নারীদের অনেকেই বিভিন্ন রকমের গহনা পড়তে ভালোবাসেন। সোনা, রূপা এমনকি হীরার গহনাও পড়েন অনেকে। তবে ব্যাকটেরিয়ার তৈরি গহনা কয়জন পড়বেন-তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থেকেই যায়।
স্কটিশ শিল্পী ক্লোয়ি ফিটজপ্যাট্রিক নিজের ত্বকের ব্যাকটেরিয়া থেকে গহনা তৈরি করে রীতিমতো আলোড়ন তুলেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ক্লোয়ি তার লাখো অনুসারীর সাথে গহনা তৈরীর ভিডিওগুলো শেয়ার করে নেন, যার মধ্যে কিছু ভিডিও ১০ মিলিয়নের ওপর ভিউ পায়। ত্বক এবং উদ্ভিদ থেকে নেওয়া স্যাম্পলগুলো প্রথমে রঙে বিকশিত হয় যা আবার রেজিনের অলংকার রাঙাতে ব্যবহার করা যায়।
বিবিসি স্কটল্যান্ডকে ক্লোয়ি বলেন, ব্যাকটেরিয়াকে তো নোংরাই ভাবা হয়, কিন্তু আমি এর সৌন্দর্য দেখানোর চেষ্টা করছি।
২১ বছর বয়সী এই ডিজাইনার প্রথম শ্রেণীর ডিগ্রি নিয়ে সম্প্রতি ডান্ডির ডানকান অব জর্ডানস্টোন কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। ব্যাকটেরিয়া দিয়ে গয়না তৈরির এই প্রকল্প তাকে সম্মানজনক পুরস্কার 'স্যার জেমস ব্ল্যাক অ্যাওয়ার্ড' এনে দিয়েছে।
ক্লোয়ির ভাষ্যে, অদ্ভুত আইডিয়ার জন্যই আমার ভিডিওগুলো এত ভিউ পেয়েছে বলে আমি মনে করি।এটি একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া ছিল তবু অনেকেই পুরোটা সময় আমার ভিডিও অনুসরণ করে গেছেন। আমি আনন্দিত যে মানুষ ব্যাকটেরিয়ার 'ফ্যাসিনেটিং' (আকর্ষণীয়) দিকটিও দেখছে এবং আমার ভিডিওগুলোর মাধ্যমে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গির উন্মোচন ঘটছে।
ক্লোয়ি তার দেহের বিভিন্ন অংশ অথবা উদ্ভিদের নমুনা (সোয়্যাব) সংগ্রহ করে আগার নামক একটি বিশেষ গ্রোথ মিডিয়ামে সেগুলো স্থানান্তর করেন। ঘরের তাপমাত্রায় ব্যাকটেরিয়া স্যাম্পলগুলোকে ঢেকে রঙবেরঙের কলোনী আকারে তাদের যেন সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, সেই ব্যবস্থা করা হয়। এরপর কিছু নির্দিষ্ট রঙের স্যাম্পলকে আলাদা করে আরেকটি পাত্রে উঠিয়ে সেগুলোকে আবারও সংখ্যাবৃদ্ধির সুযোগ দেয়া হয়।এসব রঙ সুতির পোশাক রাঙাতে বা গহনা রঞ্জিত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ক্লোয়ি বলেন, আপনি যখন আগারের প্লেটে হাত অথবা পা দিয়ে চাপ দেবেন, দেখবেন লাল, কমলা এবং হলুদের মতো রঞ্জকের সৃষ্টি হবে। প্রত্যেকের ব্যাকটেরিয়াই আলাদা এবং ভিন্নভাবে বিকশিত হয়। তার দাবি, এটি টেক্সটাইল শিল্পে বহুল ব্যবহৃত মৃতপ্রায় প্রক্রিয়ার চেয়ে অধিক পরিবেশবান্ধব। সেখানে তারা প্রচুর ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহার করে। এর বদলে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা একটি পরিবেশ-বান্ধব বিকল্প, তারা দ্রুত সংখ্যাবৃদ্ধি করে এবং আপনি রঙও ভালো পেয়ে থাকেন।
রেজিনের 'রত্নপাথর' বানাতেও তিনি ব্যাকটেরিয়া ডাই ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও ব্যাকটেরিয়া বিকাশের ক্ষেত্রে কিছু ধরন বা প্যাটার্ন লক্ষ্য করেছেন ক্লোয়ি। তিনি বলেন, মানুষের ব্যাকটেরিয়া বেশি রং ধারণ করে, বিশেষ করে ত্বক থেকে।এজন্যই মানুষের ত্বকে গোলাপী, লাল, হলুদ অনেক ধরনের টোন দেখা যায়। গাছেরাও অনেক রঙ ধারণ করতে পারে, তবে সেটি অল্প পরিমাণে।
প্রক্রিয়াটির বিকাশ এবং সুরক্ষা নিশ্চিতে তিনি ইউনিভার্সিটি অব ডান্ডির বিজ্ঞানীদের সাথে মিলে কাজ করেছেন।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh