গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার কোলঘেঁষে তিস্তার শাখা নদীর উপর নির্মিত ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করেন কয়েক হাজার মানুষ। চলে ঘোড়ার গাড়ি, বালুবাহী ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, রিকশা, অটোরিকশা, বাইকেল, মোটরসাইকেলসহ নানা যানবাহন। বছর না পেরোতেই আবার ওই ব্রিজের সংযোগ সড়কে সৃষ্টি হয়েছে দুটো সুরঙ্গের মতো বড় আকারের ধস। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা, এমন আশঙ্কা স্থানীয়দের।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রিজের পূর্বদিকে ৫০ মিটার সংযোগ সড়কের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে দুটো বিশাল আকারের গর্ত দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, গত এপ্রিল মাসের দিকে বৃষ্টিপাত শুরু হলে সড়কের পূর্ব পাশে ধস নামে। ধীরে-ধীরে তা বড় গর্তে পরিণত হয়। স্থানীয় কাউন্সিলর শাহিন প্রামাণিক তা মেরামতের উদ্যোগ নেন। কিন্তু সম্প্রতি ব্রিজের প্রান্ত থেকে মিটার দশেক দূরেই সড়কের উভয় পাশে আবার ধস নেমে দুটো বিশালাকৃতির গর্তের সৃষ্টি হয়েছে যা অনেকটা সুরঙ্গের মতো। সড়কের উপরেও দেখা দিয়েছে ফাটল। ফলে যে কোনো সময়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, উপজেলার রামডাকুয়া, তালুক বেলকা, জিগাবাড়ি, মাঝবাড়ী, বেকরির চর, পঞ্চানন পলাশতলা, বেলকা নবাবগঞ্জ, কিশামত সদর, চর তারাপুর, চর বিরহিম, কাশিমবাজার, মাদারীপাড়া, পাড়াসাদুয়া, চর চরিতাবাড়ী, কানি চরিতাবাড়ী গ্রাম এবং কুড়িগ্রামের উলিপুর, চিলমারী ও রৌমারী উপজেলার মানুষের নদীপথে যাতায়াতের কষ্ট লাঘবে ২০২১ সালের মার্চ - এপ্রিলের দিকে এলজিইডি ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪৪ টাকা ব্যয়ে পূর্ব-পশ্চিমে ৫০ মিটার করে সংযোগ সড়কসহ ১৯৬ মিটার পিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ করে। ওই সময়ে ব্রিজটির উদ্বোধনের আগেই পূর্ব পাশের সংযোগ সড়কে দেখা দিয়েছিল ধ্বস। এ নিয়ে ১৭ আগষ্ট ২০২১ একটি জাতীয় দৈনিকের অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হলে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে যাওয়া বন্ধ করতে উদ্যোগ নেয় এলজিইডি এবং রাস্তার উত্তর পাশে কয়েক মিটার জায়গায় সারিবদ্ধভাবে একটি করে ইট বসিয়ে কাজ শেষ করে। চলতি বছরে বর্ষা শুরু হলে আবার ওই একই জায়গায় ধসের পাশাপাশি অন্যান্য জায়গায়ও নামে ধস।
বিকেল বা সন্ধ্যে নেমে এলে উন্মুক্ত আকাশ, তিন দিকে ফাঁকা প্রান্তর আর বিশুদ্ধ বায়ু আর মনোরম পরিবেশে দিনের ক্লান্তি দূর করতে আসেন সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকেই। কিন্তু তবুও নজর দেন না তারা- বলছিলেন সন্ধ্যায় কোচিং থেকে ফেরা কয়েকজন শিক্ষার্থী।
রাস্তাটির দেখভালের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের জানিয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহিন প্রামাণিক বলেন, ‘যেহেতু এটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তা, তাই লোকজনের যাতায়াতের সুবিধার জন্য পৌরসভার তহবিল থেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকার মতো ব্যয় করে গর্ত ভরাট করা হয়েছে। কিন্তু অন্য জায়গায় নতুন করে এ গর্ত দুটোর সৃষ্টি হয়েছে।’
দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংবাদ সারাবেলাকে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশলী সামসুল আরেফিন খাঁন।