মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে এই জনগোষ্ঠীকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা দেওয়াসহ পাঁচটি পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফররত প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার লোটে প্যালেস হোটেলে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন। রোহিঙ্গা সংকট থেকে বিশ্ববাসীর মনোযোগ যেন ঘুরে না যায়, সে আহ্বানও রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনার প্রস্তাবে রয়েছে- রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রদান। আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গাম্বিয়াকে সমর্থন করাসহ আন্তর্জাতিক বিচার আদালত, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং জাতীয় আদালতের কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়তা করা। জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর অব্যাহত দমন-পীড়ন বন্ধে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা। আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্য মেনে চলার অঙ্গীকার পূরণে মিয়ানমারকে দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানানো এবং মিয়ানমার যাতে বাধাহীন মানবিক প্রবেশাধিকারে রাজি হয় সেজন্য উদ্যোগ নেওয়া।
শেখ হাসিনা বলেন, গত মাসে আমরা প্রলম্বিত রোহিঙ্গা সংকটের ষষ্ঠ বছরে পা দিয়েছি। তবে তাদের একজনকেও তাদের ঘরে ফিরে যেতে দেখিনি। মিয়ানমারের রাজনৈতিক ইতিহাসে রোহিঙ্গাদের অবস্থানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরাকানে, বর্তমানে যা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য হিসেবে পরিচিত, অষ্টম শতক থেকেই রোহিঙ্গারা বসবাস করে আসছে।
বাংলাদেশে ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেওয়া এবং প্রতিবছর শরণার্থী শিবিরে ৩০ হাজার নবজাতকের জন্ম নেওয়ার তথ্যও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্র্রদায়ের দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয়ভাবে তাদের শক্তিশালী মানবিক ও রাজনৈতিক সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ। নিজ দেশে একটি ভালো এবং নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষায় থাকার এই সময়ে রোহিঙ্গাদের ভরণপোষণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্র্রদায়ের অব্যাহত সংহতি প্রয়োজন।
শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্র্রদায়ের সহায়তায় বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সুস্থতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছে। তারা খাদ্য, বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য সেবা পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে অস্থায়ীভাবে স্থানান্তরের জন্য আমরা আমাদের নিজস্ব সম্পদ থেকে ৩৫ কোটি ডলার ব্যয় করে ভাসানচরের উন্নয়ন করেছি এবং সেখানে এ পর্যন্ত প্রায় ৩১ হাজার রোহিঙ্গা স্বেচ্ছায় স্থানান্তর হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান আমাদের উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষার জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। রোহিঙ্গাদের জন্য প্রতিবছর আমাদের ১২২ কোটি ডলার ব্যয় করতে হয়।
সরকারপ্রধান বলেন, বিশ্ব এখন নতুন নতুন সংঘাত প্রত্যক্ষ করছে এবং দুর্ভাগ্যবশত রোহিঙ্গা সংকট থেকে মনোযোগ ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে- এর রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করা এবং ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের চাহিদা মেটানো- উভয়ক্ষেত্রেই।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh