এক সময়ের হুঁকো এখন শুধুই স্মৃতি। ধুমপানের প্রাচীনতম মাধ্যমটি আজ প্রায় নেই বললেই চলে। আগে সহজলভ্য ছিল এই হুঁকো। বাংলার পাড়াগাঁয়ে দেড় দু' দশক আগেও এর প্রচলন ছিল।কোনও কোনও গ্রামে আজও সে রেওয়াজ চোখে পড়ে। কিন্তু শহরাঞ্চলের বৈঠকখানা থেকে হুঁকো বিদায় নিয়েছিল অন্তত আধশতক আগেই।
বাংলাদেশের গ্রামঞ্চলে জ্যাঠামশাইরা শুধু নন, কৃষক ও শ্রমিকরা অবসর সময় পেলেই হুঁকো টানত। কয়েকটা সুখটানের মাধ্যমে তারা তৃপ্তি পেতেন।
হুঁকো তৈরি করা হত নারকেলের মালাই ও কাঠের নৈছা দিয়ে। মাটির সিলিম কিনে আনা হত কুমারের কাছ থেকে। বাজার থেকে তামাক পাতা কিনে এনে ছোট ছোট করে কেটে তার সঙ্গে গুড় মিশিয়ে হাত দিয়ে মলিয়ে তৈরি করতো হুঁকোর উপকরণ। সাধারণত হুকোর মাটির সিলিমে গুড়ুক তামাক ব্যবহার করতো ব্যবহারকারীরা।
গৃহস্থ বাড়ির নাকারী, মহাজন-জমিদার বাড়ির কাচারি ও রাজা-বাদশার রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত সব জায়গায় ছিল হুঁকোর কদর। স্বচ্ছল ও জমিদার বাড়ির পরিবারগুলোতে আভিজাত্যের প্রতীক ছিল এটি।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর বড়ভিটা গ্রামের বাসিন্দা শ্রী সরবানন্দ বর্মন আগে নিয়মিত হুকো টানতেন। তিনি জানান, প্রায় ৫০ বছর হলো হুঁকা পান করা ছেড়ে দিয়েছেন। এটি ছাড়ার বিষয় তিনি বলেন, এখন আর সেভাবে তামাক পাওয়া যায় না। আর খরচও বেশী পড়ে। আগে ৫-৬ টাকার তামাক কিনলে অনায়াসে ৫-৬ দিন চলে যেত।
তিনি আরও বলেন হুঁকোর উপকারিতা ও অপকারিতা দুটোই রয়েছে। হুকো পান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। হুঁকো পান করলে শ্বাসকষ্ঠ হয়।
বর্তমানে হুঁকোর কদর নেই, এর স্থান দখল করে নিয়েছে আধুনিক বিড়ি- সিগারেট।