যথিত হয়ে ১০ ঘণ্টা পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমায় সে। দুঃখজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে।
বাবার মৃত্যুর শোকে মারা যাওয়া ওই মেয়ের নাম হালা। সোমবার (৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সৌদি গেজেট। এতে বলা হয়েছে, বাবার মৃত্যুর খবর শুনে ১১ বছর বয়সী মেয়ে হালা ভেঙে পড়ে এবং ১০ ঘণ্টা পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
অন্যদিকে দুবাইভিত্তিক আরবি ভাষার আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল আল আরাবিয়া জানিয়েছে, সৌদি আরবের দক্ষিণ আসির অঞ্চলের মাজারিদাহ অঞ্চলে এই ঘটনা ঘটেছে এবং সেখানকার লোকেরা মৃত পিতা ও মেয়ের জানাজা একসঙ্গে আদায় করেছে।
হালার চাচা আহমেদ হামজা আল-ওদাইকি বলেছেন, ১১ বছর বয়সী হালা তার বাবার সাথে খুব বেশি সংযুক্ত ছিলেন। বিশেষ করে মায়ের অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর পর থেকে বাবার ওপর হালার এই নির্ভরশীলতা অনেক বেশি বেড়ে যায়।
সৌদি গেজেট জানিয়েছে, মাজারিদাহের একটি স্কুলে ল্যাবরেটরি সহকারী হিসেবে কাজ করতেন হালার বাবা। এবং সে তার বাবার সাথেই বসবাস করতো। বাবা যেখানেই যেত হালা তার সঙ্গে যেতেন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, অসুস্থতার কারণে যখন তার বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তখন থেকে হালা তার বাবার আরোগ্য লাভের জন্য আন্তরিক প্রার্থনায় তার বিছানার কাছে সময় কাটিয়েছেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তার বাবাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয় এবং এরপরই হালাকে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়।
এরপর যখন সে হাসপাতালে তার বাবার মৃত্যুর খবর শোনে, তখন সঙ্গে সঙ্গেই হালা ভেঙে পড়েন এবং তাকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু তাকে পুনরুজ্জীবিত করার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় এবং হাসপাতালে নেওয়ার ১০ ঘণ্টার মধ্যেই সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
আল-ওদাইকি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, রক্ত স্বল্পতায় ভোগা এই শিশুটি তার বাবার মৃত্যুর খবর শুনে শকের শিকার হয়। কারণ নিজের বাবাকে হারানোর এই অপ্রত্যাশিত ক্ষতি সে সহ্য করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, তারা মৃত বাবা ও মেয়ে উভয়ের জানাজা একত্রে আদায় করেছেন এবং তাদের একটি গাড়িতে করে কবরস্থানে নেওয়া হয় এবং পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়।