× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

শীতে আলুর ফলন নিয়ে চিন্তায় চাষিরা

রংপুর প্রতিনিধি

১৪ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:০১ পিএম

প্রতি বছরই রংপুর অঞ্চলে আলুর উৎপাদন ভালো হয়। কিন্তু বছরের পর বছর হিমাগারে আলু সংরক্ষণ, ন্যায্য দাম না পাওয়াসহ রয়েছে নানা অভিযোগ। এমন পরিস্থিতিতে বাড়তি খরচের বোঝা নিয়ে এবারো শুরু হয়েছে আলুর চাষাবাদ। তবে শীত আর ঘন কুয়াশার দাপুটে স্বভাব অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণ হয়েছে কৃষকদের।

চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ৯৭ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে বিভিন্ন জাতের ২২ লাখ ৬৪ হাজার ৫৯৬ মেট্রিক টন আলুর উৎপাদন সম্ভব বলে মনে করছেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। ভালো ফলন পেতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের ছত্রাকনাশক ওষুধ ব্যবহারসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

এদিকে শীতের কারণে আলুর ফলন নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। কয়েকদিন ধরে রংপুর অঞ্চলে শীতের প্রকোপের পাশাপাশি ঘন কুয়াশা পড়ছে। এই কুয়াশা আলুর জন্য ক্ষতিকারক। এতে লেডব্লাইড রোগের আশংকা করছেন সাধারণ চাষিরা। এই কুয়াশা আলুর জন্য ক্ষতি কারণ হতে পারে বলে দাবি তাদের।

রংপুর অঞ্চলে চলতি মৌসুমে প্রায় এক লাখ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হচ্ছে। কিছুটা বৈরী আবহাওয়ার কারণে চাষিরাও নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে খেতের পরিচর্যায় নেমে পড়েছেন। আমন মৌসুমে বাম্পার ফলন হলেও গত মৌসুমে আলুতে খুব একটা লাভ করতে পারেননি আলু চাষিরা। এখনো অনেক হিমাগারে আলু সংরক্ষিত রয়েছে। ঠাণ্ডা আবহাওয়া আলু চাষের জন্য উপকারিতা হলেও কুয়াশা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যে কারণে গত কয়েকদিনের শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে উদ্বিগ্ন কৃষকরা। আবহাওয়া অধিদফতরের দেয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী জানুয়ারি মাসে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে এ অঞ্চলে। আর এমনটা শুরু হলে আলু চাষিদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিবে।

রংপুর নগরীর ময়নাকুটি এলাকার আলুচাষি মমিন মিয়া ও খোদা বকস মিলে এবার ৮০ শতক জমিতে আলু চাষ করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে ফলন ভালো হবে বলে তাদের বিশ্বাস। ঢাকা পোস্টকে তারা জানান, এখন সারের দাম বেশি। আবহাওয়া ভালো নয়। ঘন কুয়াশা আর শীতের প্রকোপ না কমলে লেডব্লাইড রোগের আশংকা রয়েছে। তবে সবমিলিয়ে ফলন ভালো হলে দামও ভালো পাওয়া যাবে।

পীরগাছা উপজেলার হাউদারপাড় গ্রামের বোরহান কবির জানান, তিনি প্রতি বছরই আলু চাষাবাদ করেন। এবার আলুর মৌসুমের শুরুতে বীজ আলু ও সার সংকটের কারণে কিছুটা ব্যাঘাত হয়। তবে আলুর আবাদ ভালো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আলু নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে না। কিন্তুু আবহাওয়া অনুকুলে না থাকায় ক্ষতির আশংকাও করছেন তিনি। শুধু এই চাষিরাই নয়, তাদের মতো আরো অনেকেই এমন আশংকার কথা জানান।

তবে কৃষি বিভাগ বলছে, এই আবহাওয়া আলুর জন্য তেমন ক্ষতিকারক নয়। এটি কাটিয়ে উঠতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। চাষিদের উদ্বিগ্ন না হয়ে নিয়মিত খেত পরিচর্যা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।

রংপুর মেট্রোপলিটন কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আমিনা খাতুন জানান, চলতি বছর নগরের ৩৩টি ওয়ার্ডে ৬ হাজার ৮ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬’শ হেক্টর উপসি এবং ৪’শ হেক্টরে দেশী জাতের আলু চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুল থাকলে এ বছর রেকর্ড পরিমাণ আলু উৎপাদন হবে বলে তিনি আশাবাদী।

রংপুর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বিগত মৌসুমে রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট এবং নীলফামারী এই ৫ জেলায় ৯৭ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন উন্নত জাতের গোল আলু চাষ করা হয়েছিল। এবারো এসব জেলায় একই পরিমাণ জমিতে বিভিন্ন জাতের গোল আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রংপুর জেলায় ৫১ হাজার ৮৪০ হেক্টরে, এর পরই রয়েছে নীলফামারী জেলায় ২২ হাজার ১০ হেক্টর। এছাড়া গাইবান্ধা জেলায় ৯ হাজার ২২০ হেক্টরে, কুড়িগ্রাম জেলায় ৬ হাজার ৫৯৫ হেক্টরে এবং লালমনিরহাট জেলায় ৫ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষের কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে এসব জেলার প্রায় ৯৮ ভাগ জমির ৯৭ হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে আলু চাষবাদ শুরু হয়েছে।

এ ব্যাপারে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান জানান, এবারে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষ করা হচ্ছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। বর্তমান যে আবহাওয়া বিরাজ করছে তাতে আলুর ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা কম রয়েছে।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.