লক্ষ্মীপুর পৌরসভার তিনবারের সাবেক মেয়র ও আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের (৭৪) ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুর ২টা নিজ বাসায় তিনি অসুস্থজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। তাহেরের এমন মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপিও শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, মেয়র আবু তাহের দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, ফুসফুস ও কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। দেশ-বিদেশে চিকিৎসার পর শহরের নিজ বাসায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭০ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে, দুই মেয়ে এবং বহু রাজনৈতিক সহকর্মীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মরহুমের মেঝো ছেলে এ কে এম সালাহ্ উদ্দিন টিপু সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি। তার বড় ছেলে এইচএম বিপ্লব জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।
এদিকে তার মৃত্যুর খবরে সর্বত্রে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্থানীয় জেলা আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবিরা তার বাসায় ভিড় জমান।
প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা তাহেরের মৃত্যুতে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৩ দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপি এক চিঠিতে দলের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ তিনদিন জেলায় দলীয় সকল কার্যক্রম স্থগিত ও সকল নেতাকর্মীকে কালো ব্যাজ ধারণের জন্য ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আগামীকাল ১০ ঘটিকায় মরদেহের প্রতি ফুলের শুভেচ্ছা ও ১১ ঘটিকায় জানাজায় অংশগ্রহন করার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীদের।
প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতার জানাজার নামাজ রবিবার (১৯ মার্চ) সকাল ১১ ঘটিকায় পৌর শহরের আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে পৌরসভার বাঞ্চানগর এলাকায় তার প্রতিষ্ঠিত মহিউস সুন্নাহ জালালিয়া মাদ্রাসার কবরস্থানে তাঁর মরদেহ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের কথা রয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহের ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহবানে ভারতের রাজনগর ক্যাম্পে প্রশিক্ষন শেষে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। পরে আটিলারী গ্রুপ কমান্ডার হিসেবে মহুরী নদী, কোম্পানীগঞ্জ, রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর ও রায়পুরে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে নেতৃত্ব দেন।