ইউক্রেন নিজেই নিজের নাগরিকদের ওপর হামলা ও গোলাবর্ষণ করছে বলে অভিযোগ করেছে রাশিয়া। দেশটির দাবি, ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসনে ইউক্রেনীয় বাহিনীর গোলাবর্ষণে নিজস্ব বেসামরিক নাগরিক নিহত ও আহত হয়েছেন।
এদিকে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী মারিউপোলে ইউক্রেনীয় যোদ্ধাদের প্রতিরোধের শেষ প্রধান ঘাঁটি ইস্পাত কারখানা থেকে বেশ কিছু বেসামরিক নাগরিক বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন
এছাড়া ইউক্রেনের প্রতি সংহতি জানাতে কিয়েভ সফরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। রোববার (১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
রোববার এক প্রতিবেদনে রুশ বার্তাসংস্থ আরআইএ জানিয়েছে, খেরসন অঞ্চলের কিসেলিভকা ও শায়রোকা বলকা গ্রামে একটি স্কুল, কিন্ডারগার্টেন এবং কবরস্থানে গোলাবর্ষণের জন্য ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। রুশ এই মন্ত্রণালয় অবশ্য এর বেশি আর কোনো তথ্য দেয়নি।
এছাড়া মস্কোর এই বক্তব্যের বিষয়ে ইউক্রেন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি এবং রয়টার্সও স্বাধীনভাবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই দাবিটি যাচাই করতে পারেনি। এদিকে রোববার ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, রুশ বাহিনী খেরসনের প্রশাসনিক সীমানা ভেঙে মাইকোলাইভ এবং ক্রিভি রিহ শহরে হামলার পথ প্রস্তুত করার জন্য লড়াই করছে।
অন্যদিকে মারিউপোলে গত ২১ এপ্রিল নিজেদের বিজয় ঘোষণা করেছিল রাশিয়া। যদিও সেসময় শত শত ইউক্রেনীয় সেনা ও বেসামরিক মানুষ আজভস্টাল স্টিল কারখানার ভেতরে আটকে ছিল। শনিবার কারখানার ভেতরে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা জানায়, কারখানার ভেতরে আটকে থাকা ২০ জন নারী ও শিশু সেখান থেকে বের হতে সক্ষম হয়েছেন।
ভায়াটোস্লাভ পালামার নামে ইউক্রেনীয় এক যোদ্ধা কারখানার ভেতর থেকে জানান, ‘আমরা দড়ি দিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করছি। বের করে আনা ব্যক্তিদের সবাই বয়স্ক মানুষ, নারী ও শিশু।’
পালামার বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন স্থানীয় একটি যুদ্ধবিরতি মেনে চলছে এবং তার আশা, সরিয়ে নেওয়া বেসামরিক নাগরিকদের উত্তর-পশ্চিমে জাপোরিঝিয়া শহরে নিয়ে যাওয়া হবে। অবশ্য আজভস্টাল স্টিল কারখানা থেকে ইতোপূর্বে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানানো জাতিসংঘ অথবা রাশিয়া সেখান থেকে ২০ জনকে বের করে আনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন প্রদর্শনে কিয়েভ সফরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। পরে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে টুইটারে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে কথা বলেন তিনি।
সেখানে পেলোসি বলেন, ‘স্বাধীনতার জন্য আপনারা যে লড়াই করছেন সেটির জন্য ধন্যবাদ জানাতে আমরা আপনাদের দেখতে এসেছি... আপনাদের লড়াই আমাদের সবার জন্য লড়াই। লড়াই শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা আপনাদের সাথে থাকবো এবং এটিই আমাদের প্রতিশ্রুতি।’