× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

আত্মস্বীকৃত ‘আলবদর কমান্ডার’ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আমিনুল গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৩ জুলাই ২০২২, ০৯:২৪ এএম

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আমিনুল হককে আজ রোববার কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে হাজির করা হয়

যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি কে এম আমিনুল হক ওরফে রজব আলীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল শনিবার রাতে রাজধানীর কলাবাগান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আমিনুল হকের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ৭টি অভিযোগ করা হয়। ২০১৬ সালের ১৮ মে ট্রাইব্যুনাল তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

আজ রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর আমিনুল হক রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন। এর পর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে র‍্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-২–এর একটি দল তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

খন্দকার আল মঈন বলেন, আমিনুল ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জ এলাকায় নিরীহ মুক্তিকামী মানুষকে হত্যাসহ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর হিসেবে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত গণহত্যা, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন। তিনি ভৈরবে একটি কলেজে অধ্যয়নকালে পাকিস্তান ইসলামি ছাত্রসংঘের কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন।

খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ভৈরবে পাকিস্তানি সেনা ক্যাম্পে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে এলাকায় ‘আলবদর’ বাহিনী গঠন করেন। কিশোরগঞ্জ জেলার কমান্ডার হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে হবিগঞ্জের লাখাই থানার কৃষ্ণপুর, গদাইনগর ও চণ্ডীপুর গ্রামে এবং কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থানার সদানগর ও সাবিয়ানগর গ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানার ফান্দাউক এলাকায় গণহত্যা, লুটপাট ও নির্যাতন করেন। এ ছাড়া স্বাধীনতাকামী নিরীহ বাঙালিদের অপহরণ করে রাজাকার ক্যাম্পের টর্চার সেলে নির্যাতন করে হত্যা করেন।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, আমিনুল ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। ১৯৭২ সালে তাঁর বিরুদ্ধে অষ্টগ্রাম থানায় দালাল আইনে তিনটি মামলা হয়। ওইসব মামলায় তাঁর ৪০ বছর সাজা হয়। কিন্তু রাষ্ট্রপতির বিশেষ ক্ষমায় মাত্র ১০ বছর সাজা ভোগ করে ১৯৮১ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। ১৯৯৭ সালে তিনি এলাকা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন।

র‍্যাবের মুখপাত্র বলেন, ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ করা হলে আমিনুল আত্মগোপনে চলে যান। তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে রাজধানীর ধানমন্ডি, কলাবাগানসহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিকবার বাসা পরিবর্তন করেন। তিনি সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়াও তাঁর পরিচয় প্রকাশ পেতে পারে, এমন জনসমাগম এড়িয়ে চলতেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমিনুল ‘আমি আলবদর বলছি’ ও ‘দুই পলাশী দুই মীরজাফর’ নামের দুটি বই প্রকাশ করে। এসব বইয়ে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৯৭৫ সালের শোকাবহ ১৫ আগস্টের দিনসহ বিভিন্ন বিষয় নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করেন। বইয়ে নিজেকে তিনি ‘আলবদর কমান্ডার’ হিসেবে দাবি করেন। ২০১৪ সালে তাঁর প্রকাশিত ‘দুই পলাশী দুই মীরজাফর’ বইয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা তথ্য সন্নিবেশ করায় সরকার বইটি নিষিদ্ধ করে। এ ঘটনায় রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.