× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প: ২১ ক্যাটাগরির শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ বন্ধ

কক্সবাজার প্রতিনিধি

০২ ডিসেম্বর ২০২২, ০৩:৫৯ এএম

বাংলাদেশে সরকারি প্রকল্পে অনিয়ম আর দুর্নীতি এখন অবাক করার মতো কোনো খবর নয়। কত উপায়েই না প্রকল্পের অর্থ নয়ছয় হয়। এবার মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের বিভ্রান্তিমূলক তথ্যের কারণে সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতিমত ক্ষতিপূরণের টাকা থেকে ক্ষতিগ্রস্তরা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ২১ ক্যাটাগরির ক্ষতিপূরণ নিয়ে টালবাহনা, স্ক্রাপসহ বিভিন্ন ব্যবসা নিজের লোক দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা, সরকারের অধিকগ্রহণকৃত ১২০০ একর সিঙ্গাপুর প্রকল্পের ভূমিতে চিংড়ি প্রকল্প ও লবণ চাষের জমি থেকে স্থানিয় কিছু প্রভাবশালীর সাথে আঁতাত করে আর্থিক সুবিধা নেওয়ার ও অভিযোগ রয়েছে এ দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

এছাড়াও স্থানীয়দের সাথে দুর্ব্যবহারসহ নানান অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে। ফলে এসব অনিয়ম সরেজমিনে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে মাতারবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ বিদ্যুৎ জ্বালানি ও জ্বালানি খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন। যার ফলে অসংখ্য জমির মালিক এককালীন ক্ষতিপূরণের টাকা ও শ্রমিকরা টাকা পায়নি।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, উপজেলার মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের শুরুতে সরকার ২১ ক্যাটাগরির ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিল। পর্যায়ক্রমে সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণের ৩ ক্যাটাগরির টাকা প্রদান চলমান হলেও সম্প্রতি আটকে গেছে এককালীন ক্ষতিপূরণ ও শ্রমিকের মজুরির টাকা। তালিকাভুক্ত প্রতি শ্রমিক ২ লাখ ৮৫ হাজার ও জমির মালিক চেক প্রতি ২ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রদান শুরু হলেও এখন তা বন্ধ রয়েছে। 

জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনের ন্যায্য দাবি নিয়ে যতদিন সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ জনগণের পাশে থেকে সোচ্চার ছিল ততদিন মানুষের কিছু না কিছু পাওনা আদায় হয়েছে। এখন ভুলেও কেউ এ দাবি নিয়ে কথা বলে না। শেষ পর্যন্ত তাকেই জনগণের দাবির কথা তুলে ধরে অভিযোগ করতে হলে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে।

মাতারবাড়ির ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রকল্প পরিচালক ভুল তথ্য দেওয়ার কারণে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ ক্ষতিপুরণের টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জমির চেক অনুযায়ী শ্রমিকের চেক হলেও প্রকল্প পরিচালক ও সংশ্লিষ্টদের গাফিলাতি ও মিথ্যা তথ্য দেওয়ার কারণে শ্রমিকরা টাকা পাচ্ছেন না। বর্তমানে ভুমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে যা চেক হচ্ছে এতে শ্রমিক বিষয়টি সুরাহা হচ্ছে না। প্রকল্প পরিচালক ছাড় ম্যানেজিং ডাইরেক্টরও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত তথ্য দিচ্ছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে। আমার দৃষ্টিতে এই দুইজনই অনেকটা অদক্ষ। মাতারবাড়ির মানুষ এখন নিরুপায়। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সঠিক তথ্য দিলে সবাই ক্ষতিপূরণের টাকা সহজে পেত। মাতারবাড়ির মানুষের প্রতি প্রকল্প পরিচালক ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টরের কোনো মায়া মমতা নেই।

মাতারবাড়ীর চেয়ারম্যান এসএম আবু হায়দার স্থানিয় একটি প্রকাশিত দৈনিকে বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে এককালীন ক্ষতিপূরণ ও শ্রমিকের ক্ষতিপূরণের টাকা ৯৫ ভাগ পরিশোধ করা হয়েছে।  যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত অর্ধেকেরও বেশি মানুষ জমির মালিক এককালীন ক্ষতিপূরণের টাকা এখনো পায়নি।

এছাড়া শ্রমিকরা ক্ষতিপূরণের টাকা পায়নি। পানি নিষ্কাশনের ব্যাপারে যা উল্লেখ করা হয়েছে তাও বিভ্রান্তিকর। স্লুইচ গেইট বসানো হয়েছে তাদের প্রয়োজন মতো। মাতারবাড়ির পানি নিষ্কাশনের ব্যাপারে পরিকল্পনা করে কোনো স্লুইস গেইট বসানো হয়নি।

অধিগ্রহণকৃত জমিতে দীর্ঘদিন চাষাবাদ করা শ্রমিক মাতারবাড়ি সিকদার পাড়ার শামসু আলম, মাইজ পাড়ার নুরুল আলম ও মাইজপাড়া কালা মিয়াসহ অনেক শ্রমিক জানিয়েছেন, এখন আমাদের শ্রমিক পেশা বন্ধ রয়েছে। তবে সরকার শ্রমিকদের যে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার কথা ছিল তা এখন বন্ধ রয়েছে। আমরা পরিবার নিয়ে চরম বেকায়দায় আছি। বিভিন্ন অফিসে ঘোরাঘুরি করেও ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছি না। কোল পাওয়ারের যারা কর্মকর্তা আছেন তাদের সাথে কথা বলার কোনো সুযোগই দেন না। এছাড়া তারা আমাদের পাওনার ব্যাপারে কিছুই বলেন না।

প্রকল্প পরিচালক আবুল কালামের বক্তব্য নিতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভাব হয়নি।

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.