আদিকাল থেকেই পাহাড়ের পাদদেশে আদিবাসীদের প্রধান কাজ জুম চাষ। সেই জুম চাষ থেকে উৎপত্তি হয় নানান রকমে ফল কিংবা শাক সবজি। সেই ফল পার্বত্য এলাকাসহ ছড়িয়ে যায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন গ্রাম ও শহরে। আবাহাওয়া প্রতিকুলে উষ্ণ থাকার কারণে পাহাড়ে পাহাড়ের দেখা মিলছে নানান ধরণের নতুন ফলের উদ্ভব। এর মধ্যে ‘টক ফল’ অন্যতম।
জুম পাহাড়ের চাষ শুরু থেকেই সবুজে ভরা পাহাড়ের পাহাড়ের দেখা যায় জুমের ধান। জুম কাটার সমাপ্তি ঘটলে পাহাড়ের জুম দেশে দেখা যায় লালে ভরা টক ফল। জুমের চারদিকে দের ফুটে লম্বা ও ডানা মেলে ছড়িয়ে আছে টক ফল নামক গাছটি। বলা যায় লালের ভড়া বিস্তৃত জুম পাহাড়। এই ফলটি পাহাড়িসহ অনান্য জনগোষ্ঠির কাছে বেশ জনপ্রিয়। ফলটি রোদ্রে শুকিয়ে রেখে চাটনি কিংবা চায়ের টক হিসেবে এমনকি রান্না খেয়ে খাওয়ার জন্য বেশ উপযোগী।
ফলটি গায়ের বিস্তৃত লালচে ভরা। এমনকি ফলে চারিপাশে রয়েছে ডানা মেলে আট হতে হতে দশ কাটা। ধার না হলেও ফলটি যেন টক ভরা। মারমা ভাষায় টক ফলটি নাম ডাকা হয় "পু সি" অর্থ্যাৎ পুং অর্থ টক সি অর্থ ফল। এই ফলে বাংলা ভাষায় বলে চুকুর ফল। আবার ইংরেজিতে রোজেলা, রোজেল ও সরেল (roselle, sorell) নামে পরিচিত। এই ফলটি তিন পার্বত্য অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয় হওয়াই ক্রেতারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যাগ ভর্তি করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বান্দরবান শহরে অন্তর্গত চড়ুই পাড়া, বাঘমারা, থোয়াইগ্য পাড়া, জামছড়ি, রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়িসহ বিভিন্ন জুম পাহাড়ের লাল ভরা বিস্তৃত দেখা মিলে এই টক ফল গাছটি। সে ফলটি আনন্দ মুহুর্ত নিয়ে থ্রুং নামক মাথায় ঝুলে টক ফলটি ছিড়ে যাচ্ছে চাষীরা । ছেড়া শেষ হলে এক স্থানে জমাট করে রাখছেন। একটি গাছ হতে ফল ধরে ৩ হতে ৪ কেজি। সবকিছু শেষ মুহুর্ত ঘটলে নিয়ে বাজারের বিক্রি জন্য।
জানা যায়, ফলটি মে মাস হতে জুমের বাগার আগুনে পোহানো শেষ হলে ছিটিয়ে দেই টক ফলের বিজ। সেই বিজ ছিটানো সমাপ্তি ঘটলে পূনরায় ছিটানো হয় ইউরিয়ার সার অর্থ্যাৎ লাল সার,কালো সার ও সাদা সার। সার ছিটানো উপর আশ্বাস করে একটি জুমে কতটুকু ধানের বিজ রোপন করা হয়েছে সেটি উপর নির্ভরশীল। জুমের ধান কাটার সমাপ্তি ঘটলে ডানা মেলে ছড়িয়ে যায় টক ফলের গাছ গুলো। ডিসেম্বর হতে ছেড়ার শুরু হয় এই টক ফলগুলো। একটি গাছ থেকে ৫ বার করে ছেড়ানো যায়। ডিসেম্বর মধ্যখানে সময় হতে বাজারের শুরু হয় বিক্রি। এতে পাহাড়ি জনগোষ্ঠি পাশাপাশি বাঙ্গালীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।
চড়ুই পাড়া জুম চাষী হ্নাং ম্রাখই মারমা বলেন, টকফল গুলো জুমের ধান কাটার শেষ হলে ডানা মেলে ছড়িয়ে যায়। এক একটি গাছ হতে ২ হতে ৩ কেজি করে টক ফল ধরে। বাজারের দুই ধরণে বিক্রি করি। বিজ সহ বাজারে দাম প্রতি কেজি ৪০ টাকা ও বিজ ছাড়া প্রতি কেজি ৮০ টাকা। যা বিক্রি করে লাভ হয়।
থোয়াইগ্য পাড়া চাষী গরামং মারমা সাথে কথা হয়। তিনি বলেন, এই টক ফলে গাছগুলো দেড় ফুট মত লম্বা হয়। জুমের পাশাপাশি সমতলেও চাষ হয়। যে গাছ হতে ফলের পাশাপাশি পাতাও খাওয়া যায়। তবে রোদ্রে মধ্য শুকিয়ে রাখলে চা সাথে খাওয়া যায়। যার দাম বাজারের অনেকটাই মোটামোটি থাকে।
মগ বাজারের সবজি বিক্রেতা চিংসাবু বলেন, আমরা পাইকারী হিসেবে জুম চাষীদের থেকে ক্রয় করে বাজারে বিক্রি করি। এই ফল গুলো সবার কাছে বেশ প্রিয়। ঢাকা থেকে পর্যটকরা এসে কিনে নিয়ে যায় অনেক গুলো। এই টক ফল গুলো বিক্রি করে লাভের অংশ মোটামোটি থাকে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, এই ফলটি কৃষি বিভাগ হতে মাল্টিপ্লিকেশন জন্য হার্টিকালচারের সম্প্রসারণ করা হয়েছে। যাতে সিজেন শেষ হলেও এটি প্রয়োজনে খাওয়া ও ব্যবহার করা যায়।
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর
যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204
ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।
© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh