× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

গণমাধ্যমে শেখ হাসিনা

জাফর ওয়াজেদ

০৯ জানুয়ারি ২০২২, ০৩:০৩ এএম

ভূগোলের গণ্ডি ছাড়িয়ে তিনি নিজেকে প্রসারিত করেছেন বিশ্ব ভাবনায়। দেশজ ভাবনার সীমারেখা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশ্বভাবনাকে সামনে রেখে সিদ্ধান্ত জানাতেও পিছপা নন। বিশ্বজুড়ে দ্বন্দ্ব, হানাহানি, সংঘাত, সংঘর্ষ, অস্ত্র ও বারুদের ঝনাৎকারের বিপরীতে শান্তিবার্তা তিনি ছড়িয়ে দিতে চান। তাই দেখা যায়, স্বদেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি সম্পাদন করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ক্ষেত্রটি সম্প্রসারণ করেছেন। তেমনি ফিলিস্তিনসহ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যও থেকেছেন সচেষ্ট। বিভিন্ন সময়ে মতামত তুলে ধরেতিনি দিক-নির্দেশনাও দিয়েছেন।

এমনকি দেশে দেশে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলেরও তিনি ঘোর বিরোধী। বিশ্ব দরবারে এর বিরুদ্ধে নিজস্ব অবস্থানও তুলে ধরেছেন। এমনকি নিজ দেশের সংবিধানে তা অন্তর্ভুক্তও করেছেন। দেখতে পাই, বিশ শতকের শেষে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সামরিক জান্তাদের ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীর সংহতির কথা তুলে ধরেছিলেন। যা এখনো অব্যাহত রেখেছেন। বিশ্বের সামরিক জান্তা শাসকরা যেমন পাকিস্তানে তখন ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তা শাসক পারভেজ মোশাররফ এ বক্তব্যকে ভালোভাবে নেয়নি। বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসবে মোটেও ভ্রুক্ষেপ করেন নি। নিজ দেশের সামরিক জান্তাদের দুঃশাসনে জনজীবন কীভাবে পদপিষ্ট হয়েছে তা শেখ হাসিনার জানা।

তাই নিজ দেশের সংবিধানেও সামরিক অভ্যুত্থানকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা বলবৎ করেছেন। মূলত শান্তির সম্প্রীতিকামী শেখ হাসিনা সব সময় হিংসাকে পরিহার করে এসেছেন। প্রতিশোধের মন্ত্রে বলীয়ান হয়ে নিজেকে নির্মমতার প্রতীক করে তোলেন নি কোনোভাবেই। হিংস্রতার বিপরীতে শান্তির বার্তাই তিনি প্রচার করে আসছেন। হিংসাকে জয় করতে সবসময় তিনি সচেষ্ট। মানুষকে ভালোবাসার মধ্যেই রয়েছে হিংসার মুক্তি। বঙ্গবন্ধুর ভাষায়, ‘বাংলা অভিধান ছাড়া আর কোনো ভাষার অভিধানে পরশ্রীকাতর শব্দটি নেই।’ আর শেখ হাসিনা চাইছেন বাংলা অভিধান থেকেও যেন মুছে যায় এই শব্দটি। কিন্তু যে সমাজ বিদ্যমান, সেখান থেকে এসব ঝেঁটিয়ে বিদায় করা সহজ নয় যদিও। রবীন্দ্রানুরাগী শেখ হাসিনা কবিগুরুর মতো বিশ্বাস করেন, ‘পৃথিবীজুড়ে একটি দেশ, পৃথিবীর সব মানুষ মিলে একটি জাতি-এটি মেনে নিলে পৃথিবীর সব মানুষই এক দেশের, এক জাতির মানুষ হবে। দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে বৈরিতা থাকবে না।’ অবশ্য শেখ হাসিনা এটাও জানেন, এ কথা শুনতে যতো সহজ, কাজে ততো নয়। খুব উঁচুদরের শিক্ষা-সংস্কৃতি থাকলেই তবে লোকে এ কথার মর্ম বুঝবে।

দুই দশক আগে পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি ‘দেশীকোত্তম গ্রহণকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে দেশে কালে কালে মানুষের মধ্যে সম্প্রীতির ভাব গড়ে তোলার জন্য নিবেদিত হওয়ার কথা বলেছিলেন। রাষ্ট্রনায়কোচিত আচরণের বহির্প্রকাশ ঘটিয়ে তিনি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে নিজেকে সমাসীন করার জন্য পর্ব সমাপন করে সম্মুখে শান্তি পারাবার নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। গত দেড়দশক ধরে বিশ্বের গণমাধ্যমে তিনি একটি প্রশংসিত নাম। বিশ্বের বৃহৎ শক্তিগুলোর জোটেও তিনি সমাসীন হয়ে আসছেন। আর গণমাধ্যমজুড়ে তিনি একটি উন্নয়নশীল দেশে উন্নত হওয়ার পথ পরিক্রমাকে সামনে তুলে ধরছেন।

শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান এবং তা বাস্তবায়নও করেন। তাই বিশ্ব গণমাধ্যম অনায়াসে তুলে আনে সেই দৃশ্যপট বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখে। শুধু দেখা নয়, সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পথ নির্দেশিকা এবং সঠিক কর্মসূচী নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। যাত্রাপথ মসৃণ না হলেও, স্বপ্নপূরণের পালায় চড়াই-উৎরাই ভেঙ্গে বেরিয়ে আসছে উন্নতির অগ্রযাত্রায়। বাঙালির আশা-আকাঙ্খার চৌহদ্দি স্বদেশ ছাড়িয়ে এখন বিশ্বসভায় পৌঁছে গেছে। জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং আর্থ-সামাজিক সূচকে ‘উন্নয়ন বিশ্বময়’ হিসেবে সত্যিকারার্থেই উত্থান ঘটেছে দেশটির। তাই দেখা যায়, উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আন্তর্জাতিক বিশ্বে পরিচিত পেয়েছে বাংলাদেশ। আর দেশটির এই উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতিশীল নেতৃত্বের কারণে বিশ্ব নেতৃত্বের কাছেই শুধু নয়, দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে একজন আদর্শ রাষ্ট্র নায়ক হিসেবে নিজস্ব ইমেজ সৃষ্টি করতে পেরেছেন। হতদরিদ্র অবস্থান থেকে উন্নয়নশীল দেশের পথে আজ বাংলাদেশ। বিশ্ব উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ তার অবস্থানকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যা অভাবনীয় মনে হয়েছে অনেক দেশি-বিদেশি গণমাধমের কাছে। অবিশ্বাসও একটি পশ্চাদপদ দেশকে উন্নয়নের কাতের শামিল করার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা যে অবস্থানে পৌঁছেছেন, বিশ্বের সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদগুলো গত এক দশক ধরে তা অবলোকন করে আসছে। এমনকি নানা প্রতিবেদনও ছেপেছেন।

দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমের কাছে শেখ হাসিনা গুরুত্ববহ হয়ে উঠেছেন তার ‘ক্যারিশমাটিক’ ভূমিকার কারণে। মিলেছে একের পর এক সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরস্কার। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব দায়িত্বশীল পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনৈতিক সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক ডিগ্রি পুরস্কার সরকার প্রধান ও রাষ্ট্র পেয়েছে।

টাইম সাময়িকীর বিবেচনার শেখ হাসিনা বিশ্বের প্রভাবশালী দশনারী নেত্রীর একজন মনোনীত হয়েছিলেন। বিশ্ব সততার জরিপে তিনি ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সততার শীর্ষের তিন নেতার একজন হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ‘পিপলস এন্ড পলিটিক্সের গবেষণা প্রতিবেদনে। যা গণমাধ্যমে শিরোনাম হয়েছে, সেখানও দেখা গেছে বেতন ছাড়া শেখ হাসিনার সম্পদের স্থিতিতে কোনো সংযুক্তি নেই। গোপন সম্পদও নেই। দেশের ৭৮ ভাগ মানুষ মনে করেন তিনি সৎ এবং ব্যক্তিগত লোভ-লালসার উর্ধে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল লিখেছিল ২০১৭ সালে অংসান সুচি পশ্চিমা বিশ্বে অধিক পরিচিত একজন ব্যক্তি। তিনি শান্তিতে নোবেলও পেয়েছেন। কিš‘ আজ তিনি সারাবিশ্বে নিন্দিত এবং তারই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাবিশ্বে প্রশংসিত।

রোহিঙ্গা ইস্যুর ধকল পোহাচ্ছে বাংলাদেশ। গার্ডিয়ান পত্রিকা লিখেছিল ২০১৭ সালের আগস্টে, ‘রোহিঙ্গ ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বিশাল মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন তা বিরল। তিনি যে একজন হৃদয়বান রাষ্ট্রনায়ক তা তিনি আগেও প্রমাণ করেছেন, এবারও প্রমাণ করলেন।’ নিজ দেশ থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়-খাদ্য দিয়ে শেখ হাসিনা বিশ্বনন্দিত হয়েছেন। বিশ্বের সব গণমাধ্যম শেখ হাসিনার মানবিক ভূমিকার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে আসছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতার জননী বা মাদার অব হিউম্যানিটি আখ্যায়িত করেছে কয়েকটি ব্রিটিশ গণমাধ্যম। ইন্ডিয়া টুডের অনলাইন প্রতিবেদনে বলা হয় ‘শেখ হাসিনার হৃদয় বঙ্গোপসাগরের চাইতেও বিশাল। যেখানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ে কার্পণ্য নেই।’

আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং বিশ্বশান্তি স্থাপনে অবদান রাখার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তি তাঁকে বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করে সম্মানিত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী বিজনেস সাময়িকী ‘ফোবর্স’ অভিহিত করেছে ‘লেডিস অব ঢাকা।’ সংযুক্ত আরব আমিরাতের পত্রিকা খালিদ টাইমস উপাধি দিয়েছে ‘প্রাচ্যের নতুন তারকা।’ শ্রীলঙ্কার গার্ডিয়ান পত্রিকা উল্লেখ করেছে, ‘জোয়ান অব আর্ক।’ রাষ্ট্র পরিচালনায় বিস্ময়কর সাফল্য দেখিয়ে অনন্য ঈর্ষণীয় অবস্থান তৈরি করেছেন শেখ হাসিনা।

বিচক্ষণতা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তা দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে নতুন যুগে পা রেখেছে। তার হাত ধরে কূটনীতি, অর্থনীতি ও সামাজিক উন্নয়নের মতো সব ক্ষেত্রেই সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন তৈরি করেছেন বিশ্ববাসী। অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে নজরকাড়া সাফল্য হিসেবে দেখা দিয়েছে পদ্মা সেতু। অথচ এই সেতু নিয়ে দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমকে সরগরম করে তুলেছিল বিশ্বব্যাংক। নানা অভিযোগে অর্থায়ন বন্ধ, মোড়লদের চোখ রাঙানি সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক সক্ষমতাকে প্রমাণ করেছে। তাঁর  পরিকল্পনাতেই বাংলাদেশ এখন প্রায় সব ক্ষেত্রেই ডিজিটাল। পাওয়া যাচ্ছে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ। প্রযুক্তিবান্ধব কৃষিনীতির কারণেই বাংলাদেশ ইতোমধ্যে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার পর রপ্তানির সক্ষমতাও অর্জন করেছে। যে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে সরে গিয়েছিল, সেই বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে এসে দারিদ্র্য বিমোচনে বিশ্বকে বাংলাদেশ থেকে শিখতে বলেছিলেন। একুশ শতকে এসে শেখ হাসিনা দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকলেও বিশ শতকে তাঁর যাত্রাপথ মসৃণ ছিল না। গত চল্লিশ বছরের বেশি তিনি রাজনীতিতে শুধু নন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রীও। এমন বিরল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিশ্বে বিরল।  দেশী গণমাধ্যমের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে গত এক দশকের বেশি সময় ক্ষমতায় থাকাকালে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করেছেন। দেশে গণমাধ্যমের ব্যাপক বিস্তার ঘটেছেন। প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ার বিকাশ ও প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন।

কিন্তু যখন তিনি রাজনীতিতে অবতীর্ণ হলেন, তার পূর্বাপর সময়ে বিশ শতকের দুই দশকে গণমাধ্যমের সহায়তা তেমন মেলেনি। পঁচাত্তরের পনের আগস্টের পর দেশে সামরিক শাসন জারী হয়। নব্বই সাল পর্যন্ত টানা পনের বছর সামরিক জান্তা শাসকরাক্ষমতা দখল করে দেশ থেকে গণতন্ত্রসহ স্বাধীনতার মূল্যবোধকে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে। গণমাধ্যমগুলোকে নিয়ন্ত্রণে নেয়। তাদের মূল লক্ষ্যই ছিল ইতিহাস বদলে দেওয়া। বঙ্গবন্ধুর নাম গন্ধ সবকিছু থেকে মুছে ফেলা। শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফেরার পর তিনি হয়ে ওঠেন কতিপয় সংবাদপত্রের আক্রমণের মূল লক্ষ্য। একই সঙ্গে তাঁর জীবননাশও হয়ে ওঠে জান্তাদের লক্ষ্য। তাই তাঁকে বহুবার হত্যার চেষ্টা করা হয়। জান্তা শাসকদের নিয়ন্ত্রিত ও সমর্থিত সংবাদপত্রগুলো এসবের বিরুদ্ধে প্রবল কোন ভূমিকা নেয়নি। এমনকি অনুসন্ধান চালিয়ে কারা এর নেপথ্যে সেসব তথ্যও উদঘাটনকরেনি। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে কোনঠাসা করার জন্য নানামুখী অপপ্রচার চালানো হয়েছে। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন নিয়ে অজস্র মিথ্যাচারে পূর্ণ থাকতো সংবাদপত্রের পৃষ্ঠাগুলো।

১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯৬ সালে যখন শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেত্রী তখন থেকে গণমাধ্যম তার ‘প্যারালাল’ হিসেবে ক্ষমতা দখলকারী ও রাজাকার পুনর্বাসনকারী জান্তাশাসকের স্ত্রীকে দাঁড় করায়। সামরিক জান্তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় একাত্তরের পরাজিত শক্তি তাদের শক্তিমত্তায় মাঠে নামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার সকল অর্জনগুলো পঁচাত্তরের পর ধূলিস্ম্যাৎ হতে থাকে। আর গণমাধ্যম হয়ে ওঠে তাদের নোটিশ বোর্ড।

১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরেন তিনি। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই রাজনৈতিক নির্যাতন-নিপীড়ন সহ্য করেছেন। একই সঙ্গে ছিল প্রাণনাশের হুমকি এবং বার বার তার প্রয়োগের অপচেষ্টা। বলা যায়, দফায় দফায় প্রাণনাশের চেষ্টার মধ্যে তার বেঁচে থাকাটাই মিরাক্কেল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তাকে হত্যার যে বীভৎস প্রচেষ্টা চালানো হয়, তা জঘন্য অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। রাষ্ট্র এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। ক্ষমতা দখলকারি সেনা শাসক জিয়া প্রায় ৬ বছর তাঁকে ভারত ও ইংল্যান্ডে নির্বাসিত জীবনযাপনে বাধ্য করেন। বাবা-মাসহ পরিবারের নিহত সদস্যদের কবর জিয়ারতের সুযোগটুকুও দেয়নি। শেখ হাসিনার প্রথম বন্দি জীবন ১৯৮৩ সালের ২৯ নভেম্বর নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হয়েছিল সামরিক শাসন প্রত্যাহারসহ পাঁচদফা দাবিতে আন্দোলন করায়।

এই সময়ে সংবাদপত্রগুলো স্বাধীন সত্তার প্রকাশ ঘটাতে পারেনি। আবার দেখা যায়, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি আইন জারীর পর শেখ হাসিনাকে বন্দি রেখে আওয়ামী লীগ ভাঙার জন্য নানা চক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কাছে হার মানতে হয়। সে সময় এক পত্রিকার সম্পাদক লিখেছিলেন, ‘দুই নেত্রীকে সরে যেতে হবে।’ শেখ হাসিনাকে সরিয়ে ফেলার জন্য অন্য নেত্রীর কথা বলা হয়েছিল। সে সময় শেখ হাসিনার ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯৬ সালে,(যখন শেখ হাসিনা বিরোধী দলীয় নেত্রী) তখন থেকে গণমাধ্যমে তার ‘প্যারালাল’ হিসেবে ক্ষমতা দখলকারি ও রাজাকার পুনর্বাসকারী জান্তা শাসকের স্ত্রীকে দাঁড় করায়। সামরিক জান্তাদেরপৃষ্ঠপোষকতায় একাত্তরের পরাজিত শক্তি তাদের শক্তিমত্তায় মাঠে নামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার সকল অর্জনগুলো পঁচাত্তরের পর ধূলিস্ম্যাৎ হতে থাকে। আর গণমাধ্যম হয়ে উঠে তাদের নোটিশ বোর্ড।


Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.