× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

অশনি মোকাবিলায় প্রস্তুত ১৫ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র

শাহনাজ পারভীন এলিস

১০ মে ২০২২, ০৮:০৬ এএম । আপডেটঃ ১০ মে ২০২২, ১০:১৭ এএম

ফাইল ছবি

বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় অশনি মোকাবিলায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা ও বরিশালসহ উপকূলীয় এলাকাগুলোতে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। 

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় অশনি যাতে প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য সারাদেশে এরই মধ্যে প্রস্তুত হচ্ছে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও সাইক্লোন শেল্টারসহ প্রায় ১৫ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এসব কেন্দ্র আশ্রয় নিতে পারবে প্রায় ২৬ লাখ মানুষ। এসব স্থানে আশ্রয়গ্রহণকারীদের শুকনো খাবার, পানি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা কীভাবে দেয়া হবে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি ও ব্যবস্থাপনার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের সব কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। 

গতকাল সোমবার (৯ মে) পর্যন্ত আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় অশনি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। উপকূলীয় এলাকায় টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বাতাসের চাপও কিছুটা বেড়েছে। এতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত বহাল রয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলার গভীর সাগরে বিচরণ না করাসহ উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করছে কিনা তা পর্যক্ষেণ করছে প্রশাসন।

ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। সোমবার পটুয়াখালীর দুটি বড় মৎস্যবন্দর আলীপুর ও মহিপুর ঘুরে দেখা যায়, সমুদ্রে অবস্থান করা মাছ ধরার অনেক ট্রলার এরইমধ্যে নিরাপদে বন্দরে চলে এসেছে। 

এমভি জান্নাত ট্রলারের মাঝি মোহাম্মদ নয়া জানান, ‘আমরা তিনদিন আগে সাগরে গিয়েছিলাম কিন্তু রোববার বিকেল থেকে হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় আমরা তীরের দিকে ফিরতে শুরু করি। সোমবার সকালে এসে পৌঁছেছি। আরও অনেক ট্রলার ফিরছে।’

বাংলাদেশের দক্ষিণের উপকূল বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় অশনি মোকাবিলায় তার জেলায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৪ হাজার ৯১৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। যার মধ্যে বরিশাল জেলায় ১ হাজার ৭১টি, পটুয়াখালীতে ৯২৫টি, ভোলায় ১১০৪টি, পিরোজপুরে ৭১২টি, বরগুনায় ৬২৯টি এবং ঝালকাঠিতে ৪৭৪টি আশ্রয় কেন্দ্র। এর মধ্যে ৩১৬টি সাইক্লোন শেল্টার এবং ৭৫৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। 

এসব কেন্দ্রে ২০ লাখ মানুষের পাশাপাশি কয়েক লাখ গবাদি পশুও রাখা যাবে। বিভাগের ৬ জেলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচিতে যোগ দেবেন প্রায় ২৯ হাজার প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক। তাদের মধ্যে সংকেত প্রচারের সরঞ্জামও বিতরণ করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলায় স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে সভা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয় বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উপকূলীয় আরেক জেলা বরগুনায় ৬৪০টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করতে মাঠে রয়েছেন দায়িত্বরত কর্মকর্তারা। ঝড়ের বিষয়ে আবহাওয়া দপ্তরের দেওয়া সতর্কতা সংকেত আদান-প্রদানে খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। 

জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান জানান, নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ায় জেলার সব আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুতসহ প্রয়োজনে খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এই জেলার ছয় উপজেলায় সাড়ে ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) পরিচালক অপারেশন নূর ইসলাম খান অসি জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় অশনি মোকাবিলায় কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সাতক্ষীরার আশাশুনি পর্যন্ত উপকূলীয় ১৩টি জেলার ৪২টি উপজেলায় এবার প্রয়োজনে মাঠে নামানো হবে ৭৩ হাজার ১২০ জন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক। কখন কী করতে হবে সে অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে স্বেচ্ছাসেবক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে গভীর নিম্নচাপ সৃষ্টি হলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে লোকজনকে সাইক্লোন শেল্টার সেন্টারে নিতে তথ্য আদান-প্রদানে স্বেচ্ছাসেবকদের ওয়্যারলেস সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখার নির্দেশনা দিয়েছে প্রশাসন। 

সব আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো খাবার, নিরাপদ খাবার পানি এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানান সিপিপি’র এই কর্মকর্তা।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.