কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের কোরিয়াটাউনে একটি কোরিয়ান মালিকানাধীন সেলুনে তিন কোরিয়ান মহিলাকে গুলি করা হয়। পুলিশ এটিকে একটি ঘৃণামূলক অপরাধ হিসাবে তদন্ত করছে। এই অঞ্চলে এশিয়ান মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এর আগে সংঘটিত অন্য দুটি শুটিংয়ের সাথে এই গোলাগুলির সম্পর্ক থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছর আটলান্টা গণহত্যার পর থেকে এশীয় বিরোধী সহিংসতা এবং বর্ণবাদ বেড়েই চলছে। আটলান্টা সহিংসতায় আটজন নিহত হয়েছিল যাদের মধ্যে ছয়জন ছিল এশিয়ান আমেরিকান নারী।
মার্কিন একটি জাতীয় সমীক্ষা অনুসারে, মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে এশিয়ান-বিরোধী ঘৃণামূলক অপরাধ বেড়েছে। ২০২১ সালে ৬ জনের মধ্যে ১ জন এশিয়ান আমেরিকান ঘৃণামূলক অপরাধের সম্মুখীন হয়েছেন। ২০২০ সালে এটি ছিল ৮ জনেরর মধ্যে ১ জন। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সংখ্যাটি ইতিমধ্যে ১২ এর মধ্যে মধ্যে ১ এ পৌঁছেছে। এশিয়ান-বিরোধী বর্ণবাদ বৃদ্ধির কারণে এই প্রবণতা ক্রমাগত বাড়ছে।
২০২২ সালের স্ট্যাটাস ইনডেক্স থেকে জানা যায়, প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ আমেরিকান বিশ্বাস করে যে এশিয়ান আমেরিকানরা অন্তত আংশিকভাবে কোভিড-১৯ এর জন্য দায়ী। অনেক মার্কিনি করোনভাইরাসটিকে "চীনা ভাইরাস" এবং "উহান ভাইরাস" হিসাবে উল্লেখ করা উপযুক্ত। এছাড়া ৩ জনের মধ্যে ১ জন বিশ্বাস করে যে এশিয়ান আমেরিকানরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে তাদের জন্মের দেশের প্রতি বেশি অনুগত।
শুধুমাত্র গত বছরে, ১০ জনের মধ্যে ১ জন এশিয়ান আমেরিকানের উপর কাশি বা থুথু দেওয়া হয়েছে এবং প্রায় ৩ জনের মধ্যে ১ জনকে নিজের দেশে ফেরত যেতে বলা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন যেভাবে এশিয়ান বিরোধী ঘৃণা ছড়িয়েছে সেটা ক্রমাগত বাড়ছে বৈ কমছে না।
জানা যায়, ৫৮% মার্কিনি একজন বিশিষ্ট এশিয়ান আমেরিকান ব্যক্তির নাম বলতে পারে না এবং ৪২% নাগিরিক এশিয়ান আমেরিকানদের সাথে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা বা নীতির কথা ভাবতে পারে না।
১৯৯২ এবং ২০১৮ সালের মধ্যে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ এশিয়ান আমেরিকান এবং প্যাসিফিক দ্বীপবাসীদের উপর গবেষণার জন্য বাজেটের মাত্র ০.১৭% বিনিয়োগ করেছে।
মার্কিন স্কুলগুলোতে এশীয় আমেরিকান বিষয়বস্তু তেমন পড়ানো হয় না বলেই চলে। তবে গত বছর ইলিনয় রাজ্যের স্কুলে এশিয়ান আমেরিকান ইতিহাস পড়ানোর উপর জোর দেওয়া হয়। এরপর নিউ জার্সিও এই পথে হাটে।