× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

৩০ বছরেও ঘর পেল না আলেয়া

জুলহাস আহমেদ

০৫ মার্চ ২০২২, ০১:০৮ এএম । আপডেটঃ ০৫ মার্চ ২০২২, ০৩:৩২ এএম

সমাজের ছিন্নমূলদের জন্য আবাসন ব্যবস্থার দাবিতে যখন আন্দোলন শুরু হয়, তখন আলেয়া ছিলেন সকল মিছিল ও সমাবেশের সামনে। তবুও মাথা গোঁজার মত একটি ঘরের বরাদ্দ মেলেনি তার। স্বামী পরিত্যাক্তা আলেয়ার দশ সন্তানের ৯ জনকেই কেড়ে নিয়েছে ভারানী খাল। বরগুনা শহরের বাজার ব্রীজের নিচে দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশী সময় ধরে জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। 

জানা যায়, ৭০ বছর বসয়ী আলেয়ার গ্রামের বাড়ি বরগুনার এম বালীয়াতলী ইউনিয়নের মনসাতলী গ্রামে। তার শশুরবাড়িও ছিল একই গ্রামে। ৩০-৩২ বছর আগে সংসারে অভাব অনটনের কারনে মায়ের সাথে দুই সন্তান নিয়ে বরগুনায় চলে আসেন আলেয়া। তখন থেকেই শুরু হয় তার আশ্রয়হীন জীবন।  প্রথমে বরগুনা মাছ  আর সবজি বাজারে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে ভাসমানভাবে রাত্রিযাপন করতেন  তিনি। এরপর শহরের প্রাণকেন্দ্রে ভাড়ানী খালের উত্তর প্রান্তুের তৎকালীন কাঠের ব্রীজের নিচে বসবাস শুরু করেন । নৌকায় চাল ওঠানোর সময় নিচে পড়ে যাওয়া চাল কুড়িয়েই পেট চলত আলেয়া

আলেয়া কান্নাজড়িতকন্ঠে বলেন, ঘরের লইগ্গা যেহানেই যাই তারাই আমারে উপজেলায় যাইতে কয়। উপজেলায় যাইয়া যহন তাগো দারে ঘরের কতা কই, তহন তারা কয় ১৫ হাজার টাহা লাগবে ঘর পাইতে হইলে। আমি গরীব মানুষ, এতগুলা টাহা কই পামু। 

আলেয়া আরও বলেন, শেখ হাসিনা এত মানষেরে ঘর দিলো, কিন্তু আমি দোষ করলাম কি! আমার কফালে কি এউক্কা ঘর জোডবেনা? ৩০ বছর ধইর্রা এই ব্রীজের তলে থাহি। একে একে আমার ৯ ডা গুরাগারা এই খালের পানিতে ডুইব্বা মরছে। বহুত নেতাগো পাও ধইরাও একটা ঠাই হইওলোনা মোর। তিরিশ বছর আগে আগে মায়ের লগে আইয়া বাজারে ভাসমান থাকছি। হেরপর হইতেই এই ব্রীজের তলে আছি। গুরাগারা অইতো আর কয়মাস বয়স হইলেই মরতো। একারনে স্বামী ছাইড়া গেছে, হে এহন আরেক বউর দারে থাহে। এহানে কোন মানুষ থাকতে পারেনা, জোয়ার আইলেই কাথাঁবালিশ সব ভিজে যায়। মশার কামড়ে কয়েকবার ডেঙ্গু হইলেও আল্লাহ আমারে নিয়া যায়নায়। আরও কষ্ট দেওয়াইবে বইল্লা বাঁচাইয়া রাখছে।

আলেয়ার এমন দুর্দশার বিষয়ে নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও বরগুনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হাচানুর রহমান ঝন্টু বলেন, ছিন্নমূলদের আবাসনের দাবীতে প্রথম যখন আন্দোলন শুরু হয়, সমাজে এত জনপ্রতিনিধিরা থাকতে কেন আলেয়া বেগম ঘর পায়নি। আদৌ তার ভাগ্যে প্রধানমন্রীর উপহার আছে কিনা তা আমাদের জানা নেই। হয়ত দপ্তরে  ক্ষমতাধারী কেউ নেই আলেয়ার। এজন্যই মানবতর জীবন কাটাচ্ছে সে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি, আলেয়ার  মাথা গোঁজার মত একটা ঠাই হোক।

রগুনা পৌরমেয়র কামরুল আহসান মহারাজ বলেন, আলেয়ার বিষয়টি শুনেছি, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আলেয়া যাতে একটি ঘর পেতে পারে সেজন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করবো।

এবিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, আলেয়ার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে দেখছি। আলেয়ার জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.