এক গ্রামে একটা খুব সুন্দর নাদুস-নুদুস মোরগ ছিল। মোরগটার মাথায় একটা লালঝুঁটিঁও ছিল। প্রায় সময়ই সে বড়দের সাথে চলার চিন্তাভাবনা করত, নিজের স্বজাতিদের সাথে চলতে চাইত না। একদিন লাল ঝুঁটিওয়ালা মোরগটা বিশাল হৃদপুষ্ট ষাঁড়ের সাথে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। একসময় মোরগ ওই ষাঁড়কে তার আশার কথা বলল, ইস! আমি যদি ওই গাছের মাথায় উঠতে পারতাম তাহলে আমার খুব আনন্দ লাগত, নিজের জীবনকে স্বার্থক মনে করতাম। সেই কথা শুনে ষাঁড়টা সহানুভূতির সুরে বলল, কিন্তু তোমার তো সেই শক্তি নেই!
মোরগটা মাথা নিচু করে বসে রইল। মোটাতাজা ষাঁড়টা এবার তাকে পরামর্শ দিল, তুমি বরং আমার গোবর খাও না কেন? এগুলাতে অনেক পুষ্টি। দেখো না, গোবর মাটিতে দিলে গাছ কত দ্রুত বড় হয়ে যায় । গাাছ শক্তি পায় বলেই তো এত তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠে। শক্তি হলে তুমিও উড়ে গাছে উঠতে পারবে।
মোরগের চোখ খুশিতে জ্বলজ্বল করে উঠল। মোরগ পরীক্ষা করার জন্য, কিছু গোবর খুঁটে খেয়ে নিল। খেয়ে দেখল, অতটা মন্দ না। মোরগ ভাবল, গোবর খেয়ে তার মাঝে বল অর্থাৎ শক্তির সঞ্চার হয়েছে।
মোরগ ডানা ঝাঁপটিয়ে গাছের উপরের ডালে উড়ার চেষ্টা করল এবং গাছের সবচেয়ে নিচের ডালটায় এখন সে উঠতে পারল। মোরগ ভাবল, ষাঁড়ের পরামর্শ খুব কাজের।
পরদিন থেকে মোরগটা নিয়মিত গোবর খেতে শুরু করে। সেদিন মোরগটা একটু বেশি করেই গোবর খেল।
খাওয়ার পর অনেক্ষণ চেষ্টা করে দেখল, সে উঁচু গাছটার দ্বিতীয় ডালে উঠতে সক্ষম হয়েছে।
মোরগটা প্রতিদিন এরকম আরো গোবর খাওয়ার চর্চা করতে থাকে। এক সপ্তাহ পর মোরগ গর্বের সঙ্গে গাছের একদম উপরের ডালে চড়ে বসে। এদিকে, সে ষাঁড়কে গর্ব করে বলে ; মাটিতে থাকার চেয়ে গাছের ডালে থাকার স্বাদ অনেক। মোরগটা পূর্বের কথা সব ভুলে যায়। এদিকে, গাছের এত
উপরের ডালে বসে থাকা মোরগকে দেখে এক শিকারী পাখি মনে করে গুলি করে মোরগটাকে মেরে ফেলে ।
গল্পের উপদেশ মন্দ জিনিষ কখনোই ভালো কিছু বয়ে আনে না। অহংকার সবসময় পতনের মূল। চেষ্টাই হচ্ছে সফলতার চাবিকাঠি।