সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় এক সময় খালে, বিলে, নদী, পুকুরে-ডোবায় ভরে থাকতো কচুরির ফুল। বৃষ্টিপাতের অভাব ও নদীনালা ভরাট হয়ে যাওয়ায় নদী-নালা, ডোবা, খাল-বিলে কচুরিপানার আর তেমন দেখা যায় না। রাস্তার ধারের ডোবার জলে কচুরিপানার সবুজ পাতার মাঝে ফুটে থাকা ফুলের সেই নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখে যেকোনো বয়সের মানুষই মুগ্ধ না হতে বাধ্য।
আগের দিনে গ্রামের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা এই ফুল তুলে খেলায় মেতে উঠত। গ্রামের স্কুলপড়ুয়া ছেলেমেয়েরা স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে রাস্তার ধারের ডোবার পানিতে ফুটে থাকা ফুল তুলে নিজেরা খেলা করতো। সে দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না। কচুরিপানা জলজ উদ্ভিদ এর ডাটা গুলো ফাঁপা হওয়ায় অনায়াসে পানির ওপর ভেসে থাকে। অনুকূল পরিবেশ পেলে খুব দ্রুত বংশবিস্তার ঘটে। বর্ষাকালে বিলের পানি বৃদ্ধি পেলে বাতাসের চাপে কচুরিপানা ভেসে গিয়ে ধানক্ষেত ঢেকে ফেলে।
শুষ্ক মৌসুমে কচুরিপানার গাছপাতা তুলে স্তূপ করে রাখলে তা শুকিয়ে গিয়ে জৈবসার তৈরি হয়। এগুলো কৃষিজমির জন্য ব্যাপক উপকারীও।
আগে নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে মাঠের পটল, আলু, লাউ ইত্যাদির ক্ষেতে শুকনা কচুরিপানা বিছিয়ে দেওয়া হতো। এতে একদিকে যেমন এসব সবজি পচনের হাত থেকে রক্ষা পেত অপরদিকে এসব শুকনা কচুরিপানার গাছ পচে জমিতে জৈব সার হিসাবে কাজ করত।
আগের মতো এলাকায় আর কচুরিপানা না থাকায় বর্তমানে সুতা ও বাঁশের তৈরি মাচায় এসব সবজি চাষ করা হয়। কচুরিপানা বর্তমানে আর দেখাই যায় না। সবুজ পাতার মাঝে বেগুনি সাদা আর হলুদের মিশ্রণে ফুটে থাকা হাজার হাজার ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য এখন আর চোখে পড়েনা।