× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

আশুলিয়ায় বিলুপ্তির পথে বাঁশশিল্প

শামীম হাসান সীমান্ত, আশুলিয়া (ঢাকা)

২৬ নভেম্বর ২০২২, ০৩:১০ এএম

বাঁশশিল্প বাঙালি সংস্কৃতির একটি বড় অংশ। বাঁশ দিয়ে ঘরের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করা হতো। আর এসব জিনিসপত্রের কদরও ছিল ভালো। অপ্রতুলতা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং পরিকল্পিত উদ্যোগের অভাবে বিলুপ্ত হতে চলেছে আশুলিয়ার বাঁশশিল্প। 

বর্তমান বাজারে প্লাস্টিক পণ্য সামগ্রীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকতে না পেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে এককালের ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প। অপরদিকে উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় অভাব-অনটনের মধ্যে দিনযাপন করছেন বাঁশশিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো। পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকতে তারা এ পেশাকে ছেড়ে অন্য পেশায় ঢুকে পড়ছেন। ঐতিহ্যবাহী শিল্পকর্মটি দেশ থেকে বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

একসময় ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রামীণ পল্লিতে বাঁশের চটা দিয়ে চাটাই, কুলা, ডালা, চাঙারি, কুলা, চালুনি, মাছ রাখার খালই, ঝুঁড়ি ও হাঁস-মুরগির খাঁচাসহ বিভিন্ন জিনিস তৈরি করা হতো। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এ কাজ করতো। আর স্থানীয় বাজারে এমনকি বাড়ি বাড়ি ফেরি করে এসব বাঁশের পণ্য বিক্রি করতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এ শিল্পের মূল উপকরণ বাঁশের মূল্য বৃদ্ধিতে বাঁশ-বেতের কারিগররা তাদের পেশা ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। ফলে বেকার হয়ে পড়েছে গ্রামীণ কারিগররা। অনেকেই আবার এ পেশা ছেড়ে চলে যাচ্ছে অন্য পেশায়।

একসময় আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় বাঁশ বাগান দেখা গেলেও এখন তা খুবই কম। সম্প্রতি আশুলিয়ার কয়েকটি এলাকার  বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই অঞ্চলে একসময় বিভিন্ন জাতের বাঁশ জন্মাতো। এ বাঁশ দিয়েই বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতো স্থানীয় বাঁশ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষগুলো। আশুলিয়ায় গার্মেন্টস ও শিল্প কলকারখানা বৃদ্ধি পাওয়াতে গড়ে উঠেছে বড় বড় দালানকোঠা। মানুষের বসবাস বেশি হওয়ার কারনে এই সকল বাঁশ বাগান গুলো কেটে তৈরি করা হচ্ছে আবাসিক ভবন।  নির্বিচারে বাঁশ কড়ুল ধ্বংসের কারণে বাঁশের বংশ বিস্তার কমে যাচ্ছে।

ডেন্ডাবর কাঁঠাল বাগানের বাঁশ শিল্প কারিগর মো. আফজাল বলেন, ‘বাঁশের তৈরির বিভিন্ন জিনিসপত্র এখন আর আগের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে না। কারণ বর্তমানে প্লাাস্টিক পণ্যের উপর ঝুঁকছে লোকজন। ফলে এ শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। বাঁশ-বেত শিল্পের সুদিন ফিরিয়ে আনতে সরকারি উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাঁশের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে এখন আর আগের মতন ব্যবসা হয় না।আগে আমার কর্মচারী ছিলো নয়জন আর এখন দুজনকে নিয়ে কোনমতে চালাই।সেই সিলেট, চিটাগাং ও নরসিংদী গিয়ে যে টাকা খরচ করে বাঁশ কিনতে হয় সেই খরচও উঠে না।আর ক্রেতা একেবারেই নেই।’

‘বাঁশের তৈরি জিনিসের একসময় অনেক কদর ছিল। প্রত্যেক বাড়িতেই বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের ব্যবহার ছিল। চাহিদাও ছিল ব্যাপক। বর্তমান প্লাস্টিক পণ্যের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে মুখ থুবড়ে পড়ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ শিল্প।’

আলী নামের আরেকজন বাঁশশিল্প কারিগর বলেন, ‘কর্মসংস্থান সংকুচিত হওয়ায় আমরা এখন অনেক কষ্টে দিনযাপন করছি। শত প্রতিকূলতার মধ্যে পুরোনো পেশা ধরে রাখতে সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করছি। কিন্তু প্রয়োজনীয় পুঁজি আর উপকরণের অভাবে সে প্রচেষ্টা থমকে গেছে। আমরা সরকারি-বেসরকারি সংস্থার ঋণ সহায়তা কামনা করছি।’

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.