× প্রচ্ছদ বাংলাদেশ বিশ্ব রাজনীতি খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফ স্টাইল ভিডিও সকল বিভাগ
ছবি ভিডিও লাইভ লেখক আর্কাইভ

লুইস সুয়ারেজ: রিক্ত হস্তে কান্নাভেজা নয়নে বিদায়

মশিউর অর্ণব

০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০২:৫৩ এএম । আপডেটঃ ০৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০৩:০৪ এএম

পৃথিবীজুড়ে চলছে বিশ্বকাপ উন্মাদনা। বাংলাদেশে এই উন্মাদনার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল থাকলেও তার পাশাপাশি পর্তুগাল, জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্সসহ আরো কয়েকটি দেশের ফুটবল ভক্তও বাংলাদেশে বিদ্যমান। কাতার বিশ্বকাপের এই মৌসুমে সংবাদ সারাবেলা’র পাঠকদের জন্য থাকছে বিশেষ আয়োজন। চলমান বিশ্বকাপ ফুটবলের মাসজুড়েই থাকছে প্রিয় দলের প্রিয় তারকার পরিচিতি, সাবেক কিংবদন্তিদের স্মৃতিচারণ, বর্ণাঢ্য ও বিচিত্র ফুটবল ক্যারিয়ারসহ ফুটবল নিয়ে ব্যতিক্রমী নানা খবর। 

আজকের পর্বে থাকছে উরুগুয়ের স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজকে নিয়ে কথা-

বার্সেলোনার জার্সিতে মাত্র কয়েক বছর আগেই স্বপ্নযাত্রা পার করে এলেও সেই ফর্মটাও নেই এখন আর। বয়সটা ৩৫ ছুঁয়ে ফেলেছেন। বলতে গেলে, এটাই শেষ বিশ্বকাপ ছিল লুইস সুয়ারেজের। কিন্তু দেশের হয়ে সেই শেষ বিশ্বকাপটাও রাঙানো হল না উরুগুয়ের তারকা এই ফরোয়ার্ডের। নিজের শেষ বিশ্বকাপ থেকে তাকে বিদায় নিতে হলো অশ্রুসিক্ত নয়নে।

ঘানা-উরুগুয়ের ম্যাচের তখন ৮৫ মিনিটের মতো চলে। হঠাৎ করেই বিহ্বল হয়ে পড়েন উরুগুয়ের খেলোয়াড়রা। লুইস সুয়ারেজ, দারউইন নুনেজদের চোখ ভরে এলো জলে। হতাশা, উৎকণ্ঠা বোঝা গেল স্পষ্ট। বেঞ্চ থেকে সুয়ারেজ যেন সতীর্থদের বলতে চাইলেন, যেভাবেই হোক আরেকটি গোল দাও। ৩৫ বছর বয়সী এ ফুটবলারের যে তখন কিছু করারও নেই, কারণ জয় প্রায় নিশ্চিত বলে আগেভাগেই তাকে তুলে নিয়েছিলেন কোচ। শেষমেষ গোল আর এলো না, তাই বিদায়ও এড়াতে পারল না উরুগুয়ে। অথচ উরুগুয়ের কোচ দিয়েগো আলোন্সো যখন তাকে তুলে নিচ্ছিলেন, তখনও হাসি মুখে বেরিয়েছেন সুয়ারেজ। দল এগিয়ে ছিল ২-০ গোলে। কিন্তু পর্তুগালের বিপক্ষে দক্ষিণ কোরিয়া এগিয়ে যেতেই চোখে পানি এসে পড়ে তার। 

তবে সুয়ারেজ জানতেন, আরও একটি গোল করলেই পরের রাউন্ডে যেতে পারবেন তারা।  তবে এডিনসন কাভানিরা অনেক চেষ্টা করেও গোলটা করতে পারেননি। একটা করে গোল মিস হয়েছে, সুয়ারেজের মুখ তত কালো হয়েছে। জার্সি দিয়ে অর্ধেক মুখ ঢেকে বসেছিলেন কয়েক মিনিট। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল জল। খেলার শেষ বাঁশি বাজতেই জার্সিতে মুখ ঢেকে ফেলেন তিনি। দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কাঁদছেন। আরও একটি বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের যন্ত্রণা তখন কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল তাকে। 

নাম: লুইস সুয়ারেজ 

জন্ম: ২৪ জানুয়ারি ১৯৮৭ 

জন্মস্থান: সাল্টো, উরুগুয়ে

উচ্চতা: ৬ ফুট

পজিশন: ফরোয়ার্ড

ক্লাব ক্যারিয়ার: ২০০৩-২০০৫ পর্যন্ত উরুগুয়ের ‘ক্লাব ন্যাশনাল ডি ফুটবল’ এ জুনিয়র পর্যায়ে ফুটবল খেলা সুয়ারেজ ২০০৫-০৬ মৌসুম পর্যন্ত ওই ক্লাবেরই সিনিয়র ফুটবল দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। ২৭ ম্যাচে ১০টি গোল করেন তিনি। পরে ২০০৬-০৭ নেদারল্যান্ডসের গ্রোনিনজেনের হয়ে ২৯ ম্যাচে ১০টি গোল করেন। ২০০৭-১১ পর্যন্ত সুয়ারেজ ডাচ ক্লাব আজাক্সের হয়ে ১১০টি ম্যাচে ৮১টি গোল করেন। ২০১১-১৪ পর্যন্ত লিভারপুলের হয়ে ১১০টি ম্যাচে ৬৯টি গোল করেন তিনি। ২০১৪ থেকে এখনও পর্যন্ত বার্সেলোনার হয়ে ১৩০ ম্যাচে ১১০টি গোল করেছেন এই উরুগুয়েন স্ট্রাইকার।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার: ২০০৬-০৭ উরুগুয়ের অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে ৪ ম্যাচে দু’টি গোল করেন সুয়ারেজ। ২০১২ সালে অনূর্ধ্ব-২৩ জাতীয় দলের হয়ে ৪ ম্যাচে ৩টি গোল রয়েছে তার। ২০০৭ থেকে এখনও পর্যন্ত উরুগুয়ের সিনিয়র দলের হয়ে ৯৮ ম্যাচে ৫১টি গোল করেন তিনি।

ফিফা টুর্নামেন্ট: কানাডায় অনুষ্ঠিত ২০০৭ অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে স্পেনের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে ফিফা ইভেন্টে আত্মপ্রকাশ সুয়ারেজের। ম্যাচটি ২-২ গোলে ড্র হয়। এখন পর্যন্ত ৭০টি ফিফা ইভেন্টের ম্যাচে ৩৬টি গোল করেছেন তিনি। যাতে ৩১টি ম্যাচে জিতেছে তার দল৷ ১৯টি ম্যাচ ড্র করেছে এবং হেরেছে ২০টি ম্যাচে। 

কামড় কান্ড: ২০১৪ বিশ্বকাপে উরুগুয়ে আর ইতালির মধ্যকার গ্রুপ 'ডি'-র ম্যাচে ঘটে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ম্যাচের ৭৯ মিনিটে ইতালির ফুটবলার জর্জিও কিয়েল্লিনির কাঁধে হঠাৎ কামড় বসিয়ে দেন লুইস সুয়ারেজ। এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে বিশ্বজুড়ে। ফিফা চার মাস নিষিদ্ধ করে সুয়ারেজকে। 

ব্রাজিল বিশ্বকাপে সেবার গ্রুপপর্বে মুখোমুখি হয়েছিল উরুগুয়ে ও ইতালি। সে ম্যাচে উরুগুয়ের হয়ে খেলছিলেন দলটির তারকা ফরোয়ার্ড লুইস সুয়ারেজ। অন্যদিকে, ইতালির গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলারদের মধ্যে একজন ছিলেন জর্জিও কিয়েল্লিনি। ভালোভাবেই চলছিল ম্যাচটি। হঠাৎ ৭৯ মিনিটে কিয়েল্লিনির কাঁধে কামড় বসিয়ে দেন সুয়ারেজ। ব্যাথায় রীতিমতো কাঁতরাতে থাকেন ইতালিয়ান ফুটবলার। অন্যদিকে, সুয়ারেজের প্রতিক্রিয়া ছিল এমন, যেন কামড় দিয়ে নিজেই দাঁতে ব্যথা পেয়েছেন। 

কিয়েল্লিনি অবশ্য পরে জার্সি নামিয়ে কামড়ের দাগ দেখানোর চেষ্টা করেছেন রেফারিকে। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হয়নি। লাল কার্ড দেখতে হয়নি সুয়ারেজকে। উল্টো তার দল জিতেছে ম্যাচটি। ওই মুহূর্তে কোনো প্রতিক্রিয়া না হলেও, এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে পুরো ফুটবলবিশ্বে। অনেক সমালোচনাও শুনতে হয় সুয়ারেজকে। পরে ফিফা চার মাস নিষিদ্ধ করে উরুগুইয়ান স্ট্রাইকারকে।  

এমন ঘটনা যে সুয়ারেজ ২০১৪ বিশ্বকাপেই প্রথম ঘটিয়েছেন তা অবশ্য নয়। এর আগেও তার কামড়ের শিকার হয়েছেন আরও দুই ফুটবলার। সুয়ারেজের প্রথম কামড়ের শিকার হন পিএসভি ফুটবলার ওটমান বাক্কাল। তখন ডাচ ক্লাব আয়াক্সে খেলতেন সুয়ারেজ। এ ঘটনায় সাত ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয় তাকে। এরপরের ঘটনাটি লিভারপুলে এসে ঘটান সুয়ারেজ। ইপিএলে চেলসির বিপক্ষে ম্যাচে ব্রানিস্লাভ ইভানোভিচের হাতে কামড় বসিয়ে ১০ ম্যাচ নিষিদ্ধ হন উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ড।


Sangbad Sarabela

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী আবু জাফর

যোগাযোগ: । 01894-944220 । [email protected], বিজ্ঞাপন: 01894-944204

ঠিকানা: বার্তা ও বাণিজ্যিক যোগাযোগ : বাড়ি নম্বর-২৩৪, খাইরুন্নেসা ম্যানশন, কাঁটাবন, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫।

আমাদের সঙ্গে থাকুন

© 2024 Sangbad Sarabela All Rights Reserved.