রাশিয়া-ইউক্রেন রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ থামার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। রুশ সেনাদের আক্রমণে কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন। এই উত্তেজনার মধ্যে রাশিয়াকে সহায়তা করতে ইউক্রেনের উদ্দেশে রওনা হয়েছে এক হাজার চেচেন যোদ্ধা—এমনটাই জানিয়েছেন পুতিনের ঘনিষ্ঠ চেচেন রিপাবলিকের প্রধান রমজান কাদিরভ।
চেচনিয়া রাশিয়ারই একটি অংশ। প্রথম ও দ্বিতীয় চেচেন যুদ্ধের পর থেকেই মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাটিতে নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ ভ্লাদিমির পুতিনের। চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ রুশ প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ মিত্র। তিনি গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, চেচেন রিপাবলিকের এক হাজার স্বেচ্ছাসেবক ইউক্রেনে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছেন। আলাউদিনভ নামের একজন চেচেন নেতা এ বিশেষ অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এদিকে গতকাল শুক্রবার পশ্চিম ইউক্রেনের লিভিভ বিমানবন্দরের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। চেরনিহিভ শহরের মেয়র গতকাল জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হামলায় ৫৩ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার মারিউপোলের থিয়েটারে বোমা হামলার পর এখনো উদ্ধারকাজ চলছে।
এদিকে আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রমজান কাদিরভ দাবি করেছেন, তিনি রাশিয়ান বাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত চেচেন সেনাদের সঙ্গে দেখা করতে ইউক্রেন গিয়েছিলেন। চেচনিয়ার টেলিভিশন চ্যানেল গ্রোজনি গত রোববার তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রাম চ্যানেলে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ওই পোস্টে কাদিরভকে সামরিক পোশাকে একটি অন্ধকার ঘরে চেচেন সেনাদের সঙ্গে সামরিক অভিযান নিয়ে আলোচনা করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে যে ওই এলাকা ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে ৭ কিলোমিটার (৪ দশমিক ৩ মাইল) দূরে ছিল।
বার্তা সংস্থা এএফপির মতে, কাদিরভ একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেই ভিডিওর এক বার্তায় তিনি বলেছেন, কিয়েভের কাছের একটি বিমানঘাঁটি হোস্টোমেলে থাকার সময়ে গুলি করা হয়েছিল। এ বিমানঘাঁটি রাশিয়ান সেনারা আক্রমণ শুরুর প্রথম দিনেই দখলে নিয়েছিলেন।
তবে আল–জাজিরা কাদিরভের দাবিটি যাচাই করতে পারেনি। ভিডিও বার্তায় কাদিরভ বলেছেন, ‘কয়েক দিন আগে আমরা কিয়েভ থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ছিলাম। এখন আমরা আরও কাছাকাছি আছি।’ তিনি ইউক্রেনের সেনাসদস্যদের প্রতি আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘না হলে আপনারা শেষ হয়ে যাবেন।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গত সোমবার বলেছিলেন, রমজান কাদিরভ ইউক্রেনে ছিলেন কি না, সে সম্পর্কে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। পেসকভ সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি (কাদিরভ), আমার মতে, সরাসরি দাবি করেননি যে ইউক্রেনে ছিলেন। কোনো সরাসরি বিবৃতি ছিল না, তাই আমি আপনাদের চেচনিয়ার প্রজাতন্ত্রের প্রধানের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলছি।’